Tuesday, October 17, 2017

অনির ভয়!

"আপনি কখনো বোঝাতেন ওকে? ভূত বলে কিছু হয় না? পুরোটাই আমাদের মনের দুর্বলতা, অবসাদ বা একাকীত্ব?"

না, এত তত্ত্বকথা বোঝানর সুযোগ পাইনি কখনো। ও ছোট থাকতেই আমি বাইরে বাইরে। মায়েরই বেশি ন্যাওটা। তবে ওর মা কিন্তু এসবে বিশ্বাস করে না। সেসব দিক থেকে অনেক শক্ত মনের, একার জোরেই সবকিছু সামলেছে জীবনের। আজও আমাকে খুব একটা পাত্তা দেয় না।

"তাহলে তো মা-রই উচিত নয় কি ওকে বোঝান? 19 বছর বয়সে এসে রাত্রে টিউবলাইট জ্বেলে ঘুমান বোধহয় খুব ভাল একটা অভ্যাস নয়?"

আমিও তাই মানি। চেষ্টা করি ওর মাকেও জানানোর। ছেলেটা তো লজ্জায় ওর এই ভয় এর কথাটা মাকে বলতে পারে না। আমাকেও বলত না। কিন্তু আমি জানি, আমারই ছেলে তো। অথচ ওর মা আজকাল আমাকে এড়িয়ে চলে একেবারেই। অফিস থেকে ফিরে যখন ক্লান্ত হয়ে শুয়ে থাকে বালিশে মুখ গুঁজে, পাশে বসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিই। জিজ্ঞাসা করি, 'অনি কেমন আছে খোঁজ নিয়েছ?' আমার মনে হয় ছেলেটা রাত্রে একলা ঘুমোতে পারছে না অনেকদিন হল। কিন্তু কে শোনে কার কথা!

"কিন্তু আমাকে এসব বলছেন কেন? আপনার ছেলে মাঝরাতে উঠে বালিশের পাশে বসে থাকা অশরীরী উপস্থিতি অনুভব করে মন খারাপের রাতে। সে তো বুঝলাম। এতে আমি এই বয়সে আর এ হেন অবস্থায় ওর কি উপকারটা করব?"

না, আপনি কিছুদিন আগে পর্যন্তও এই ধরনের অবসাদের রুগীদের ভগবান ছিলেন। আমাকেও তো কতবার ফিরিয়ে এনেছেন নিশ্চিত হারের দোর গোড়া থেকে।

"ভুলে যাচছেন আমি রোগীর চিকিৎসা করতাম। আজকের মতো রোগের মুখোমুখি বসতাম না। অনেকদিন তো হল আমাদের ঐ জগৎ ছেড়ে আসা। আমার বয়স আর আপনার অবসাদ তো আমাদের পৃথিবীবাস সংক্ষিপ্ত করেই ফেলেছে। রাত্রেবেলা ওর মন খারাপ হলে পাশে গিয়ে বসে মাথায় হাত বোলান ছেড়ে দিন না। মন খারাপ লড়তে শিখে যাবে ও, লড়াকু মায়ের ছেলে কিনা, মৃত বাবার অশরীরী ছোঁয়া কিন্তু ভুলতে পারবে না, সারা জীবন আলো জ্বেলেই ঘুমোবে, বা জাগবে!"

Monday, September 4, 2017

বাজে গল্প ২ (বাবু ও চালতা বাদুড়)

6 মাস আগে:

বাবু, আমরা একটা নতুন স্কুলে যাব, ওখানে তোমার সামনে আন্টিরা বসে থাকবে, তোমায় যা যা জিজ্ঞাসা করবে সব বলবে কিন্তু। একটা রাইমস বলতে বললে কি বলবে?

বাবু: "টুইংকল টুইংকল লিটল স্টার" 

বাবুর বাবা পরিতৃপ্তির সাথে ফেসবুকের খুটখুটে মন দেন। মা আলতো করে গা এলিয়ে দেন বিছানায়।

3 মাস আগে:

বাবু নতুন স্কুলটায় যখন যাব সব উত্তর দেবে কিন্তু। রাইমস বলতে বললে কি বলবে?

বাবু: "থ্যাঙ্ক ইউ গড ফর ওয়ার্ল্ড সো ...."

বাবা ভাবেন এই না হলে রক্তের স্রোত? ফ্যামিলির বাঘের বিলিতি বাচ্চা। মাম্মাম হাসিমুখে বিবার ওয়েবসাইট থেকে একটা চুড়িদার এর অর্ডার শুরু করেন।

এক সপ্তাহ আগে:

বাবু, নতুন স্কুলে যদি রাইমস ....

বাবু: "মেরি হ্যাড এ লিটল ল্যাম্ব"

বাবা বলেন, এ তো বাবুকে একটা রাইমস বলতে বলা আন্ডারেস্টিমেট হয়ে যাবে গিন্নি, দু চারটে হলে নাহয় একটা কথা। মা মৃদু কেমন দিলাম হেসে একটা নতুন কেনা লোরিয়াল এর লোশন ট্রাই করতে থাকেন আয়নার দিকে তাকিয়ে।

আগের দিন:

বাবু, তাহলে রাইমস কোনটা দিয়ে শুরু করছ?

বাবু, খানিকক্ষণ ভেবে, একটা প্রেগন্যান্ট পজের সাথে: "আদুড় বাদুড় চালতা বাদুড়"

বাবা একটা দক্ষিনারঞ্জন মিত্র মজুমদার হেঁচকি তোলেন। মা, আজন্ম দুধের সরবিদ্বেষী, একটা চামচে দিয়ে চা থেকে সর তুলে ফেলতে গিয়ে সর ভর্তি চামচ পাঠিয়ে দেন নিজের মুখে। ঘরে ইতি গজ পরবর্তী দ্রোনাচার্য্ মুহূর্ত নেমে আসে। ট্যাশ স্কুলের রঙিন ভবিষ্যৎ ছবির সামনে একটা কালো খেষ্টে বাদুড় (বোধহয় ক্লাসিফিকেশন অনুযায়ী চালতা বাদুড়ই হবে) চা চা চা নাচতে নাচতে বাবা মা'র দিকে এগিয়ে আসছে।

চাইল্ড সাইকোলজির ফেসবুক আপডেট বলছে 'বাচ্চাকে কোন কিছু বারণ করবেন না, আরো বেশি করবে, বরং প্রসঙ্গ ঘুরিয়ে দিন'। সামান্য দু মিনিট (দু ঘন্টার বেশি উৎকণ্ঠাময়) শ্মশানসুলভ নিস্তব্ধতার মধ্যে নিজের সম্বিৎ ফিরিয়ে বাবা জিজ্ঞাসা করেন, "আছছা, আর যদি গান গাইতে বলে"?

বাবু মুখ নামিয়ে একটা বেগুনের ছবিতে গেরুয়া রঙ করতে থাকে। মা রাশ হাতে নেবার চেষ্টা করেন। "বাবু, যদি গান ....."?

বাবু তাকায়। বাঙময় চোখ। বাবার আশায় ভরে ওঠা চোখ আর মায়ের ব্যাকুল মুখের দিকে তাকিয়ে সুর করে বলে:

"আদুড় বাদুড় চালতা বাদুড়"।

নিদ্রাহীন রাত্রি। বাবা ভাবেন সরস্বতী পুজোর আগে লুকিয়ে কুল খাবার পাপ। ঘরের নিরামিষ বৃহস্পতিবারে মাকে দিয়ে জোর করে ডিম ভাজা রাঁধাবার পাপ। বৌকে বুঝতে না দিয়ে মলের ভেতরে ছোট পোশাকের মহিলাকে আড়চোখে মেপে নেবার পাপ। আচ্চা, রৌরব নরকে শ্যাওড়া গাছে বোধহয় চালতা বাদুড় ই থাকে?

ওদিকে মা ভেবে চলেন। কালো বর নিয়ে মনের ভিতর খুঁতখুঁতে ভাব ধরে ফেললেন ভগবান? পুজোয় মার্কেটিং নিয়ে বেশি দাবি রেখে ফেলেছেন কখন? বাপের বাড়িতে নিজের মাকে বাবুর মাছের ঝোলের ঝাল নিয়ে বেশি চোপা করা হয়ে গেছিল গত পুজোয়? ঘাড়ের কাছটায় একটা অস্বস্তি, একটা চালতা বাদুড় ফরফর করছে যেন।

ইন্টারভিউ এর দিন:

এটা কিসের ছবি জান?

"বার্থডে পার্টি"

বাহঃ। বার্থডে পার্টিতে কি গান গাওয়া হয় বাবু?

বাবা চেষ্টা করেন মাটির সাথে মিশে যেতে। সীতা কে মনে পড়ে বাবার। বাবার ধারণা একটা চালতা বাদুড় (সেটা যাই হোক না কেন) ও নিজের জন্মদিনে "আদুড় বাদুড় চালতা বাদুড়" গান শুনতে রাজি হবে না। মা ও বেরনোর রাস্তাটার দিকে তাকাতে থাকেন, ভাবেন মিউনিসিপ্যালিটির স্কুলে পড়লে মিড ডে মিল পাবে মেয়ে, সেটাই বা কম কিসের এই ট্যাশ স্কুলের চাইতে (শিয়াল ও দ্রাক্ষাফল দ্রষ্টব্য)।

বাবু সেই পজ টা নেয় আবার। সুর করে গেয়ে ওঠে ...

....

.....

.....

"হ্যাপি বার্থ ডে টু ইউ"।

(পুনশ্চঃ: এই গল্পের সমস্ত চরিত্র কাল্পনিক।

ও, আর বাবু বাবা মা এর রুটিন স্বপ্ন মেনে নিজের জোরে সুযোগ পেয়েছে ট্যাশ স্কুলে। এখন নিশচিন্ত বাবা মা, যতদিন না আবার চালতা বাদুড় টা উড়ে আসে, নাকি ফিরে এলেই রুটিন ভাঙবে বাবু? নিজের রাস্তা নিজে তৈরি করতে শিখবে? জবাব ভবিষ্যৎ এর গর্ভে)

Thursday, June 8, 2017

এই সময় ১

ওদিকে:

- যখন পাঁচজন 'ছোটলোক' মানুষ মুক্তি পেয়েছেন তীব্র বিকাশমুখী গোহিতৈষী সরকার বাহাদুর এর দেয় ন্যায্যমূল্যস্বরূপ বুকে সামান্য গরম ধাতুর টুকরো ধারণ করে, সারাজীবনের মতো, বৃষ্টির চিন্তা, বীজের চিন্তা, দাম পাবার চিন্তা থেকে!

- যখন সেই পাঁচজনের সাথে একই গাড়িতে গাদাগাদি করে নরকের উদ্দেশ্যে যাবার জন্য শেষ মুহূর্তে উঠে পড়েছে একটা খিলখিলানো বাচ্চা যাকে অটো থেকে ছুঁড়ে ফেলে মাথাটা থেঁতলে দিয়ে গণভোগে অরাজি মাকে শিক্ষা দেয়া গেছিল! যার শবদেহ কোলে করে বিবস্ত্রা মা প্রগতির প্রতীক মেট্রোতে চড়ে সরকারি হাসপাতালে পৌঁছেছিলেন চিরঘুম ভাঙাতে (বলিহারী শখ)!

- যখন এক ভাঁড় যুবরাজ গাল ফুলিয়ে বি গ্রেড নাটক করছেন সহমর্মিতার, ক্যামেরা সাক্ষ্য রেখে!

- যখন তথাকথিত বামপন্থা কলেজ স্কয়ারে সভা বন্ধ অথবা সীতারাম ইয়েচুরিকে দুটি এঁড়ে বাছুরের চুলকে দেবার বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক লড়াই লড়ছেন!

- যখন পাহাড় উপঢৌকনের কাতুকুতুতে হাসতে হাসতে দাম বাড়িয়ে নেবার জন্য কান্নামুখ করেছে আর তাদের ম্যানেজ করতে প্রখ্যাত ও পার্টটাইমে জেলে বাকিটা হাসপাতালে থাকা ম্যানেজাররা কলসির কানা উপেক্ষা করে প্রেম নিয়ে গদগদ!

ঠিক সেই মুহূর্তে, প্রাইমটাইমে খবর হচ্চে

- সতের বছরের 99% পাওয়া ছাত্রের সাধুর জীবন বেছে নেবার, সম্ভবত আসারাম বাপুর মহিলা উন্নয়ন বা রামদেবের এফ এম সি জি উন্নয়ন ব্রতর মুখ চেয়ে!!

- কাজকস্তানের আস্তানা'য় হতে চলা সম্মেলনে আমাদের হীরকরাজ ওদের নওয়াজ শরিফের সাথে হাত না মিলিয়ে কতটা কূটনৈতিক চাপে ফেলতে চলেছেন পাকিস্তানকে!!

- খড়্গপুরের হাইওয়েতে মিগ 21 নামিয়ে কাশ্মীরের দখল কিভাবে রাখবে আমার মহান দেশ!!

- মুসলিম অভিনেত্রীর রমজানের মাসে পরা বিকিনি ছবিতে কতখানি আহত হল অথবা রেনেসাঁর মুখ দেখল ধর্ম!!

বেশ দেশ আমার💐

আমার গ্রামে, এক অশান্ত সময়ে, রাষ্ট্রের একনায়কতন্ত্র মানতে না চাওয়া কিছু অতিসংশোধনবাদী ওয়ান শটারে রক্তের বন্যা বইয়ে দিত নিজেদের বিচারসভা শেষে, মানতে কষ্ট হত এত সহজে মেরে ফেলবার অধিকার হাতে নিতে দেখে, এখনো হবে। কিন্তু ভন্ড জাতীয়তাবাদটাকে অথবা তাদের ধ্বজা নাড়ানো সংবাদমাধ্যম গুলোকে কোপাতে দেখলে, মাইরি বলছি, হয়ত খারাপ লাগবে না!!!

Friday, June 2, 2017

একটি কঠোর প্রেমের গল্প ১

প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট আগে খবরের কাগজের ওমে ম ম করত, এখন যেন একটুকরো বড়বাজার, পুরনো বড় কাগজের অফিসেও একটা অনিশ্চয়তার হাঁসফাঁস। রূপকথা অবশ্য সাংবাদিক নয়, নিতান্তই বিজ্ঞাপনের বিপণন দেখা তরুণী সেলস ম্যানেজার। এক্সিকিউটিভরাই সবকিছু করে ফেলে, তার কাজ শুধু সুপারভিশন আর রিপোর্টিং, এখনো এই কাগজের নামেই বিজ্ঞাপন আসে, তাই চিন্তা কম।

সাড়ে এগারটা নাগাদ এক কাপ চা নিয়ে করিডরে দাঁড়িয়ে কাজ দেখছিল রূপকথা, ছটা টেবিলেই লোক, ছজন এক্সিকিউটিভ ছজন বিভিন্ন বয়সী লোককে বিভিন্ন ভাবে সহায়তা করছে। সোফাতেও জনাচারেক লোক অপেক্ষা করছেন তাদের সময় আসার। জন্ম, মৃত্যু, বিবাহ, নিখোঁজ, আনন্দ, কত কি ছাপার অক্ষরে দেখতে চায় মানুষ।

হঠাৎ করে চোখ পড়ল দরজার কাছে সিকিউরিটির জন্য রাখা টুলে বসা বয়স্কা ভদ্রমহিলাকে। নিতাইদা বোধহয় বাইরে দাঁড়িয়েছে ভদ্রমহিলাকে টুলটা ছেড়ে দিয়ে। এই মহিলাকে চেনে রূপকথা। ওদের ঝাঁ চকচকে য়্যাপার্টমেন্টের উল্টোদিকে রাস্তার ওপারে যে লো ইনকাম গ্রূপের ফ্ল্যাটগুলো আছে তাতে থাকেন। স্বামী আর একটা ল্যাব্রাডর কুকুর ছাড়া কেউ ছিল না। "ছিল না", কারন রূপকথা দেখেছে গত সপ্তাহেই স্বামী পরলোকগত হয়েছেন, এক রোববার সকালে উঠে সারা সকাল ধরে দেখেছে সেই ছোট্ট বাড়িতে গম্ভীর মুখের ভিড়, বাইরের রাস্তার ধারের থেকে ম্যাটাডোরের ওপর স্বামীকে শেষবারের মত তুলে দেবার আগে ভদ্রমহিলা চেয়ে ছিলেন অদ্ভুত দৃষ্টিতে। সে চাউনিতে কান্না জাতীয় কিছু ছিল বলে মনে করতে পারে না রূপকথা। লজ্জা পেল ওর। রূপকথার এই জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে অন্যের সংসার দেখার অভ্যাস বহুদিনের। ঠিক উল্টোদিকের এই ছোট ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা বোধহয় ঘুণাক্ষরেও জানে না ওর এই নিঃশব্দ উঁকিঝুঁকির কথা।

অবাক হত রূপকথা। অতটুকু ঘরে একটা ল্যাব্রাডর কুকুর। ঘরের আসবাব আর পোষাকআশাক দেখে খুব সচ্ছলও লাগত না এই পরিবারটিকে। ছেলেপুলে অবশ্য নেই। ওদের দোলনা আর ফুলের টব ওয়ালা মস্ত বারান্দায় দাঁড়িয়ে অনেকবার এই ভদ্রমহিলাকে গজগজ করতে শুনেছে এই কুকুরটাকে নিয়ে। আর এখন বোধহয় সেই কুকুরটাই একমাত্র আপনজন, ভাবল রূপকথা।

কোন টেবিলেই ফাঁকা হওয়ার নামগন্ধ নেই। ভদ্রমহিলাকে নিজের কিউবিকলে ডেকে নিল রূপকথা, হাজার হোক জানলা দিয়ে তার বিশ্বদর্শনের এক অসহায় পাত্রী তিনি। পরিচয় দিল না জটিলতা এড়াতে, জানতে চাইল "কিসের বিজ্ঞাপন দেবেন?"। ভদ্রমহিলা বলতে শুরু করলেন "আমার স্বামী .....", আটকে গেলেন, গলাটা ভারী হয়ে গেল বুঝি বাষ্পেতে। ভালবাসা এরকমই, ভাবে রূপকথা, ভদ্রলোক বেঁচে থাকতে এনাকে কেবলমাত্র কথা শোনাতেই শুনেছে রূপকথা, অন্ততঃ যেটুকু আওয়াজ সরু রাস্তা দূরত্ব পেরিয়ে ওদের বাড়িতে ঢুকত। "নেই বুঝি আর, আমি খুব দুঃখিত, আমি আর কি বলতে পারি, আপনার মনের অবস্থা যে কি!!!", পরিচয় না দিয়েও সহমর্মিতা দেখাতে কসুর করে না ও। "আপনি বোধহয় একটা কন্ডলেন্স জাতীয় কিছু ছাপাতে চান, তাই না?"। ভদ্রমহিলাকে বলার সুযোগ দেয় না ও, কি রকম যেন আত্মীয়ার মত সাহায্য করার নেশা পেয়ে বসে রূপকথাকে। মহিলা কিরকম হতভম্ব হয়ে কেবল মুখ দিয়ে একটা অস্ফুট শব্দ বের করতে পারেন।

মহিলা একটু অবাকও হন অপরিচিতা এই বাচ্চা মেয়েটির তাঁর পতিবিয়োগের ব্যাপারটা আঁচ করা দেখে, তবে তার বেশি কিছু নয়। রূপকথা বলতে থাকে "আমাদের এই সেকশনে এখন প্রায় সমস্ত স্পেসটারই বুকিং এসে গেছে, আপনি নিশ্চ্ই দেরিও চাইবেন না, এদিকে বেঁচে থাকা জায়গাটা আবার একটু বেশিমাত্রায় কস্টলি"। জানলা দিয়ে দেখা জীবনযাপনের মান চিন্তায় রেখেছে ওকে। "আপনি বরং খুব অল্প শব্দের মধ্যে মেসেজটা লিখে দিন, আমি চেষ্টা করছি যতটা ম্যাক্সিমাম ডিসকাউন্ট দেয়া যায়, খারাপ লাগাটা কৃপনভাবে প্রকাশ করতে কষ্ট হবে জানি, আপনার ভালবাসাটা তো দেখতে পারছি"। ভদ্রমহিলাকে অবাক করে রূপকথার চোখ দিয়ে দু-ফোঁটা জল বেরিয়ে আসে। ভদ্রমহিলা আরো হতভম্ব হয়ে যান ওর এই অযাচিত সহমর্মিতায়। হাঁ করে তাকিয়ে থাকেন।

"কই? লিখে দিন!!!" মনে করায় রূপকথা। "চেষ্টা করুন কম কথায় রাখতে"। ভদ্রমহিলা কেমন থতমত হয়ে এগিয়ে দেয়া প্যাড আর পেনটা টেনে নেন। খুব আস্তে আস্তে মুখ না তুলে খানিকক্ষণ চুপ করে বসে থাকেন। 'হায় রে মন, বেঁচে থাকতে ভালবাসাটা বোধ হয় বোঝা যায় না, না থাকলে এরকম একলা আর মনখারাপে বোবা করে দেয়', জন্ম রোমান্টিক রূপকথা ভাবে। কিছুক্ষন আঁকিবুকি কেটে প্যাডটা এগিয়ে দেন ভদ্রমহিলা, তাতে লেখা "৯, নেতাজি আবাসন, পিকনিক গার্ডেন নিবাসী শ্রী ৺অনুরূপ সেনগুপ্তের প্রয়াণে আমরা ব্যথিত"। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে রূপকথা, অল্প কথায় হয়েছে, এটা স্পেশাল রেটে করিয়ে দিতে পারবে, শব্দ গুনে নিয়ে বলে "আপনি চাইলে আরো খান চারেক শব্দ ঢুকিয়ে দিতে পারেন, একই প্যাকেজে হয়ে যাবে"। এইবারে ভদ্রমহিলা যেন খানিকটা খুশি হয়েই প্যাডটা আবার টেনে নেন। খান চারেক শব্দ যোগ করে প্যাডটা আবার ঠেলে দেন রূপকথার দিকে।

তাকিয়ে দেখে রূপকথা, ওতে লেখা আছে "৯, নেতাজি আবাসন, পিকনিক গার্ডেন নিবাসী শ্রী ৺অনুরূপ সেনগুপ্তের প্রয়াণে আমরা ব্যথিত। একটি ল্যাব্রাডর বিক্রি আছে"।

(অনুপ্রাণিত)

গরমের দুপুরের বাজে গল্প ১

স্ত্রী: আবার তুমি গরমের দুপুরে ওখানে? ডঃ আচার্য বারণ করেছেন না? এমনিতেই তো মাথা ..... আবার এই গরমে একটা বিপদ হয়ে না যায়!!!

কর্তা: গিন্নি, শেঠেদের এই আমবাগানে এককালে দশ গাঁয়ের বিচার বসতো, জমিদার দর্পনারায়ন এর ডাকে উড্রো সাহেব অব্দি কাছারি থেকে এসে এই আমবাগানে এসে সেবা নিতেন, আবার তারিনী যখন ম্যাজিস্ট্রেট উইলসনকে গুলি করে পালিয়ে বেড়াচ্ছে তখন বাবা ওকে এই আমবাগানে লুকিয়ে রেখেছিলেন, ইংরেজদের পোষা পুলিশের সাহস হয়নি ....

স্ত্রী: বাবা মনে? তুমি তো তোমার ঠাকুর্দার বাবার গল্প করছ, তুমি না!!! সকালের ওষুধটা...?

কর্তা: আরে রাখ ওষুধ, ঐ ব্রজর ছেলের কবরেজিতে আমি ইয়ে করি, আমাদের জমিদারির ফ্যামিলি ফিজিসিয়ান কে ছিলেন জান? ক্যালকাটা মেডিকেলের পেনেলবেরি সাহেব!!!

স্ত্রী: আরে ব্রজ আবার কে? ডাক্তারবাবুর বাবা তো বিজয়বাবু, তুমি আবার বিজয়বাবুর দাদুর কথা বলছ না তো? আর শোন, জমিদারি আর নেই, ইন্দিরা গান্ধী আজ থেকে 50 বছর আগে জমিদারি তুলে দিয়েছে, কবার বলব তোমায়?

কর্তা: ইন্দিরাআআ!!! হুহ!!! তবে যাই বল গিন্নি, জহরের মেয়ে দেখতে কিন্তু হয়েছে একঘর!!! একবার শান্তিনিকেতনে ... থাক সেকথা!!!

স্ত্রী: তুমি তাকে নিয়েই থাকো তাহলে। দাদু দিদিমার কাছে মানুষ বলে এই মানুষের হাতে পড়তে হল আমায়। কতবার বলি চল কলকাতায় গিয়ে বাবা আর ঠাকুরপোদের বালিগঞ্জের বাড়িতে গিয়ে থাকি। তা নয়, এই ধ্যদ্ধেড়ে মালদা আর আমবাগান। আর শোন, খবদ্দার আমায় গিন্নী বলবে না, এটা কোন যুগ? আর প্লিজ, আমবাগানে বসে থাকা বন্ধ কর।

কর্তা: আরে আমবাগানে বসে থাকা এত ফেলনা নয় গিন্নি। এই তো সেদিন বুড়োবয়সে বৌমার চাপে সন্ন্যাসী রাজা না কি যেন একটা বায়োস্কোপ দেখতে গেছিলাম। তা দেখলাম বৌমাদের চোখের মণি ঐ উত্তমকুমার না অধমকুমার, সে আমবাগানেই লেঠেলদের প্যাঁচ শেখাচ্ছে, আর তুমি।

স্ত্রী: সিনেমা দেখতে গেছিলেন তোমার দাদু, আমার শ্বাশুড়ির চাপে পড়ে। তোমার এই টাইম ট্রাভেল, উঃ। তোমাকে বোঝান আমার অসাধ্য। যাই বরং ইসটিকুটুম দেখি গিয়ে। হ্যাঁগো, বিক্রম কে জেলে দেবে না তো?

কর্তা: ফুঁহ!!! বেধবা মেয়েছেলেকে ফুসলিয়ে নিয়ে কলকাতায় পালালে আজকাল আবার জেল হয় না কি? কোন যুগে যে আছ!!! তার থেকে রামতারনকে বল তামাকটা পাঠাতে।

(স্ত্রী এর হাল ছাড়ন ও রাগত বিদায়)

Sunday, May 7, 2017

ফেরা

ঘন্টুর বয়স আঠার মাস। বেয়াক্কেলে ছিঁচকাঁদুনে। সন্ধ্যা পেরলেই আজান ও ভজন ছাপিয়ে সোনু নিগমকে ভয় দেখাবে এমন চিৎকার। সুশীলাবৌদি ভোলাতে না পেরে পাশে বসে নিজেই কাঁদতেন। বৌদি আর ঘন্টুর ঠাকুমা দুজনেরই দৃঢ় ধারণা ঘন্টু এটা যথাক্রমে বাবার বাড়ি ও মামার বাড়ির অভ্যাস পেয়েছে।কয়েকদিন হল ঘন্টু কাঁদছেনা, সন্ধ্যে হলেই "মাম্মাম উব্বাপ" বলে চোখ বন্ধ করে থাকে। বৌদিও থাকেন হতভম্ব হয়ে।

ডঃ সরকার বারিনবাবুকে দেখছেন তিরিশ বছর। অনেকদিন প্রেসার কমানর ওষুধ লিখে আসছেন কিন্তু বারিনবাবু পাত্তাও দেন না বন্ধুস্থানীয় ডাক্তারের পরামর্শকে। তিনি বলেন রামদেবের লাউয়ের (বাগানের) জুস খেয়েই সব নরমাল থাকে, য়্যালোপাথ আর গাঁটকাটারা একই মাল। ডঃ সরকার আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন। কয়েকদিন হল বারিনবাবু সপ্তাহে দুবার আসছেন, জিজ্ঞাসা করেছেন দিনে দুবেলা একটা করে যেটা লিখেছেন ডঃ সরকার, দেড়টা করে খেলে কি খুব খারাপ হবে?

মুক্তিদাদু বসুবাবুর কনভয় এর হাবিলদার ছিলেন। দাদু মারা যাওয়ার পরেও মুক্তিদিদা ঘোরতর 'মাকু'। মৃনতুল ও জেপিবি কে কাঁসার বাসন পড়ার আওয়াজে গালমন্দ না করে ঘুমোন না। পাড়ার লোকে জানতে পারে মাননীয়া পিসিমা কি কি করলেন ও তার জন্য বাংলার কি কি ক্ষতি হল, মানে বসুবাবুও কি কি ক্ষতি তার ব্র্যান্ডের কর্ম(!)সংস্কৃতিতে করে যেতে পারেন নি যেটা পিসিমা করছেন চপ ভেজে। এহেন মুক্তিদিদা কদিন হল চুপ। বিশেষতঃ সন্ধ্যের পরে। জিজ্ঞাসা করলেই মুখ থেকে একটা ঘুঁ ঘুঁ শব্দ করে বলছে "আর কি?! আমাদের দিন তো ফুরাল".

70 পেরনো অরোরাজি সেন্ট্রাল মেট্রোর পাশে একটা গলিতে একটা singing বার চালান। অনেক বলাতেও তার singing বারকে dance বারে উন্নীত করতে রাজি হননি অরোরা সাহেব। পনেরো বিশ বছর ধরে গেয়ে আসা কুলসুম বা প্রতিমারা কোথায় যাবে বার বদলে গেলে? কুলসুম এর গলায় আজো "লাগ জা গলে" কথা বলে। প্রতিমা এখনো স্টেজে উঠবার আগে অরোরা সাহেবকে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে ওঠে। Dance বারে এসব পাবে? হুঁ হুঁ বাবা? কিন্তু দিন কয়েক হল সন্ধ্যের পর থেকে ফাঁকা ফাঁকা। লজ্জার মাথা খেয়ে পাশের ডান্সবারের মালিক ইসমাইল ভাই কে জিজ্ঞাসাও করেছেন একবার, ইসমাইল ভাই বলছেন তার আড্ডাতেও এই ভাঁটার টান। মাতালরা সব গেল কোথায়? অরোরাজি ভাবেন। বাকি রাস্তাঘাটে তো ভিড় কম নেই!

অর্নব গোস্বামী ফিরেছেন তার নতুন নিউজ চ্যানেল রিপাবলিক নিয়ে।

ভাল থাকুন।

সুস্থ থাকুন।

Saturday, April 22, 2017

মধ্য কলকাতা, মদ্য কলকাতা ও অন্যান্য ১

ডালহৌসির এই বারটা বেশ আঁধারে, জানলা দিয়ে ভিক্টরিয়া যুগের বাস্তুগুলো গিলে ধরতে আসে।

মালিক সুরাবর্দী শেখ পার্ক সার্কাসের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ করা হাজী, বাবা হাইকোর্ট এর মস্ত উকিল ছিলেন, মদ ছোঁন না, মদের টাকা ক্যাশিয়ারবাবু ব্যাংকে ফেলে শুধু পাসবই গুলো মালিককে দেন। তবে কাস্টমারদের ভালোবাসেন শেখ সাব। প্রায় সবাইকে নামে চেনেন।

এই যেমন পাঁচ নাম্বারের বোসবাবু। মারওয়াড়ির গদিতে খাতা লেখেন, বউ এর হাতে মার খান আর ওল্ড মঁক রাম খান। পয়সা শেষ হয়ে এলেই ধার শুরু। আজকাল আর কেউ ধার দেয় ও না।

তিন নম্বর পেগ টা শেষ করে ক্যাশে চার নম্বরটা অর্ডার করতে গিয়ে বোসবাবু বুঝলেন পকেটে কেবল একটা দশটাকার নোট।

আশেপাশে তাকিয়ে নতুন কাউকে দেখলেন না যে তাকে একবারের জন্য বিশ্বাস করবে আর ধার দেবে। সুরাবর্দী সাহেবকে বলে দেখবেন? রাশভারী লোক বলে কথা বলা হয় না। ওয়েটার নঈম মিয়াঁ বলে খাসা লোক। এগিয়ে যান বোসবাবু।

সূরা সাহেব বোসবাবুর উঠে আসা দেখে প্রমাদ গনেন। আব্বা বলতেন মুখের ওপর 'না' বলা ইবলিশের কাজ। সেই থেকে বিনা পয়সায় মামলা লড়তে লড়তে প্রায় পথে বসেছিলেন। সূরা সাহেব ওকালতি পড়েও এই জাহান্নুমের লাইনে এসেছেন না বলতে পারবেন না বলে।

বোসবাবুর মিনমিন শব্দে চটকা ভাঙল সূরা সাহেবের। "একটা পেগ যদি ধারে দিতেন, আর একটা মাছ ভাজা, গোপাল বলল কোলাঘাট থেকে তাজা রুই এসেছে সকালে"।

চোখের দিকে চাইলেন না সূরা সাহেব। ফাঁদে পড়ে যাবেন। বৌ এর হাতে মার খাওয়া বাঙালি বাবুদের চোখ খুব মায়াবী আর দুঃখী।

পশ্চিমের জানালার দিকে আঙ্গুল তুলে দেখিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, "ওটা কি জানেন?"

বোসবাবু কিছুটা থতমত হয়ে বললেন "রিজার্ভ ব্যাংক ... তাই তো?"।

সূরা সাহেব বললেন "এক্সক্লুসিভিটি চুক্তি আছে"!!

বোসবাবু আরো ভেবড়ে গিয়ে বললেন "এক্সকুসি ... ইয়ে ... মানে ... কি?"

সূরা সাহেব বললেন "ওরা মদ বেচে না, আর আমি ধার দিই না"!!!

Saturday, February 4, 2017

Confusion of Mohandas!!!

Mohandas is in a relaxed mood now-a-days. Ever since Narendra became supremo, he was having sleepless nights thinking of earlier heard stories of links between Riots and Narendra. Later he realised, though he (Mohandas) may not be very popular among the youth, his some approaches, like questioning the authority without having fear, standing for communal harmony even in the time of despair, are still present in his countrymen. So disturbing the true Indian spirit will not be very easy even if  tried. Also Narendra may be a changed man now. Mohandas always believes prejudices are worst enemy in the way of rationalism and logical reasoning; he also believes he can have an opinion about these two qualities as his academic qualification (barrister) and professional expertise (while dealing with British) authorise him to have an. Also Nathuram is regularly having lunch with him in Indian Canteen and discussing the ill effect of brainwashing in the name of organised religion. Day before yesterday they suddenly got a third participant, Ajmal, the Karachi boy came only 4-5 years back, also interested to contribute his view on the topic.

Jawahar broke the news in the morning to Mohandas. He is a busy man here and associated with many social groups. But he never forgets talking to Mohandas at least once a day. Mohandas also loves this disciple of  him unconditionally, even the whole world points so many discrepancies in him. The love stored for Harilal, the elder son, which could not be flown to him,  may have been channelised to this gentleman, Mohandas thinks many a times.

The news is like this. Jawahar has seen a spectacle clad person sitting in TV room, completely wrapped in a shwal minutely watching a documentary on World War II. He has even overheard, the spectacled man discussing about the moves of Eisenhower and doing postmortem of startegies of Roosevelt with elan and conviction. Jawahar even suprised to note that the audience is an old woman named  Lakshmi. Jawahar could not even remember where he has heard about or seen this lady.

Jawahar used his social channels efficiently and collected following more informations about this Spectacled mysterious War interested gentleman:

- Nobody is sure when he has come to Divine World Village. Even none is sure about whether he is an Indian at all. He can speak fluent English, German, Pastu (Afghan) and many other world languages.

- Somebody says there are burning scars in his face, some people say he uses shwal to hide the noose mark on his neck. There are people who claims to see him since 1940s, or somebody seen him filling Village Registration Form in 1970s.  

- Sometimes this man is seen in German Library reading books, sometime in one Russian Co-operative Firm listening to Gorky's lecture, sometimes simply watching painting in a Japanese Gallery. But all the time he prefers covering himself top to bottom with a 'Shantipuri' Shwal (Shyamaprasad told Jawahar about its 'Shantipur' origin).

- Its not that this person is very calm and timid all the time. He has once severely beaten a self proclaimed Bengali Godman named "Balok" with his umbrella because the Godman has instructed openly one of his follower in his dream to write something in Railways Platform Wall. What was the writing, that is not clear, probably regarding the return of some Bengali Hero, as heard by Jawahar.

- He has also undressed and paraded one Bengali and one Marathi gentlemen naked in village field, who were fighting with each other regarding who was a more great warrior, Shivaji or Netaji? At the end, he even advised both not to bask about past glories and to build their own identities if possible.

After a long discussion between Mohandas and Jawahar, where Ballav was also present, they could come into only one conclusion regarding the possible identity of this gentleman. THIS IS DEFINITELY BOSE. But nobody could not gather the courage  to ask him directly, keeping in view the violent behaviour the gentleman has shown in recent past as already mentioned above. Also all three are having guilt complex, for not co-operating Bose at the time of need. But this can't be left open ended. Again after another round of engrossed discussion, as always, two clever men Jawahar and Ballav passed the buck to Mohandas for action. Mohandas assured the two he  will do something. 

Mohandas observed for few days that this mysterious person always pays a visit to War Museum on every Sunday morning. Though Mohandas never visited that place out of personal unlikeness, he has decided to pay a visit on next Sunday, in place of his regular visit to Divine-Khadi Brand Factory. 

On Sunday, Mohandas saw the Shwal-Clad-Man (hereinafter SCM) sitting in a sofa, reading some books on Guerilla Warfare. He gently seated beside the person and cleared his throat. SCM saw Mohandas at a quick glance and again engrossed in the reading. Mohandas took a magazine from table with comparatively less gaudy coverpage and written on it:

" Hi!!! BOSE?". And kept the magazine on table in front of the SCM. And then again he clears the throat.

SCM has shifted his glance, most probably read the lines on magazine cover, but again started reading the book without any further discussion.

"If you are BOSE, then I am sorry". Mohandas kept on writing and placing the magazine in front of SCM. Expecting a reaction or response.

"Even Jawahar and Ballav are also repentant. After mortal life, you should not have any grievance".

"We can be friends".

No response. Irritated Mohandas kept on writing:

"We can compensate. We know how to spread an idea among the people of earth from this Divine Village. We can restore your image".

SCM smirked? His covered face is so irritating. But Mohandas is sure this SCM is reading all the lines, so he kept on writing:

"We can even arrange for the highest Indian civilian honour for you. You know? "Bharata Ratna". You know it is the highest honour. Padmashree, Padmabhushan, Padmabibhushan and then this, "Bharata Ratna"!!!"

"I know in coming year no current Padmabibhushans have not done anything great to be elevated into a Bharata Ratna. I can easily lobby for you. I know the means."

"I know there are none eligible, trust me, do you know any???"

SCM suddenly shown some movement. Mohandas got alerted. SCM stood up, kept the War Book on the rack. Collected his handbag. Taken the Magazine on which Mohandas was scribbling from table. Mohandas got excited. SCM took out a pen from his pocket and even wrote something on the same magazine cover, kept the same on table and have a quick exit from War Museam. Mohandas was dumbfounded. Recovering himself he collected the magazine, and read the lines below his last line which can be read as "I know there are noone eligible, trust me, do you know any???".


It has been written underlined:
1. Sharad Pawar
2. Murli Manohar Joshi!!!