Saturday, October 17, 2009

মন খারাপের রোশনাই


প্রদীপ জ্বালাতে সস্তার সরষের তেল কিনতে হচ্ছে না আর তুলো পাকানো সলতে থেকে প্যাকেটবন্দী পযজামার দড়ির মিনি সংস্করণ-রূপী সলতেরও জীবনাবসান হলো ঝোড়ো বাতাস থেকে মোমবাতির অস্থির শিখা-কে প্রয়োজনের তুলনায় বড্ডো ছোটো হাত দিয়ে আড়াল করবার মতো ছেলেগুলোও অদৃশ্য অরুণাচল প্রদেশ, মাওবাদ, দলাই লামা, সমরসজ্জার বেড়াজাল ডিঙিয়ে কমিউনিস্ট চীন এখন সরবরাহ করছে শক্তিপূজার ইলেকট্রিক প্রদীপ আর ইলেকট্রনিক মোমবাতি তবে অনেককিছু একই আছে তিনতলার ফ্ল্যাটের জানলার থেকে মুখ বাড়িয়ে দেখতে পাচ্ছি, যে ছোট্টো বাচ্চাটা বাজীর শব্দে কাঁদছে, চারতলার খাড়াচুলো বদমায়েশ গুড্ডু চকলেট বোমার উপর টিনের কৌটো চাপা দিচ্ছে, পাড়ার নেড়ী কুঁইকুঁই তারাবাতি দেখে প্রাণপণে ল্যাজ গুটিয়ে ছুটছে ... এগুলো এখনও একই আছে মনে হয় শুধু অঞ্জনের ভাষায় আমারই মনের বয়স বাড়ছে বোধহয় জ়েনেটিক্যালি মডিফায়েড শ্যামাপোকার আক্রমণে বিদ্ধ্বস্ত হয়ে ঘরের জানলা খুলতে পারছি না কয়েকদিন হলো ৮ ফুট বাই ৮ ফুট রান্না কাম ভাঁড়ার কাম জ়ুতো রাখার ঘরের জানলায় ৬ টা মোমবাতি জ্বালিয়ে আর নিচের বাচ্চাগুলোর খুশি থেকে গোপনে খানিকটা চুরি করে এবারের কালীপূজো অথবা দীপাবলী শেষ করলাম

Thursday, September 3, 2009

রাত্রি


“সারারাত জ্বলেছে নিবিড়
ধূসর নীলাভ এক তারা
তারই কিছু রঙ নাও তুমি” - সুমন

রাতগুলো ছিল আমার মত একলা
দরজায় খিল থাকত না আমার
লজ্জায় মুখ লুকিয়ে চোরের মতো নামতো রাত আমার ঘরে
সারারাত রাতের সাথে গল্প, রাগ, অভিমান, হাসি, কান্না ... অবশেষে ঘুম
ভোরের পাখির ডানার শব্দে ফিরে যেত রাত
কথা দিত, ‘আবার আসব, সেদিন ঘুমিয়ে পড় না যেন’।

ধোঁয়ার কুয়াশার চাদর সরিয়ে
পাশের বাড়ীকে ঘুম পাড়িয়ে খবর আনত রাত
‘শুনেছি কষ্টে আছে পাগলীটা?
নিজের ভালোবাসার পেছনে ছুটতে ছূটতে
ভালোবাসায় জমে ওঠা ভুলের পাহাড়-গুলো সরাতে সরাতে
আবার নতুন করে ভালোবাসার ভুল করে ফেলেছে ও?’
তখনও সম্পূর্ণ ঘুমিয়ে না পড়া চেতনা তীব্র প্রতিবাদ করেছে
‘ভুল করে একই ভুল বারবার করা ভুল নয়,
আত্মদাহের নেশা,
নেশার ফল মৃত্যূ, আজ নয়তো কাল, শরীরের নাহলে মনের।’
চাঁদের আলোর ছটায় মুক্তোর মতো হেসে রাত রাখল হাত চেতনার কপালে
রাতের মায়াময় ছোঁয়ায় জল এল চেতনার দুচোখ বেয়ে
মনে পড়ল নিজের ভুলে ভরা ভালোলাগা-গুলোকে
ঘুমিয়ে পড়ল আমায় আর রাত্রিকে একলা ছেড়ে।

কখনও রাত বয়ে আনত নিজের সাথে কিছু দীর্ঘনিঃশ্বাস
ছোট্ট একটা মন, যে চেয়েছিল জীবনের প্রথম বিশ্বাসকে মন দিতে
বলে পাঠিয়েছে রাতের হাতে
‘সবটাই ছেলেখেলা বলে যা এড়িয়ে গেছে ভালোবাসার বিবেক
তা নিয়ে যেন চিন্তা না করে আর
আমার মনের মণিকোঠায় থাকবে তা যত্নের তুলোয় মোড়া
কোনদিন দাবী করে না যেন অন্যে
অবিশ্বাসীর নেই বিশ্বাসের অধিকার অথবা স্মৃতির মালিকানা।’
উতলা মন হাত ধরে মিনতি করে রাত্রি’র
‘একবার বোলো তাকে গিয়ে
যা করেছি তা তার ভালোর জন্যই।’
রাত্রি কঠোর চোখে চেয়ে মন-কে বলে
‘এরকমই ভালো যদি কখনও তোমার সাথে হয়
কি করবে তখন?’
মন বলে আর মন ভাবে
‘বোধহয় তোমার অন্ধকারেই মুখ লুকোবো রাত্রি
তোমারই নিঃস্তব্ধতায় খুঁজবো তোমার প্রশ্নের উত্তর’।

এভাবেই একদিন একাকীত্ব-কে একলা বন্ধুটার খোঁজ দিলো রাত্রি
একসময় যাকে ছেড়ে আসতে হয়েছিল সময়ের হাতে
আজকের এই অশান্ত সময়ে সে নাকি খুঁজে চলেছে কিছু শান্তির রাত্রি
একাকীত্ব অস্থির হয়ে ওঠে
চেতনাকে পাঠাতে চায় হাত ধরতে তার
মন তৈরি হয় রাত্রির সাথেই বেরিয়ে পড়তে
রাত্রি বলে ‘পারবে তো চিরকাল এভাবেই দিতে সঙ্গ?
যদি কখনও জানতে পার একাকীত্ব’র সাদা-কালো আকাশে রামধনুর রঙ ভরা,
তোমার সাধ্যের অতীত?
যদি কখনও দেখ একটা হাত ধরতে ছাড়তে হয় অনেকগুলো হাত?’
চেতনা, মন আর একাকীত্ব’র সাথে নিরুত্তর থাকি আমিও
সব প্রশ্নর উত্তর বোধহয় দেয়া যায় না।

আজ বুঝি রাত্রির সেই ব্যকুল জিজ্ঞাসার মানে
আমাকে করতে পূর্ণ রাত্রি ছাড়িয়েছে হাত
হয়ত নিজের অন্ধকার দিয়ে আজ আলো করে বসে থাকে অন্য কোনো একলা পাগলের ঘর।
একটাই চাওয়া, ফিরে এসো রাত্রি!
তুমি ভুল ছিলে রাত্রি, অথবা আমি ছিলাম লোভী
এক একাকীত্ব-কে পূরণ করার ক্ষমতা অন্যর নেই,
যারা তোমার সাথে বড় হয়েছে রাত্রি
তারা তোমারি মত নিঃসঙ্গ থাকবে সারাজীবন
তুমি তাদের ছেড়ে যেও না।।

“বড় বেরঙীন আজকাল কাছাকাছি
কোন রঙ পাই না তাই
দিতে পারি না কিছু
কিছুই রাঙানো হল না তাইতো” - সুমন

Friday, August 28, 2009

অনেক দিন পর


বন্ধু, আজ আবার তোর সাথে দেখা
বন্ধু, তুই রাগ মুছে ফেলেছিস?
বন্ধু, অনেক দিনের নিঃসঙ্গতা,
তুই পারতিস, আজো দূর করেছিস।

বন্ধু, আমি এখনও একলা থাকি
বন্ধু, তোর কাঁধে অন্য চোখের জল
বন্ধু, মুহূর্তগুলো আজও সঙ্গে রাখি,
অপেক্ষা করি -- তুই আসবি? কাল?

বন্ধু, পারিনি অনেক সত্যি কথাও বলতে
বন্ধু, কাঁদিয়েছি তোকে? সত্যি করে বল?
বন্ধু, তোর পথেতেই শিখেছি পথ চলতে,
তুই সরে গেলে আমি বড় হীনবল।

বন্ধু, বৃষ্টি পড়ছে বুকের ভেতোরে আজও
বন্ধু, আগামী সময় ভীষণ ভারাক্রান্ত
বন্ধু, হাতটা ধরলে ছাড়িয়ে নিবি না তো?
তোর চোখে চেয়ে নিজেকে রাখবো শান্ত।।

Sunday, June 21, 2009

বয়স




বয়স

কখনো দিবাস্বপ্নেরা মেলেছে ডানা
উড়ে গেছে নিষিদ্ধ সব প্রান্তরে
তুচ্ছ করেছে সীমাবদ্ধতার সব মানা
অন্তহীন আশা জমেছে অন্তরে।

চেতনাকে অবজ্ঞা করার সাহস রাখে অবচেতন
প্রৃথিবী ....... সে এক বিশাল আশার নাম
যাযাবর মন ওড়ায় বিজয়কেতন
সনাতন বাধা সেখানে ব্যর্থকাম।

বয়স মানেই একটা যুগান্তর
অপরিণতা একটা মধুর আশীর্বাদ
দায়বদ্ধতা সেখানে অবান্তর
মৃত্যুর থেকে বেশী জীবনের সাধ।

একটা বয়সে নিরাশাও হার মানে
ছোট্টো একটু পাওয়া ... দারুণ সুখী
দুঃখ তখন বিলাস হতেও জানে
চোখের কোণেতে বাষ্পের উঁকিঝুঁকি।

একদিন ছিল ভাবনাটা বড় খাঁটি
বয়স ওড়াত ধর্মের খড়কুটো
গল্প করত সবুজ ঘাস আর মাটি
মন পাড়ি দিত, রাস্তা যদিও ঝুটো।

আকাশেতে মেঘ আঁকতো আলপনা
কোলাহল ... ভিড় ... সাজতো চুপচাপ
রাস্তার সব ধুলোরা ভীষণ চেনা
ব্যকুলতা এক ভীষণ মধুর চাপ।

কখনো বয়স দারুণ পরিণত
নির্ভয়ে সে মোছাতে শিখেছে জল
সময় রেখেছে সময়কে সংযত
কেবল জড়তা করেছে প্রকাশকে হীনবল।

ব্যর্থতা শুধু আঘাত হানেনা যেনো
হতে পারে সে নিজেকে চেনার রূপ
জীবন এখানে বয়স বাড়ালো কেনো
প্রত্যাশাগুলো হয়েছিল নিশ্চুপ।

কখনো বয়স অবহেলা করে মন
প্রতারিত হয় শুদ্ধ স্বপ্নগুলো
মন খুঁজে চলে বিস্মৃতির সাধন
স্মৃতির আঙিনা যণত্রনাতে কালো।

অনেক বয়স অচেনাকে দেয় মন
দূরত্ব পারেনা বয়সকে দূর করতে
কখনো সময় গড়েছে ব্যবধান
তবুও বন্ধু আজও বিনা শর্তে।

আবার বয়স নিজের পথেই চলে
বয়স এসে বয়সের হাত ধরে
বিশ্বাস করে গোপন কথা বলে
অন্যায় সয়ে মনকে ব্যক্ত করে।

একটা বয়স বড্ড পরের তরে
দুঃখ শুষে নীল হয়ে যায় গলা
নিজের ভাবনা কেবল অদরকেরে
মসৃণ হোক বন্ধুর পথ চলা।

অনেক বয়স ভীষণ রোমাঞ্চময়
পাগল এসে পাগলকে ছুঁয়ে যায়
জীবন পারেনি মেলাতে দুটো সময়
বয়সের সাথে বয়স পথ হারায়।

একটা সময় দায়িত্বে খুব স্থির
বয়স পারেনি বাঁধন ছাড়াতে তার
বয়সে ছিল অকূল সমূদ্দুর
শক্ত হাতে মন করে গেছে পার।

এরই মধ্যে কখনো বয়স মন্দ
হেসে খুন করে বয়স নিষ্পাপ
কুটিল মনের লোভী যতগুলো ধন্দ
বেড়াবে বয়ে বয়সের অভিশাপ।

কিছুটা বয়স কাটল নির্বাসনে
জীবন বুঝল জীবনকে দরকার
আশারা আজো আশার স্বপ্ন বোনে
পথ চলা হয়েছে শুরু আবার।

যদিও বয়স স্থির আশ্রয় চায়
বয়সকে আজ বয়স পারে না দিতে
মনের ভিতরে কেবলি রক্তক্ষয়
করেছে শুরু বয়স শোধ নিতে।

একটা বয়স আজো আছে পথ চেয়ে
ভুলগুলো সব হঠাৎ হারাবে পথ
বয়স চলবে বয়সকে সাথে নিয়ে
বয়সকে ভেবে বয়স নেবে শপথ।।