Friday, August 18, 2023

জেনারেল বডি মিটিং

লাইভভিডিও: হ্যাঁ, ইয়ে, জিবি শুরু করছি তা'লে? ব্যাপারটার নিরপেক্ষতা বোঝাতে ফেসবুক লাইভটাই ভালো হবে বলে মনে হয়।

তৃণক্যাডার: জীবী কিসের হে? বুদ্ধিজীবী? সুবোধ? শহীদ দিবস না? পাগলু ডান্স হবে নে? যুবনেত্রী নাচ্ছে না? মদণ্ডা 'ও লাবলি' বলবেনি? ই কি মাজাকি? শোক করবো কি করে?

তৃণটাক্লুকবি: কেউ না থাক, আমাদের মা, আমাদের দিদি তো আছেন। নাচটা আজ থাক বরং। দুটো লাইন রইল:
"শোকের টিয়া উঠল কেঁ(দে) রোদের তক্তপোষে
মেঘের কালো লাগলো পোঁ(*) তোদের লক্ষবুকে"

তৃণডিলান: নু(*)কুসোনা চু(ঙ)কুমুনু, জিজ্ঞেস করেছিলি তোর বউকে ......

ডেপোছেলে:  বাংলা খেয়াল!

তৃণডিলান: কে রে? তোর বাবা বাংলা খেয়াল বান(*)দ! বাংলা খেয়াল একশোবার হয়, তোর মা'কে জিজ্ঞাসা করিস হারা.ম.জাদা!

স্বাধীন: হাল্লা করবেন না। মার্ক্স বলেছিলেন ......

কোর্টবিকাশ: উঁহু, ওনার একান্ন পার্সেন্ট শেয়ার আলিমুদ্দিন রাখে, মামলা করে দেবো কিন্তু।

নোভোটটু: তাহলে লেনিনের-টা থাক।

তৃণপরিচালক: হ্যাঁ, বুদ্ধবাবু সাকুরভের সিনেমায় লেনিনের পা.ছা দেখে আটকে দিয়েছিলেন!

বাবলুদা: আটকানোর কথা কিছু বলছিলে ভাই? আমি পেলেকে একবার ......

ইনবক্স: দাদা? ও দাদা? .....

ফেবুক্যাওড়া: থাম ভাই। খাসা ক্যাঙ্গারু কোর্ট চলছে, মন ভরছে না? 

জয়েরবাবা: হামার ইস্ক্রিনে নজর রাখছে হামি। উ কোর্ট বোর্ট জাজ ওয়াজ লিয়ে কিছু করার থাকলে ইদিকে বোলিয়েন ....

চোরাধিকারী: নমস্কার স্যার!

আওয়াজ: "চোলায় চোলায় ছুটছে জয়ের পোঁ() ...."

জয়েরবাবা: হাপনি প্র্যাকটিস-টা একটু ওদিকে সরে করিয়েন, আর হামার ছেলে হাপনার কোন পাকা ধানে মই দিলো যে আপনি তার পোঁ() ধরে টানাটানি করছেন?

চোরাধিকারী: নমস্কার স্যার! দিলীপের দ্বারা হবে না স্যার! মজুমদার-ও একটা ইডিয়ট। একমাত্র আমিই ....

জয়েরবাবা: তুই থাম। এ মার্কেটে সিসিটিভি বললে লোকে তোর সিসিটিভির সামনে তোলা পুরনো কেসটার স্ট্যাটাস জানতে চাইছে।

চোরাধিকারী: হরেকৃষ্ণ, নেটওয়ার্ক-টা কেটে যাচ্ছে বারবার, কিছু বললেন?

ডুবলুডিলু: হ্যাঁ, মজুমদার তো ইডিয়ট হবেই! তোমরা শা.লা উচ্চবংশজাত চ্যাটার্জি আর চক্রবর্তী নিয়ে মাথায় তুলে নাচতে অভ্যস্ত ...

পাহাড়দত্ত: আমিও কায়েত ছিলাম ভাই। 'গণেশ টকিজ' মৃনাল সেন ঘরানার শেষ সিনেমা, আমি মৃণাল-দাকে ব্রান্ডি খাওয়াতাম, আমি জানি।

লেখকপ্রকাশক: ব্রান্ডি-ফ্যান্ডি না, হুইস্কি খান। আমি খাই। সিঙ্গল মল্ট। নয়তো এই পায়ুমন্থনকারী বাংলা বইবাজারে টিকে থাকা অসম্ভব।

অভিজাতপ্রকাশকগিল্ড: কিছু বলছো?

লেখকপ্রকাশক: না দাদা, আপনারা নমস্য, বাকিদের কথা বলছি।

চোরকুঘোষ: বুদ্ধ-বাবু'র কিছু আপডেট আছে? খিস্তি ছাড়তাম দু একটা।

ইনবক্স: দাদা? ও দাদা? .....

তৃণঘেঁষাপরিচালক: ও তৃণপরিচালক-দা, আমারটা নন্দন চার থেকে নন্দন একে দিয়ে দেবে ভাই? কাল কুড়ি জনের শো পুরো হাউসফুল ছিলো, আমার ভায়রাভাই-এর পুরো ফ্যামিলি এসেছিলো। বাংলা ছবির পাশে লোক একটু দাঁড়াক।

স্বাধীন অথবা নোভোটটু: চোপ! কোথায় ছিলে মরিচ.ঝাঁপির সময়? কোথায় ছিলে বান.তলার সময়? কোথায় ছিলে নন্দী.গ্রামে?

তৃনডিলান: দৃপ্ত পায়ে মশাল জ্বলুক নন্দী.গ্রাম, মমতা.ময়ী'র হাজার দশক নন্দী.গ্রাম ...

ডেপোছেলে: বাংলা খেয়াল ...

তৃণডিলান: তোর বাবা বাংলা খেয়াল ...

ভক্ত: কোথায় ছিলে যখন শ্যামা.প্ৰ খুন হচ্ছিলেন? কোথায় ছিলে যখন বিবেক অগ্নিহোত্রী খুন হন?

বামপরিচালক: দ্বিতীয়জন হননি এখনো, তবে হলে মন্দ হতো না।

মলাট: বিবেক অগ্নিহোত্রী'র পিডিএফ হবে দাদা?

ইনবক্স: দাদা, ও দাদা? ...

ফেবুক্যাওড়া: ইট পেতে বস না ভাই! ফুট কাটিস নে।

স্বাধীন: হাল্লা করবেন না, স্ট্যালিন বলেছিলেন ...

তীব্রবামফোবিক: হ্যাঁ, উনিই তো বলতেন, আর কাউকে বলতে দিতেন বলে তো শুনিনি। বলতে গেলেই গুলাগে পুরে দিতেন।

পরিবর্তনশীল: একটা ব্যোমকেশ, শবর আর মিতিন-মাসি'র ক্রসওভার এর ট্রেলার আছে, এখানে লোকজন আছে, লঞ্চ করবো?

একুশলাখগাড়িঘোষ: আমার ইউটিউব চ্যানেল-এ করুন না দাদা, সর্বহারা ইমেজটায় কেস খেয়ে গেছি, এখন জেন জেড-টাইপ ইমেজটাই ভরসা!

ফুর.ফুরা: আই এস এফে চলে যাবো কিন্তু!

চোরকুঘোষ: তুমি এ মিটিং-এ কি করছো ভাই? তোমাকে না ডেলো যেতে বললাম! এসব হিসেব কি এখানে হয়?

ভেগান: আজকের মিটিং-এ মেনুটা কি আপনাদের? সয়া মিল্ক-এর চা আছে?

ইনবক্স: দাদা, ও দাদা! .....

ফেবুক্যাওড়া: থাম তুই। দিব্যি বাওয়াল হচ্ছে। আনন্দমেলা পূজাবার্ষিকী পড়েছিস? পড় না।

রিভিউয়ার: আনন্দমেলা পূজাবার্ষিকী-কে দশে চার দিলাম।

বিনীতলেখক: ভাই, ঝুমঝুমি'র পুজো-সংখ্যায় আমার এ বছরের ষোল নাম্বার লেখাটা পড়ে একটু লিখে দেবে, শেয়ার করবো?

স্বাধীনপরিচালক: আমি এসব বলবো না। আমার ছবি নন্দন ছয়-এ চলেছে, গতকাল দুপুর পর্যন্ত, আজ জানি না, দেখবার হলে দেখে নেবেন।

ভূতেরদত্ত: নন্দন নিয়ে আর কিছু বলবো না ঠিক করেছি। গেল'বার যা কেস খেয়েছি। এস ভি এফের টাকা ছাড়া এ বাজারে সিনেমা করতে হয় ম'হায়!

স্বাধীন অথবা নোভোটটু: কোথায় ছিলে ভিয়েতনামে, নিকারাগুয়ায়? কোথায় ছিলে গুজরাট-এ?

জয়েরবাবা: গুজরাট শুনলাম, হামি দেখছে কিন্তু এখনো...

আওয়াজ: "আমার গাঁ()র ভেলা চোলছে মেলা ...."

জয়েরবাবা: ধুর মোশায়, তখন থেকে বলছি, ওদিকে গিয়ে করুন না প্র্যাকটিস।

ইনবক্স: ও দাদা? বলছি আমি তো বাঁচতে চেয়েছিলাম!

ফেবুক্যাওড়া: সে তো বেণু-দিও চেয়েছিলো, পরে তোমাদের দাদা তোমাদের দাদা বলে রান্নাঘর চালাতো।

অতিরঞ্জন: একটু দেরি হয়ে গেলো। সেই যে রবীন্দ্রনাথের চাপা কাম এর বহিঃপ্রকাশ, ব্যদলেয়ার এর বই বুকে চেপে আমার জন্য সুচিত্রার কামনা ....

গৌতমদা: ওনার শেষ ইন্টারভিউ-টা আমার কাছেই আছে কিন্তু!

রোববারসম্পাদক: সে যাই বলুন, আমার বাঁধা বাবু টুটুর নাতি'ই এখন সেরা ইন্টারভিউয়ার ...

নীতু: বাঃ, টাকা দুজনে নিলাম, জেলে দুজনে গেলাম, আর কেউ 'আমার রক্তে ইষ্টবেঙ্গল' বলছে না, কেবল টুটু টুটু ...

স্বাধীন / নোভোটটু / বাম: সে যাই হোক, সিসিটিভি নিয়ে আজকের এই যে জি বি ...

ভক্ত: সিসিটিভি লাগবেই। এবি.ভিপি আসবেই। সিসিটিভি না লাগলে আমাদের এমপি লোকসভায় কি ক্লিপিং দেখবে?

ইনবক্স: ওহ, এটা সিসিটিভি নিয়ে? আমি ভেবেছিলাম আমার মারা যাওয়া-টা.....। আছছা, ঠিক আছে, আসি দাদা!

ফেবুক্যাওড়া: আরে দাঁড়া না ভাই। আরে ও ভাই। ধুত্তোর।

(লাইভ এর আলো নিভে আসে)

Sunday, April 9, 2023

ছবি-টবি'র গপ্পো: নানপাকাল নেরাথু মায়াককম

লিজো জোস পেলিসেরি। ভারতের হাতে গোনা চূড়ান্ত প্রতিভাবান নিউ এজ পরিচালকের একজন। "ই মা ইউ" নামের একটা মাল্যালম ছবির মাধ্যমে তার কাজের সাথে আমার প্রথম পরিচয়। চৈতন্য তামানে বা আচল মিশরা'র মতই হতবাক করে দেওয়া ছিলো সেই প্রথম দর্শন।

মামুটি। যখন ইন্টারনেট ছিলো সর্বাধিক বাহান্ন কেবিপিএস-এর, আঞ্চলিক সিনেমার সাবটাইটেল দুরদর্শন-এর রোব্বার দুপুরের ছবি ছাড়া পাওয়া ছিলো দুর্লভ, সেই সময়ে অগুনতি হিন্দি ছবি দেখা ছাড়াও কেবল টিভিতে আরেকটা নেশা পেয়ে বসেছিলো আমাকে। এশিয়ানেট টিভি। মাল্যালম সিনেমা। মামুটি আর মোহনলাল। ভাষার দুরলঙ্ঘ দূরত্ব সত্ত্বেও। আজ এই সত্তরোর্ধ বয়সেও দুজনেই নিজেকে ভাঙছেন, গড়ছেন। এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ভারতবর্ষের সর্বকালের সেরা দশ নায়ক অভিনেতা'র দুজন একই রাজ্যের বাসিন্দা।

নানপাকাল নেরাথু মায়াককম। নেটফ্লিক্স এ আছে। লিজো আর মামুক্কা'র যুগলবন্দী। অবশ্য থেনি ঈশ্বর এর ক্যামেরা আর সম্পূর্ণ সাউন্ড ডিজাইনিং টিমকে একটুকুও কম প্রাধান্য দেওয়া যাবে না। সে অর্থে কোনো কলাকুশলীকেই নয় অবশ্য। নামের আক্ষরিক অর্থ "দুপুরের একটি ঘুম", লিজো ইংরেজি সাবটাইটেল এ নাম রেখেছেন "লাইক য়্যান আফটারনুন ড্রিম"।

জেমস। মাল্যালি। রুক্ষ। ভগবৎ প্রসঙ্গে উদাসীন। পরিবারকে ভালোবাসে। তামিল খাবারদাবার বা লোকজন বিশেষ পছন্দ করে না। স্ত্রী আর বছর বারোর ছেলে। সম্ভবতঃ একটি ধর্মীয় নাটক-গানের দল নিয়ে তামিলনাড়ুর একটি চার্চে যায় নিজেদের গ্রাম থেকে, নিজেদের জন্য একটি বাস ভাড়া করে। জেমস'ই দলের ম্যানেজার বিশেষ। দলের সবাই ফেলে এসেছে কেরালায় নিজেদের দৈনন্দিন কাজকর্ম বা ব্যবসা, সবার মধ্যে ফেরবার তাড়া।

সুন্দরম। তামিলনাড়ুর এক ছোট গ্রামের বাসিন্দা। বাড়িতে স্ত্রী, মেয়ে - সম্ভবতঃ ওই বছর বারোর, অন্ধ মা, বাবা, ভাই। সামান্য চাষবাস আর গরুর দুধ বিক্রি। বছর দুয়েক আগে ক্ষেতে গিয়ে আর ফিরে আসেনি। থানা, পুলিশ। খোঁজ পাওয়া যায় নি আর।

জেমসের দল ফিরছে বাস নিয়ে। ক্লান্তি, নেশার ঘোর, সব মিলিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে সবাই। জেমস হঠাত এক প্রত্যন্ত গ্রামের ক্ষেতের মাঝে থামাতে বলে বাস। হাঁটতে থাকে। এটা সুন্দরমের গ্রাম। মনে হয় জেমসের কতদিনের চেনা। সুন্দরমের বাড়িতে এসে থামে। গরুটাকে খড় দেয়, বাড়ির লোক খড় পর্যাপ্ত দেয়নি বলে গজগজ করে। মাল্যালি-দের সাদা মুন্ডু (ধুতি) ছেড়ে পরে ফেলে বাইরে টাঙানো তামিল লুঙ্গী। বাড়িতে ঢুকে আসে। সুন্দরমের অন্ধ মা, যিনি সারাদিন একটা থামে হেলান দিয়ে একটার পর একটা তামিল সিনেমা দেখে(শুনে) চলেন, তাকে অদ্ভুতভাবে দেখা যায় জেমসের সাথে অনায়াসে কথাবার্তা বলতে, যেন ছেলে সুন্দরম, দুপুরে, দুবছর আগের অন্য যে কোনো দিনের মতোই বাড়ি ফিরে এসেছে। জেমস রান্নাঘরে ঢুকে আসে সুন্দরমের স্ত্রী এর ঘরের মধ্যে দিয়ে, কফি বানাতে গিয়ে রান্নাঘরের জিনিস কম হয়ে আসা নিয়ে অনুযোগ করে স্ত্রীকে, ওই অনায়াস ভঙ্গীতেই, যেন অবিকল সুন্দরম। সুন্দরমের স্ত্রী আর বাবা হতবাক হয়ে তাকিয়ে থাকেন, বারণ করতে পারেন না। আর সুন্দরমের মা আর জেমস তো সর্বক্ষণ একে অন্যের সাথে চূড়ান্ত স্বাভাবিক। জেমস সুন্দরমের বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়ে ক্ষেতের দিকে। বাবা-হারা সুন্দরমের মেয়ে বাড়ি ফিরে মা'কে আর বাড়ির সবাইকে বকাবকি করে। সুন্দরমের ভাই, দাদা হারিয়ে যাওয়ার পরে পরিবারের দায়িত্ব নেওয়া ভাই, হয়তো আরো বড় দায়িত্ব নেবে শিগগিরই, সম্ভবতঃ দূরে কোথাও সেইদিন, ফোনে রাগ দেখায় এক প্রতারককে ঘরে ঢুকে এতকিছু করার সুযোগ দেওয়ার জন্য।

শুরু হয় এক লড়াই। জেমসের দলের লোকজন, তার স্ত্রী পুত্র শ্বশুর মিলিয়ে জেমসের এই পরিবর্তন দেখে হতবাক হয়ে যায়। সামনাসামনি দেখা হলে, যা অনেকের সাথেই অনেকবার হয়, জেমস প্রত্যেককে চিনতে অস্বীকার করে। দলের লোকজন এমনকি ভাবতে থাকে পরেরদিন ঘুমের ওষুধ দিয়ে জেমসকে তুলে নিয়ে যাওয়ার কথাও। গ্রামের লোকেরাও সমস্ত ঘটনাপ্রবাহে হতবাক। রাত্রের মতো থাকার জায়গা আর খাবার এর জোগাড় করে দেয় বাসের লোকজনকে। কিন্তু গ্রামের লোক বা সুন্দরমের বাড়ির লোক কোনোভাবেই জোর করে দূরে সরিয়ে দিতে পারেনা দুবছর বাদে জেমস-এর শরীরে বাড়ি ফিরে আসা সুন্দরমের ভাবনাটাকে। বিশেষতঃ সুন্দরমের স্ত্রী ও বাবা তো নিজেদের পুরোনো রুটিনে পরম মমতায় জায়গা দিতে থাকেন জেমস  অথবা সুন্দরমকে।

গল্পের পূর্ণাঙ্গ বয়ান যেকোনো সিনেমার আলোচনায় ক্ষতিকারক। একজন লোকও যদি সেই আলোচনা পড়ে ছবি দেখতে যান, তবে ছবির টানটান ভাবটা, ছবির নিজের খেয়ালে গল্পের খোলস ছাড়ানোর আনন্দটা চলে যায় তাতে। তাই এইটুকুই রইল গল্পের। পরাবাস্তব যদি আপনার পছন্দ না হয়, সিনেমার শেষে যদি শুধু একটাই সিদ্ধান্ত নিতে পছন্দ আপনার, দেখবেন না এই ছবি। রজারএবার্টডটকম এই ছবিকে তাদের সর্বোচ্চ রেটিং এর একটা দিয়েছে, ফেলিনি-কে টেনে এনেছে দৃশ্যকল্প'র তুলনায়, ভারতীয় হিসেবে গর্ব হবে কিনা ভেবে দেখা আপনার কাজ।

সিনেমার আত্মাটা কিন্তু লিজো'র রাখা ক্যামেরার মতোই স্ট্যাটিক। লংশটের ব্যবধানে রাখা আপনার থেকে। আপনার জীবনের মতোই তার ব্যাকগ্রাউন্ড-এ প্রচুর সিনেমা আর গান-এর, অর্থাৎ দুনিয়ার বিভিন্ন মায়া'র আওয়াজ ভেসে আসা। সিনেমার মায়া, সুন্দরমের গ্রামের এক দুপুর থেকে পরের দিনের দুপুরের মায়া, এতো মায়ার খেলা আপনাকে নিয়ে যেতেই পারে নিজের অস্তিত্বর মায়াকে নিয়ে প্রশ্ন করবার অবস্থায়। শেষ শটে পুরোনো তামিল সিনেমার অতিনাটকীয় গানের লিরিকে প্রশ্ন ওঠে, শেষ দিনে স্ত্রী রাস্তা অব্দি আপনাকে সঙ্গ দেবেন, ছেলে চিতা অব্দি, কিন্তু অখণ্ডে মিশে যাওয়া পর্যন্ত কে ধরবে হাত? পরিচালকের মর্জি অনুযায়ী'ই আপনার ভাবনাও জেমস ও সুন্দরম এবং তাদের পরিবারের সাথে ভাবনায় ব্যস্ত থাকে, কারণ সবাই এক অদ্ভুত স্বপ্ন দেখেছে সিনেমার পর্দায় বা তাদের জীবনের একটা দিনে।