tag:blogger.com,1999:blog-73044019383325077532024-03-04T23:57:02.718-08:00Escapist's Scrapbook ...পলাতকhttp://www.blogger.com/profile/10815481700144344107noreply@blogger.comBlogger48125tag:blogger.com,1999:blog-7304401938332507753.post-48130919494102222432023-08-18T22:30:00.001-07:002023-08-18T22:30:42.659-07:00জেনারেল বডি মিটিং<div>লাইভভিডিও: হ্যাঁ, ইয়ে, জিবি শুরু করছি তা'লে? ব্যাপারটার নিরপেক্ষতা বোঝাতে ফেসবুক লাইভটাই ভালো হবে বলে মনে হয়।</div><div><br></div><div>তৃণক্যাডার: জীবী কিসের হে? বুদ্ধিজীবী? সুবোধ? শহীদ দিবস না? পাগলু ডান্স হবে নে? যুবনেত্রী নাচ্ছে না? মদণ্ডা 'ও লাবলি' বলবেনি? ই কি মাজাকি? শোক করবো কি করে?</div><div><br></div><div>তৃণটাক্লুকবি: কেউ না থাক, আমাদের মা, আমাদের দিদি তো আছেন। নাচটা আজ থাক বরং। দুটো লাইন রইল:</div><div>"শোকের টিয়া উঠল কেঁ(দে) রোদের তক্তপোষে</div><div>মেঘের কালো লাগলো পোঁ(*) তোদের লক্ষবুকে"</div><div><br></div><div>তৃণডিলান: নু(*)কুসোনা চু(ঙ)কুমুনু, জিজ্ঞেস করেছিলি তোর বউকে ......</div><div><br></div><div>ডেপোছেলে: বাংলা খেয়াল!</div><div><br></div><div>তৃণডিলান: কে রে? তোর বাবা বাংলা খেয়াল বান(*)দ! বাংলা খেয়াল একশোবার হয়, তোর মা'কে জিজ্ঞাসা করিস হারা.ম.জাদা!</div><div><br></div><div>স্বাধীন: হাল্লা করবেন না। মার্ক্স বলেছিলেন ......</div><div><br></div><div>কোর্টবিকাশ: উঁহু, ওনার একান্ন পার্সেন্ট শেয়ার আলিমুদ্দিন রাখে, মামলা করে দেবো কিন্তু।</div><div><br></div><div>নোভোটটু: তাহলে লেনিনের-টা থাক।</div><div><br></div><div>তৃণপরিচালক: হ্যাঁ, বুদ্ধবাবু সাকুরভের সিনেমায় লেনিনের পা.ছা দেখে আটকে দিয়েছিলেন!</div><div><br></div><div>বাবলুদা: আটকানোর কথা কিছু বলছিলে ভাই? আমি পেলেকে একবার ......</div><div><br></div><div>ইনবক্স: দাদা? ও দাদা? .....</div><div><br></div><div>ফেবুক্যাওড়া: থাম ভাই। খাসা ক্যাঙ্গারু কোর্ট চলছে, মন ভরছে না? </div><div><br></div><div>জয়েরবাবা: হামার ইস্ক্রিনে নজর রাখছে হামি। উ কোর্ট বোর্ট জাজ ওয়াজ লিয়ে কিছু করার থাকলে ইদিকে বোলিয়েন ....</div><div><br></div><div>চোরাধিকারী: নমস্কার স্যার!</div><div><br></div><div>আওয়াজ: "চোলায় চোলায় ছুটছে জয়ের পোঁ() ...."</div><div><br></div><div>জয়েরবাবা: হাপনি প্র্যাকটিস-টা একটু ওদিকে সরে করিয়েন, আর হামার ছেলে হাপনার কোন পাকা ধানে মই দিলো যে আপনি তার পোঁ() ধরে টানাটানি করছেন?</div><div><br></div><div>চোরাধিকারী: নমস্কার স্যার! দিলীপের দ্বারা হবে না স্যার! মজুমদার-ও একটা ইডিয়ট। একমাত্র আমিই ....</div><div><br></div><div>জয়েরবাবা: তুই থাম। এ মার্কেটে সিসিটিভি বললে লোকে তোর সিসিটিভির সামনে তোলা পুরনো কেসটার স্ট্যাটাস জানতে চাইছে।</div><div><br></div><div>চোরাধিকারী: হরেকৃষ্ণ, নেটওয়ার্ক-টা কেটে যাচ্ছে বারবার, কিছু বললেন?</div><div><br></div><div>ডুবলুডিলু: হ্যাঁ, মজুমদার তো ইডিয়ট হবেই! তোমরা শা.লা উচ্চবংশজাত চ্যাটার্জি আর চক্রবর্তী নিয়ে মাথায় তুলে নাচতে অভ্যস্ত ...</div><div><br></div><div>পাহাড়দত্ত: আমিও কায়েত ছিলাম ভাই। 'গণেশ টকিজ' মৃনাল সেন ঘরানার শেষ সিনেমা, আমি মৃণাল-দাকে ব্রান্ডি খাওয়াতাম, আমি জানি।</div><div><br></div><div>লেখকপ্রকাশক: ব্রান্ডি-ফ্যান্ডি না, হুইস্কি খান। আমি খাই। সিঙ্গল মল্ট। নয়তো এই পায়ুমন্থনকারী বাংলা বইবাজারে টিকে থাকা অসম্ভব।</div><div><br></div><div>অভিজাতপ্রকাশকগিল্ড: কিছু বলছো?</div><div><br></div><div>লেখকপ্রকাশক: না দাদা, আপনারা নমস্য, বাকিদের কথা বলছি।</div><div><br></div><div>চোরকুঘোষ: বুদ্ধ-বাবু'র কিছু আপডেট আছে? খিস্তি ছাড়তাম দু একটা।</div><div><br></div><div>ইনবক্স: দাদা? ও দাদা? .....</div><div><br></div><div>তৃণঘেঁষাপরিচালক: ও তৃণপরিচালক-দা, আমারটা নন্দন চার থেকে নন্দন একে দিয়ে দেবে ভাই? কাল কুড়ি জনের শো পুরো হাউসফুল ছিলো, আমার ভায়রাভাই-এর পুরো ফ্যামিলি এসেছিলো। বাংলা ছবির পাশে লোক একটু দাঁড়াক।</div><div><br></div><div>স্বাধীন অথবা নোভোটটু: চোপ! কোথায় ছিলে মরিচ.ঝাঁপির সময়? কোথায় ছিলে বান.তলার সময়? কোথায় ছিলে নন্দী.গ্রামে?</div><div><br></div><div>তৃনডিলান: দৃপ্ত পায়ে মশাল জ্বলুক নন্দী.গ্রাম, মমতা.ময়ী'র হাজার দশক নন্দী.গ্রাম ...</div><div><br></div><div>ডেপোছেলে: বাংলা খেয়াল ...</div><div><br></div><div>তৃণডিলান: তোর বাবা বাংলা খেয়াল ...</div><div><br></div><div>ভক্ত: কোথায় ছিলে যখন শ্যামা.প্ৰ খুন হচ্ছিলেন? কোথায় ছিলে যখন বিবেক অগ্নিহোত্রী খুন হন?</div><div><br></div><div>বামপরিচালক: দ্বিতীয়জন হননি এখনো, তবে হলে মন্দ হতো না।</div><div><br></div><div>মলাট: বিবেক অগ্নিহোত্রী'র পিডিএফ হবে দাদা?</div><div><br></div><div>ইনবক্স: দাদা, ও দাদা? ...</div><div><br></div><div>ফেবুক্যাওড়া: ইট পেতে বস না ভাই! ফুট কাটিস নে।</div><div><br></div><div>স্বাধীন: হাল্লা করবেন না, স্ট্যালিন বলেছিলেন ...</div><div><br></div><div>তীব্রবামফোবিক: হ্যাঁ, উনিই তো বলতেন, আর কাউকে বলতে দিতেন বলে তো শুনিনি। বলতে গেলেই গুলাগে পুরে দিতেন।</div><div><br></div><div>পরিবর্তনশীল: একটা ব্যোমকেশ, শবর আর মিতিন-মাসি'র ক্রসওভার এর ট্রেলার আছে, এখানে লোকজন আছে, লঞ্চ করবো?</div><div><br></div><div>একুশলাখগাড়িঘোষ: আমার ইউটিউব চ্যানেল-এ করুন না দাদা, সর্বহারা ইমেজটায় কেস খেয়ে গেছি, এখন জেন জেড-টাইপ ইমেজটাই ভরসা!</div><div><br></div><div>ফুর.ফুরা: আই এস এফে চলে যাবো কিন্তু!</div><div><br></div><div>চোরকুঘোষ: তুমি এ মিটিং-এ কি করছো ভাই? তোমাকে না ডেলো যেতে বললাম! এসব হিসেব কি এখানে হয়?</div><div><br></div><div>ভেগান: আজকের মিটিং-এ মেনুটা কি আপনাদের? সয়া মিল্ক-এর চা আছে?</div><div><br></div><div>ইনবক্স: দাদা, ও দাদা! .....</div><div><br></div><div>ফেবুক্যাওড়া: থাম তুই। দিব্যি বাওয়াল হচ্ছে। আনন্দমেলা পূজাবার্ষিকী পড়েছিস? পড় না।</div><div><br></div><div>রিভিউয়ার: আনন্দমেলা পূজাবার্ষিকী-কে দশে চার দিলাম।</div><div><br></div><div>বিনীতলেখক: ভাই, ঝুমঝুমি'র পুজো-সংখ্যায় আমার এ বছরের ষোল নাম্বার লেখাটা পড়ে একটু লিখে দেবে, শেয়ার করবো?</div><div><br></div><div>স্বাধীনপরিচালক: আমি এসব বলবো না। আমার ছবি নন্দন ছয়-এ চলেছে, গতকাল দুপুর পর্যন্ত, আজ জানি না, দেখবার হলে দেখে নেবেন।</div><div><br></div><div>ভূতেরদত্ত: নন্দন নিয়ে আর কিছু বলবো না ঠিক করেছি। গেল'বার যা কেস খেয়েছি। এস ভি এফের টাকা ছাড়া এ বাজারে সিনেমা করতে হয় ম'হায়!</div><div><br></div><div>স্বাধীন অথবা নোভোটটু: কোথায় ছিলে ভিয়েতনামে, নিকারাগুয়ায়? কোথায় ছিলে গুজরাট-এ?</div><div><br></div><div>জয়েরবাবা: গুজরাট শুনলাম, হামি দেখছে কিন্তু এখনো...</div><div><br></div><div>আওয়াজ: "আমার গাঁ()র ভেলা চোলছে মেলা ...."</div><div><br></div><div>জয়েরবাবা: ধুর মোশায়, তখন থেকে বলছি, ওদিকে গিয়ে করুন না প্র্যাকটিস।</div><div><br></div><div>ইনবক্স: ও দাদা? বলছি আমি তো বাঁচতে চেয়েছিলাম!</div><div><br></div><div>ফেবুক্যাওড়া: সে তো বেণু-দিও চেয়েছিলো, পরে তোমাদের দাদা তোমাদের দাদা বলে রান্নাঘর চালাতো।</div><div><br></div><div>অতিরঞ্জন: একটু দেরি হয়ে গেলো। সেই যে রবীন্দ্রনাথের চাপা কাম এর বহিঃপ্রকাশ, ব্যদলেয়ার এর বই বুকে চেপে আমার জন্য সুচিত্রার কামনা ....</div><div><br></div><div>গৌতমদা: ওনার শেষ ইন্টারভিউ-টা আমার কাছেই আছে কিন্তু!</div><div><br></div><div>রোববারসম্পাদক: সে যাই বলুন, আমার বাঁধা বাবু টুটুর নাতি'ই এখন সেরা ইন্টারভিউয়ার ...</div><div><br></div><div>নীতু: বাঃ, টাকা দুজনে নিলাম, জেলে দুজনে গেলাম, আর কেউ 'আমার রক্তে ইষ্টবেঙ্গল' বলছে না, কেবল টুটু টুটু ...</div><div><br></div><div>স্বাধীন / নোভোটটু / বাম: সে যাই হোক, সিসিটিভি নিয়ে আজকের এই যে জি বি ...</div><div><br></div><div>ভক্ত: সিসিটিভি লাগবেই। এবি.ভিপি আসবেই। সিসিটিভি না লাগলে আমাদের এমপি লোকসভায় কি ক্লিপিং দেখবে?</div><div><br></div><div>ইনবক্স: ওহ, এটা সিসিটিভি নিয়ে? আমি ভেবেছিলাম আমার মারা যাওয়া-টা.....। আছছা, ঠিক আছে, আসি দাদা!</div><div><br></div><div>ফেবুক্যাওড়া: আরে দাঁড়া না ভাই। আরে ও ভাই। ধুত্তোর।</div><div><br></div><div>(লাইভ এর আলো নিভে আসে)</div><div><br></div><div><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;">
<a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEi98bjb3LQyn0SH5TDP97UKFRuzWBZZBdw-KFxm7xGjJEdkkOweZPY7JPEvnlmC55HLF1gWMK5-xsHxXijd-eHIaEYKgURgglJg2uyc37Y3Pgzu8zsnvMrKEXa02O9fvkc7UGzwsZIIC8BOVq36swbpEywuI61FB_C2sKqTQcQEMeSoe9OCVRepeUWKr0Q" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;">
<img border="0" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEi98bjb3LQyn0SH5TDP97UKFRuzWBZZBdw-KFxm7xGjJEdkkOweZPY7JPEvnlmC55HLF1gWMK5-xsHxXijd-eHIaEYKgURgglJg2uyc37Y3Pgzu8zsnvMrKEXa02O9fvkc7UGzwsZIIC8BOVq36swbpEywuI61FB_C2sKqTQcQEMeSoe9OCVRepeUWKr0Q" width="400">
</a>
</div><br></div>পলাতকhttp://www.blogger.com/profile/10815481700144344107noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-7304401938332507753.post-37371836852194971632023-04-09T09:08:00.001-07:002023-04-09T09:08:30.377-07:00ছবি-টবি'র গপ্পো: নানপাকাল নেরাথু মায়াককম<div>লিজো জোস পেলিসেরি। ভারতের হাতে গোনা চূড়ান্ত প্রতিভাবান নিউ এজ পরিচালকের একজন। "ই মা ইউ" নামের একটা মাল্যালম ছবির মাধ্যমে তার কাজের সাথে আমার প্রথম পরিচয়। চৈতন্য তামানে বা আচল মিশরা'র মতই হতবাক করে দেওয়া ছিলো সেই প্রথম দর্শন।</div><div><br></div><div>মামুটি। যখন ইন্টারনেট ছিলো সর্বাধিক বাহান্ন কেবিপিএস-এর, আঞ্চলিক সিনেমার সাবটাইটেল দুরদর্শন-এর রোব্বার দুপুরের ছবি ছাড়া পাওয়া ছিলো দুর্লভ, সেই সময়ে অগুনতি হিন্দি ছবি দেখা ছাড়াও কেবল টিভিতে আরেকটা নেশা পেয়ে বসেছিলো আমাকে। এশিয়ানেট টিভি। মাল্যালম সিনেমা। মামুটি আর মোহনলাল। ভাষার দুরলঙ্ঘ দূরত্ব সত্ত্বেও। আজ এই সত্তরোর্ধ বয়সেও দুজনেই নিজেকে ভাঙছেন, গড়ছেন। এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ভারতবর্ষের সর্বকালের সেরা দশ নায়ক অভিনেতা'র দুজন একই রাজ্যের বাসিন্দা।</div><div><br></div><div>নানপাকাল নেরাথু মায়াককম। নেটফ্লিক্স এ আছে। লিজো আর মামুক্কা'র যুগলবন্দী। অবশ্য থেনি ঈশ্বর এর ক্যামেরা আর সম্পূর্ণ সাউন্ড ডিজাইনিং টিমকে একটুকুও কম প্রাধান্য দেওয়া যাবে না। সে অর্থে কোনো কলাকুশলীকেই নয় অবশ্য। নামের আক্ষরিক অর্থ "দুপুরের একটি ঘুম", লিজো ইংরেজি সাবটাইটেল এ নাম রেখেছেন "লাইক য়্যান আফটারনুন ড্রিম"।</div><div><br></div><div>জেমস। মাল্যালি। রুক্ষ। ভগবৎ প্রসঙ্গে উদাসীন। পরিবারকে ভালোবাসে। তামিল খাবারদাবার বা লোকজন বিশেষ পছন্দ করে না। স্ত্রী আর বছর বারোর ছেলে। সম্ভবতঃ একটি ধর্মীয় নাটক-গানের দল নিয়ে তামিলনাড়ুর একটি চার্চে যায় নিজেদের গ্রাম থেকে, নিজেদের জন্য একটি বাস ভাড়া করে। জেমস'ই দলের ম্যানেজার বিশেষ। দলের সবাই ফেলে এসেছে কেরালায় নিজেদের দৈনন্দিন কাজকর্ম বা ব্যবসা, সবার মধ্যে ফেরবার তাড়া।</div><div><br></div><div>সুন্দরম। তামিলনাড়ুর এক ছোট গ্রামের বাসিন্দা। বাড়িতে স্ত্রী, মেয়ে - সম্ভবতঃ ওই বছর বারোর, অন্ধ মা, বাবা, ভাই। সামান্য চাষবাস আর গরুর দুধ বিক্রি। বছর দুয়েক আগে ক্ষেতে গিয়ে আর ফিরে আসেনি। থানা, পুলিশ। খোঁজ পাওয়া যায় নি আর।</div><div><br></div><div>জেমসের দল ফিরছে বাস নিয়ে। ক্লান্তি, নেশার ঘোর, সব মিলিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে সবাই। জেমস হঠাত এক প্রত্যন্ত গ্রামের ক্ষেতের মাঝে থামাতে বলে বাস। হাঁটতে থাকে। এটা সুন্দরমের গ্রাম। মনে হয় জেমসের কতদিনের চেনা। সুন্দরমের বাড়িতে এসে থামে। গরুটাকে খড় দেয়, বাড়ির লোক খড় পর্যাপ্ত দেয়নি বলে গজগজ করে। মাল্যালি-দের সাদা মুন্ডু (ধুতি) ছেড়ে পরে ফেলে বাইরে টাঙানো তামিল লুঙ্গী। বাড়িতে ঢুকে আসে। সুন্দরমের অন্ধ মা, যিনি সারাদিন একটা থামে হেলান দিয়ে একটার পর একটা তামিল সিনেমা দেখে(শুনে) চলেন, তাকে অদ্ভুতভাবে দেখা যায় জেমসের সাথে অনায়াসে কথাবার্তা বলতে, যেন ছেলে সুন্দরম, দুপুরে, দুবছর আগের অন্য যে কোনো দিনের মতোই বাড়ি ফিরে এসেছে। জেমস রান্নাঘরে ঢুকে আসে সুন্দরমের স্ত্রী এর ঘরের মধ্যে দিয়ে, কফি বানাতে গিয়ে রান্নাঘরের জিনিস কম হয়ে আসা নিয়ে অনুযোগ করে স্ত্রীকে, ওই অনায়াস ভঙ্গীতেই, যেন অবিকল সুন্দরম। সুন্দরমের স্ত্রী আর বাবা হতবাক হয়ে তাকিয়ে থাকেন, বারণ করতে পারেন না। আর সুন্দরমের মা আর জেমস তো সর্বক্ষণ একে অন্যের সাথে চূড়ান্ত স্বাভাবিক। জেমস সুন্দরমের বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়ে ক্ষেতের দিকে। বাবা-হারা সুন্দরমের মেয়ে বাড়ি ফিরে মা'কে আর বাড়ির সবাইকে বকাবকি করে। সুন্দরমের ভাই, দাদা হারিয়ে যাওয়ার পরে পরিবারের দায়িত্ব নেওয়া ভাই, হয়তো আরো বড় দায়িত্ব নেবে শিগগিরই, সম্ভবতঃ দূরে কোথাও সেইদিন, ফোনে রাগ দেখায় এক প্রতারককে ঘরে ঢুকে এতকিছু করার সুযোগ দেওয়ার জন্য।</div><div><br></div><div>শুরু হয় এক লড়াই। জেমসের দলের লোকজন, তার স্ত্রী পুত্র শ্বশুর মিলিয়ে জেমসের এই পরিবর্তন দেখে হতবাক হয়ে যায়। সামনাসামনি দেখা হলে, যা অনেকের সাথেই অনেকবার হয়, জেমস প্রত্যেককে চিনতে অস্বীকার করে। দলের লোকজন এমনকি ভাবতে থাকে পরেরদিন ঘুমের ওষুধ দিয়ে জেমসকে তুলে নিয়ে যাওয়ার কথাও। গ্রামের লোকেরাও সমস্ত ঘটনাপ্রবাহে হতবাক। রাত্রের মতো থাকার জায়গা আর খাবার এর জোগাড় করে দেয় বাসের লোকজনকে। কিন্তু গ্রামের লোক বা সুন্দরমের বাড়ির লোক কোনোভাবেই জোর করে দূরে সরিয়ে দিতে পারেনা দুবছর বাদে জেমস-এর শরীরে বাড়ি ফিরে আসা সুন্দরমের ভাবনাটাকে। বিশেষতঃ সুন্দরমের স্ত্রী ও বাবা তো নিজেদের পুরোনো রুটিনে পরম মমতায় জায়গা দিতে থাকেন জেমস অথবা সুন্দরমকে।</div><div><br></div><div>গল্পের পূর্ণাঙ্গ বয়ান যেকোনো সিনেমার আলোচনায় ক্ষতিকারক। একজন লোকও যদি সেই আলোচনা পড়ে ছবি দেখতে যান, তবে ছবির টানটান ভাবটা, ছবির নিজের খেয়ালে গল্পের খোলস ছাড়ানোর আনন্দটা চলে যায় তাতে। তাই এইটুকুই রইল গল্পের। পরাবাস্তব যদি আপনার পছন্দ না হয়, সিনেমার শেষে যদি শুধু একটাই সিদ্ধান্ত নিতে পছন্দ আপনার, দেখবেন না এই ছবি। রজারএবার্টডটকম এই ছবিকে তাদের সর্বোচ্চ রেটিং এর একটা দিয়েছে, ফেলিনি-কে টেনে এনেছে দৃশ্যকল্প'র তুলনায়, ভারতীয় হিসেবে গর্ব হবে কিনা ভেবে দেখা আপনার কাজ।</div><div><br></div><div>সিনেমার আত্মাটা কিন্তু লিজো'র রাখা ক্যামেরার মতোই স্ট্যাটিক। লংশটের ব্যবধানে রাখা আপনার থেকে। আপনার জীবনের মতোই তার ব্যাকগ্রাউন্ড-এ প্রচুর সিনেমা আর গান-এর, অর্থাৎ দুনিয়ার বিভিন্ন মায়া'র আওয়াজ ভেসে আসা। সিনেমার মায়া, সুন্দরমের গ্রামের এক দুপুর থেকে পরের দিনের দুপুরের মায়া, এতো মায়ার খেলা আপনাকে নিয়ে যেতেই পারে নিজের অস্তিত্বর মায়াকে নিয়ে প্রশ্ন করবার অবস্থায়। শেষ শটে পুরোনো তামিল সিনেমার অতিনাটকীয় গানের লিরিকে প্রশ্ন ওঠে, শেষ দিনে স্ত্রী রাস্তা অব্দি আপনাকে সঙ্গ দেবেন, ছেলে চিতা অব্দি, কিন্তু অখণ্ডে মিশে যাওয়া পর্যন্ত কে ধরবে হাত? পরিচালকের মর্জি অনুযায়ী'ই আপনার ভাবনাও জেমস ও সুন্দরম এবং তাদের পরিবারের সাথে ভাবনায় ব্যস্ত থাকে, কারণ সবাই এক অদ্ভুত স্বপ্ন দেখেছে সিনেমার পর্দায় বা তাদের জীবনের একটা দিনে।</div><div><br></div><div><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;">
<a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhTOo8xaAHtg3nrbED9u66BGDuYOuz9UAeB7k9ll3fiXtLUVOGMYXoyLzbW0crCKWhPj3_ATm9V4P0r4t7J8vgDqhzIKky7SmNCCXjntVAHLofIa-frhGRAa3of6NkjCb2UgrxAgrRMfD0/s1600/1681056505641612-0.png" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;">
<img border="0" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhTOo8xaAHtg3nrbED9u66BGDuYOuz9UAeB7k9ll3fiXtLUVOGMYXoyLzbW0crCKWhPj3_ATm9V4P0r4t7J8vgDqhzIKky7SmNCCXjntVAHLofIa-frhGRAa3of6NkjCb2UgrxAgrRMfD0/s1600/1681056505641612-0.png" width="400">
</a>
</div><br></div>পলাতকhttp://www.blogger.com/profile/10815481700144344107noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-7304401938332507753.post-2967876577555762732022-08-14T01:06:00.001-07:002022-08-14T01:06:22.350-07:00গোরা<div>কাকতালীয়ভাবে, যেদিন রুশদিকে প্রায় বিশ-বার ফালাফালা করছে ধর্মের ছুরি, সেদিনই, স্টোরিটেল য়্যাপে সাড়ে বাইশ ঘন্টার অডিওবুক ম্যারাথনে শেষ হলো 'গোরা'। জীবনে দ্বিতীয়বার। </div><div><br></div><div>একটু বিষয় থেকে সরে যাই। সম্প্রতি, দি ওয়ার্স্ট পার্সন ইন দি ওয়ার্ল্ড নামক একটা নরউইজিয়ান ছবিতে খুব সুন্দর করে বর্তমান পৃথিবীর চল্লিশের ঘরের ও কুড়ির ঘরের লোকেদের প্রাথমিক ডিলেমাটা বলা হয়েছে। প্রথমটা এখানে প্রাসঙ্গিক। চল্লিশের ঘরের যখন লোকজন একটা নতুন পৃথিবীতে বেড়ে উঠেছিলো, তখন কোনো একটা বিশেষ সামাজিক বা রাজনৈতিক বোধকে কোনো বিশেষ বিশেষ লেখক, শিল্পী, বই, সিনেমা বা মুভমেন্ট দিয়ে সন্তর্পণে খাইয়ে দেওয়া হয়েছিলো। যেটার ভালো আর খারাপ দুটো দিকই ছিলো, কিন্তু একটা কথা একেবারে খাঁটি, তাদের বৈচিত্র্যর বা বিপরীতের সঙ্গে একসাথে বেড়ে ওঠার ক্ষমতা থেকে অনেকটা দূরে সরিয়ে দিয়েছিলো, যার ফল আজকের সময়ে এসে তাদেরকে ভুগতে হচ্ছে।</div><div><br></div><div>জীবনে প্রথমবার 'গোরা', 'চার অধ্যায়' আর 'ঘরে বাইরে' পড়া - আমার ব্যক্তিগত রাজনৈতিক আর ধর্মীয় অস্তিত্বটা গড়ে তুলেছিল, যা আজ অব্দি একটুও টসকায় নি, শুধুমাত্র বহিরজগৎ এর চরম বৈপরীত্য সহ্য করতে না পেরে মৌনতা অবলম্বন করতে বাধ্য করেছে।</div><div><br></div><div>এই দ্বিতীয়বার এর গোরাপঠন (বা, শ্রবণ) সেই বোধটাকে দৃঢ়ই করলো আরো। এখানেই বাংলার প্রিয় শোকেস-বন্দী ঠাকুরের জয়। সমসাময়িকতা। হতে পারে সাকুল্যে কুড়িটি কবিতা, বাজারচলতি পঞ্চাশটি গান, ব্যক্তিপূজা, বা ব্যক্তিচরিত্রের কালিমালেপনের বাইরে তাকে চিনতে পারার পরিসর কমেই এসেছে, কিন্তু তিনি থাকবেন, অল্প কিছু লোকের মধ্যে হলেও, আবিষ্কার ও পুনরাবিষ্কার এর মধ্য দিয়ে।</div><div><br></div><div>প্রাচীন ধর্ম প্রাসঙ্গিক, কিন্তু তার পচন থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখা মূর্খতা। পরিবর্তন প্রাসঙ্গিক, কিন্তু পরিবর্তন এর ঝান্ডা ধরে মূল ও দ্বন্দ্বকে অস্বীকার করা অন্যায়। ধর্মের মোড়লদের দূরে সরিয়ে রাখা কতটা জরুরি, ঠিক যতটা জরুরি ধর্মের দর্শনটাকে নিজের মনের গবেষনাগারে পরীক্ষা করে নির্যাসটুকু তুলে নেওয়া। দুর্বল ও অবহেলিতদের পাশে দাঁড়ানো ততটাই জরুরি, ঠিক যতটা জরুরি ক্ষমতার স্বাদ পেয়ে তাদের বদলে যাবার পর তাদের উত্তরণের ইতিহাসকে মনে করিয়ে দেওয়া। সমাজপরিবর্তনের ঠিকাদারদের নির্বোধ ভক্তরা ঠিক কতটা অপাংক্তেয়। সবথেকে বড় সত্য হলো আপেক্ষিকতা, আর সত্য নিজে। তাদের পাওয়ার একমাত্র রাস্তা হলো আত্মপর্যালোচনা। গোরা আবার শেখালো। এবং শিখিয়েও মনে করিয়ে দিলো এগুলোই ধ্রুবসত্য বলে দাগিয়ে রাখবার কোনো উপায় নেই, কালের কষ্টিপাথরে যাচাই করে যেতে হবে, প্রতিনিয়ত।</div><div><br></div><div>উপন্যাস হিসেবে? মন্তব্য করবার উপায় নেই। পড়াশোনার পরিধি সেই অবকাশ দেয় না। বঙ্কিমগদ্যভাষাকে তরল করে ফেলে এর জোর ও স্বাতন্ত্র্যকে খর্ব করার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন ঔপন্যাসিক বিভিন্ন সময়ে (আমি যাদের শুনেছি - নবারুণ, সন্দীপন)। কিন্তু সে আলোচনা সাজবে তাদের যারা প্রতিনিয়ত এই তুলনামূলক সাহিত্যবিচারে মগ্ন আছেন।</div><div><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;">
<a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEimAabNLSCykeKl-F0V6V03krqAXH-cO1t9h4PD-FQAQV6VDA05eoiXjUh8S5maLFik20mDw3PV2qTCtV6CZiwocTDnBUxervYjrRDYx81LyOU9zTOzO67TxX2VwFOaScBwMBFcQAfuEmA/s1600/1660464376603279-0.png" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;">
<img border="0" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEimAabNLSCykeKl-F0V6V03krqAXH-cO1t9h4PD-FQAQV6VDA05eoiXjUh8S5maLFik20mDw3PV2qTCtV6CZiwocTDnBUxervYjrRDYx81LyOU9zTOzO67TxX2VwFOaScBwMBFcQAfuEmA/s1600/1660464376603279-0.png" width="400">
</a>
</div><br></div>পলাতকhttp://www.blogger.com/profile/10815481700144344107noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-7304401938332507753.post-31183513680093676392022-06-14T09:11:00.001-07:002022-06-14T09:11:01.614-07:00আত্মঘাতী বাঙালি<div>১</div><div><br></div><div>আমরা যারা ছোটবেলায় মফস্বল থেকে কৈশোরান্তে বিভিন্ন পরীক্ষা-টরীক্ষা দিতে রবিবার ভোরের ট্রেন ধরে সকাল আটটার মধ্যে হাওড়ায় এসে নামতাম, তাদের কাছে দ্বিতীয় লক্ষ্য হতো সকাল দশটা বা এগারোটার মধ্যে কলকাতার নির্দিষ্ট পরীক্ষাকেন্দ্রে উপস্থিত হওয়া। আগে থেকে বাবা-কাকাদের পরামর্শ না নেওয়া থাকলে, ট্রেনে যে সব কাকুরা ডেলিপ্যাসেঞ্জারি করতেন, আনন্দবাজার 'কিনে' পড়তেন, মোটা কালো ফ্রেমের চশমা পরতেন, চেককাটা জামা ইন করে পরতেন না, তাদেরকে জিজ্ঞাসা করতে হতো প্রথম কোন বাসটা ধরে গন্তব্যর সবচেয়ে কাছাকাছি পৌঁছাতে পারবো। যে কোনো কাউকেই জিজ্ঞাসা করা যেতো, কিন্তু এদের এফেক্টিভনেস ছিলো অনবদ্য। একটা "এহ, পোলাপান" গোছের নজর দিয়ে নিজের জ্ঞান কম থাকলেও নিজের ডেলিপ্যাসেঞ্জারি ব্যাটালিয়নকে দিয়ে টিমওয়ার্ক করিয়ে কোন সাবওয়ে দিয়ে বেরিয়ে সরকারি লাল বা ধুসরবাস বা বেসরকারি নীলবাস ধরতে হবে জানিয়ে তাদের গতি, ভাড়া, এবং গন্তব্যস্থলের য়্যাকিউরেসির ওপর একটা কম্পারেটিভ স্টাডি ঝপ করে ফেলে দিতে পারতেন। অথবা, "এই দাসবাবু, একে আপনার রুটে ঝাঁপতলা পেরলে যে স্টপেজটায় ঘোষের শ্বশুরবাড়ি ছিলো ওটায় নামিয়ে দেবেন তো" মার্কা জ্যাকপট অফার-ও থাকতো কখনোসখনো।</div><div><br></div><div>২</div><div><br></div><div>স্টপেজ এ নেমে উদ্দেশ্য থাকতো শেষ লক্ষ্যভেদ। বেশিরভাগ পরীক্ষাকেন্দ্রই হতো উত্তর, মধ্য, বা সদ্য দক্ষিণ কলকাতা শুরু হওয়া এলাকা ঘেঁষা স্কুলে। এবং খুব কম বাসের রুট হাওড়া থেকে সরাসরি পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দিতে পারতো। এক্ষেত্রে, এই দ্বিতীয় খেপে, মসিহার ভূমিকায় নামতেন যে সমস্ত পাড়ার কাকুরা, তারা রবিবার সকালে পরনে পরতেন নীল বা বাদামি চেক লুঙ্গি, গায়ে ফতুয়া বা একটা পাতলা সুতির শার্ট, ওপরের দুটো বোতাম খোলা থাকতো, বাঁ কব্জিতে একটা এইচ এম টি'র ঘড়ি, পায়ে চপ্পল, ডানহাতে বাজারের একাধিক বিভিন্ন বহরের ব্যাগ, আর ডানহাতে রোল করে পাকানো য়্যাটলিস্ট দুখানা সংবাদপত্র। সংখ্যাতত্ত্বের বিচারে, সেসময়, শারজায় পাকিস্তানের কাছে ভারতের হারার স্পেকুলেশনের থেকেও সফলতার বেশি সম্ভাব্যতা থাকতো এই সমস্ত কাকুদের পাখিপড়া করে বোঝানো রুটের হদিশে। মনে করিয়ে দেওয়া ভালো, এরা দুটি রুট বলতেন, একটি হতো অন্য একটা বাসে করে শেষ গন্তব্যে যাওয়ার, অপরটি, পায়ে হেঁটে, কিন্তু শর্টকাট। যদিও তাঁদের চোখে লেগে থাকা "তোমাদের বয়সে" চাওনি পরিষ্কার বুঝিয়ে দিতো অপশন যতই দুটো দিন না কেনো, আমাদের হাঁটা-টাই তারা প্রেফার করবেন। </div><div><br></div><div>৩</div><div><br></div><div>আমরা কলকাতা এরকম করে চিনেছি। ধীরে ধীরে। নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে না হলেও, বছর ষোলো ধরে। কলেজস্ট্রিট এর পুরনো বই, উত্তর কলকাতার গলি থেকে লঞ্চঘাট, চাঁদনীর সস্তা ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম, লেনিন সরণির পুরনো গ্রামোফোন রেকর্ড, ধর্মতলার নিষিদ্ধ মাংসের কাবাব পরোটা কম্বো, চাঙওয়ার পর্দাঢাকা কেবিন, খিদিরপুর ফ্যান্সি মার্কেটের লজঝড়ে বিদেশিয়ানা, মেট্রোগলির বিল ছাড়া ক্যামেরা আর শ-ব্রাদার্স এর আদা ছোলা, পার্কস্ট্রিট মিউজিক ওয়ার্ল্ড আর ধর্মতলার সিমফনির ক্যাসেট থেকে সিডিতে উত্তরণ, মেডিক্যালের পাশের ফিনাইলের গন্ধ, ট্রামের টং টং, হলুদ ট্যাক্সির সামান্য বাবুয়ানা, এমব্যাসির সিংগিং বার, রাস্তার সস্তা টাটকা খাবার, সাবার্বানের ট্রেনের টাইমটেবিল, গ্র্যান্ডের ফুটপাথের সস্তা ঘড়ি আর টি-শার্টের শখপুরনে, ম্যাগাজিনের বৈচিত্র্যে, বইমেলার ধুলো, ময়দানি আড্ডা, আর অন্তহীন হেঁটে ঘুরে বেড়ানোয়। আরো অনেক কিছু, হ্যাঁ, তবে, আমাদের মত মফস্বলের পেটে খিদে মুখে লাজ ফুটো পকেট উঠতি কালচারসঙ্গমেচ্ছুরা নন্দন রবীন্দ্রসদন বা য়্যাকাডেমি অব্দি পৌঁছাতে পারতো না বললেই চলে।</div><div><br></div><div>৪</div><div><br></div><div>নিন্দুকেরা বলে থাকেন, প্রেম এমন একটি ওভাররেটেড কন্ট্রাক্ট রিলেশনশিপ, যার শুরু বাদী এবং বিবাদীপক্ষ করে এমন সব টেকনো-কমার্শিয়াল টার্মস দিয়ে যা দুপক্ষের কাছেই বেশ গ্রহণযোগ্য এবং আয়ত্ত্বের মধ্যে, বাকি কনফ্লিক্ট এর জায়গাগুলো থাকে ভদ্রতার মুখোশে চোরাগোপ্তা লুকিয়ে। কিন্তু বিধাতার অথবা প্রকৃতির রাজ্যের মূলে রয়েছে ডারউইনবাদ, যা বলে যোগ্যতমের লড়ে জিতবার কথা অথবা প্রতিকূল পরিস্থিতিতে বিবর্তন এর কথা। প্রেমিকযুগল প্রকৃতির নিয়মের চেয়ে সহজ টার্ফ-এ খেলতে নেমে লড়াই ভোলেন এবং শিকার হন হ্যালুসিনেশনের। অতএব প্রগাঢ় হয় প্রেম। আসে আরো একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত সত্যিকারের পারস্পেক্টিভ বিন্দুমাত্র বিবেচনা না করে। যথানিয়মে, ভুল ভাঙে, কিন্তু সে মুহূর্তে দু পক্ষই হারিয়েছে লড়ে নিজস্ব ব্যক্তিগত পরিসর তৈরির ক্ষমতা, অতএব পড়ে থাকে সন্দেহ ঘৃণা বিরক্তির মত ঋণাত্মক যুগ্ম কিছু মানসিক বোঝা, সারাজীবন বয়ে বেড়ানোর। কলকাতার সাথে আমার প্রেম সেরকমই ছিলো। বাইরে থেকে মোটা কালো চশমা বা নীল লুঙ্গির দরাজমনা লোকজনের বাইরে আরেকটা দুনিয়া ছিলো চোখেই পড়েনি তা। সেই দুনিয়ার লোকেরা খাঁটি অথচ ওভাররেটেড ভ্রান্ত রাজনীতির হাতে একসময় হারিয়েছে যৌবন। পরবর্তী সময়ে সেই রাজনীতির শাখা প্রশাখায় ঢুকে হারিয়েছে পথ। কেউ শুরুতে ভাগচাষী থেকে জমির মালিকানা হাতে পেয়ে শেষে জমিদার হতে গিয়ে খেয়েছে ঠোক্কর। কেউ চাকরি পেয়েছে, সালাম ঠুকেছে, তারপর আয়নার সামনে নিজের ভিখিরিপনা দেখতে পেয়ে নিজের মুখে থুতু দিয়েছে। কেউ পতাকা ধরে মালিকের শোষণ থেকে বাঁচবার পর কাজ করে নিজের কাজের জায়গাটাকে কাজ দিয়ে বাঁচিয়ে রাখার কর্তব্যটাই বেমালুম ভুলে গেছে। কেউ দু-আনার কলম বা মাইক বা ক্যামেরা ধরে সরকারপক্ষের ও প্রতিষ্ঠানের পিঠচাপড়ানি কুড়িয়েছে ঝুঁকে, কেউ কলম আর শিরদাঁড়া বাঁকাতে চাইনি বলে পড়ে থাকতে বাধ্য হয়েছে তৃতীয় শ্রেণীর শিল্পের অন্ধকার গর্তে পুঞ্জীভূত ঘৃণা বুকে ধরে। শাসকের মুখ বদল হয়েছে কিন্তু শাসনকাঠামোর রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে যাওয়া অহং আর ঔদ্ধত্য মৌরসিপাট্টা গেড়েছে।</div><div><br></div><div>৫</div><div><br></div><div>হচ্চিলো কথা প্রেমের। আমার ও কলকাতার প্রেম এতটাই জমাট বেঁধেছিলো যে আমি নবরত্ন কোম্পানির বেশ শাঁসালো চাকরি ছেড়ে কলকাতায় একটি তৃতীয় শ্রেণীর বিজনেস স্কুলে পড়বার ঝুঁকি নেই এই ভেবে যে পড়াশোনার শেষে কষ্ট করে হলেও আমার প্রিয়তমা শহরের বুকে থাকবার জায়গা মিলবে। সে লক্ষ্য পূরণ-ও হয়। কিন্তু সে হ্যালুসিনেশন ভাঙতে ছ-বছরের বেশি সময় লাগেনা। মোটামুটি মন, আত্মসম্মান ও আত্মনির্ভরতা-শূন্য হয়ে আমি আমার কলকাতাবাস দ্বিতীয়বার এবং সম্ভবতঃ শেষবার এর মতো সমাপ্ত করি। ইতিমধ্যে শাসক বদল হয়েছে। শাসক নির্বাচিত করবার হাত বা মন যেহেতু বদলায় নি, তাই পরিবর্তন এর নামে একটি অশ্বডিম্ব প্রসব হয়েছে। গ্রাম দিয়ে শহর ঘিরবার অলীক বিপলব থেকে সংসদীয় সমাজতন্ত্র নামক সোনার পাথরবাটি পেরিয়ে শেষপাতে এসেছেন বিপলবের আসল মা যার চেয়ার মুছতে গিয়ে বেতনভুক অকর্মা লুম্পেন, ভিখারি কবি অথবা সহি অতিবামপন্থী ছেলেরা কখনো ভিজিয়ে ফেলছে চোখ, কখনো কখনো রক্তে মাটি অথবা ঢেকে ফেলছে পোড়া ছাই এ শরীর। সময়ের সাথে সাথে বঙ্গনাট্যশালার অলীক কুনাট্যে বীতশ্রদ্ধ হয়ে মোটামুটি ভদ্রস্থ সন্তানেরা যেহেতু আজ তিরিশ বছর ধরে মাইগ্রেশন করে চলেছে, তার জায়গা নিয়ে চলেছে কোথাও যাবার ক্ষমতা ও গুণ না থাকা পেটি বুর্জোয়ারা। তারাও প্রেমে পড়ছে, কলকাতার, কিন্তু সেটা নিজের উপার্জনক্ষমতার বাইরে দাদা-দিদির ছুঁড়ে দেওয়া পয়সার অনুগ্রহে, কাজে ফাঁকি দেবার মোহে, সরকারি দয়াদক্ষিণ্যের হাতছানিতে। তাই পঞ্চাশবছর বাদেও কিছুতেই নামছে না নেমে আসার গ্রাফ। গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মত দুনিয়া জুড়ে অতি দক্ষিণপন্থী শক্তির বাড়াবাড়ি এসেছে, মড়ক এসেছে আর ভারতের পুরোনো বহু ক্ষতবিক্ষত ফেব্রিক এ নতুন করে রক্ত নিয়ে হোলি খেলতে নেমে এসেছে সঙ্ঘপরিবার ও তাদের মুখোশ, যাদের হাত প্রতিদিন আরো শক্ত হয়ে চলেছে।</div><div><br></div><div>৬</div><div><br></div><div>এ সলিলকির সাথে বিন্দুমাত্র সম্পর্ক নেই, তবুও ঘাড় ঝুঁকিয়ে মেনে নেবার ও রসাতলে যাবার গল্প যখন হচ্ছে - গত একত্রিশে মে, দুহাজার বাইশে, কলকাতায়, প্রখ্যাত গায়ক কেকে তার অনুষ্ঠান শেষ করে মারা যান। একটি মত বলছে, আড়াই হাজার মানুষের সভাগৃহে ছিলো আট-হাজারী ভিড়, যার দরুণ এসি বিকল হয় অথবা বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং গায়ক শারীরিক অস্বাচ্ছন্দ্য উপেক্ষা করে নিজেকে মৃত্যুর দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে বাধ্য হন। এই একই সর্বভারতীয় গায়ককে, বাংলার আরেক গায়ক ড়ুপঙ্কর (বানানভুল ইচ্ছাকৃত) তার আগেরদিনই তুচ্ছতাচ্ছিল্য করায় প্রাণঘাতী খাপ বসে, বাঙালি গায়ক জানান তিনি কেবলমাত্র বাংলা গানের পাশে থাকবার কথা বলতে গিয়ে, অর্থাৎ গুনগত মানের কথা না বলে একটি কোটারির ভিক্ষা করতে গিয়ে কাকতালীয়ভাবে ঘটি হারিয়ে ফেলেছেন। মজার কথা হোলো, একটু ভেবে দেখলে, আমার ব্যক্তিগত ধারণা, এই একই অপরাধ দিব্যি সংগঠিত ভাবে সংঘটিত হয়েছে বর্তমান সময়ে কোনোরকম উচ্চবাচ্য ছাড়াই। সরকার, য়্যাপট্যাক্সিচালক ও য়্যাপট্যাক্সিপারেটররা ত্রিমুখী বোঝাপড়ায় গত দুবছর ধরে শতকের সবথেকে কঠিন সময়ে দ্বিগুণ দরে তোলা আদায় করেছেন, সাধারণ মানুষকে অসহনীয় কষ্ট দিয়েছেন গাড়ির এসি বন্ধ রেখে, লাভ তুলেছেন ও ভোটব্যাংক এবং চাঁদা অক্ষুণ্ন রেখেছেন - আমার ধারণা বেশ কিছু লোক এই চক্করবাজিতে পটল-ও তুলেছেন, নেহাত গায়ক কেকে না হবার কারণে মৃত্যুপরবর্তী প্রচার পাননি এই যা। মোটকথা এই যে 'তোমাকে কাজ করতে দেব না' বা 'তোমার থেকে পয়সা নিয়ে মুখের ওপর বলবো পরিষেবা একটি মিথ অতএব যা পাচ্ছো তাই নিয়ে ঘর বাঁধো', এইটে বেশ হাড়ে মজ্জায় ঢুকে গেছে এই বাংলায়। শেষ দুটো টার্ম এর চন্দনের বাবা ব্যারিস্টার বসু থেকে অনুপ্রেরণাদাত্রী ঝপাংকবি, সবাই এই কালচার আনা, দুধ কলা ক্যাডার দিয়ে তাকে পোষা, ও তার বাড়বৃদ্ধিতে সাহায্য করেছেন এবং শেষমেশ সোনার ভোটের ফসল ঘরে তুলেছেন। মাঝখানে বুদ্ধদেব সামান্য বেগড়বাঁই করতে চেয়েছিলেন ডু-ইট-নাও বা শিল্প-টিল্পর মত অস্পৃশ্য শব্দ উচ্চারণ করে, কিন্তু তার নিজের ও দলের সুখের পায়রা কর্মীদের ঔদ্ধত্য সামলাতে না পেরে সমূলে উৎপাটিত হয়েছেন। </div><div><br></div><div>৭</div><div><br></div><div>এই এলোমেলো লেখা শুরু করেছিলাম কলকাতার বুকে একের পর এক হওয়া আত্মহত্যার নিরিখে। মনে হয়েছিল যে বাঙালি গত প্রায় তিরিশবছর ধরে দিব্যি খোশমেজাজে চপমুড়ি বিরিয়ানি প্যাঁদাতে প্যাঁদাতে সামাজিক আত্মহত্যা করে আসছে তার হঠাৎ দু-চারখানা জলজ্যান্ত আত্মহত্যাতে এত দুঃখ উথলে উঠছে কেনো। তারপরে খেয়াল করে দেখলাম ক্লিকবেট খবর দেখে বাঙালির মন বোঝার চেষ্টার বড় ভুল করে ফেলেছি, ব্যাপারটা অতটাও সিরিয়াস নয়। বাজারে যে মাছওলা কেজিতে পঞ্চাশটাকা বেশীতে সবথেকে খারাপ মাছটা বেচে আপনাকে, তার কারণ আপনি তার থেকে নিয়মিত জিনিস নেন - আপনার ব্যাংকের যে রিলেশনশিপ ম্যানেজারটি আপনার দুটো লোন করিয়ে দিয়ে নিজের টার্গেট ছোঁয়ার পর সেই লোন এর ইমোশনাল কুমিরছানা দেখিয়ে আপনাকে দুটো পয়সা জলে দেওয়া স্কিম করতে বাধ্য করে - আপনার বাসের যে কন্ডাক্টরটি সময় বাঁচানোর জন্য প্রায় চলন্ত বাস থেকে শিশু বৃদ্ধ মহিলাদের ঘাড় ধাক্কা দিয়ে নামিয়ে দেয় - যে বাঙালি ব্যবসায়ীটি আপনার সমস্ত ভরসার জলাঞ্জলি কেবলমাত্র নিজের আলস্য আর লোভের কারণে দিয়ে দিতে পারেন - বাড়ির পাশের যে বাঙালি ড্রাইভারটিকে আপনি দ্বিগুণ পয়সা দিয়ে ব্যবহার করেন ও সে আপনাকে সুযোগ পেলেই কাঁচকলা দেখায় ও বিভিন্ন অজুহাতে পয়সা আদায় করে - তারাও তো আত্মহত্যাই করে চলেছে। নিজের। নিজের পরবর্তী প্রজন্মের। নিজের মাটির। অতএব এ নিয়ে মনখারাপের বিলাসিতা মানায় না। অতএব, হে বাঙালি, আপনারা বাঁচুন, ম্যাক্সিম গোর্কির মাদারের সমতুল্য সারদার থুড়ি সততার প্রতীকের ঘাসফুলগাছের ছায়ায় বাঁচুন, দাঙ্গাবাজেদের হোয়াটসয়্যাপ ফরওয়ার্ডে হিন্দু মৌলবাদী হবার বা সাধারণ মানুষের অসুবিধেকে তুড়ি মেরে ভোটবাজদের সাম্প্রদায়িক তোষনের পাঠ নিতে নিতে বাঁচুন, 'মানুষ ভুল করে বুদ্ধিজীবীদের প্ররোচনায় আমাদের উৎখাত করেছিল, আমরা তো কোনো দোষ করিনি' মার্কা সিপিয়েমিয় ভ্রান্তিতে বাঁচুন। আমার মত কাপুরুষেরা হাল ছাড়ুক, যেমন ছেড়ে চলেছে, বা চলবে।</div><div><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;">
<a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgzcNFaxOMZ5FslW4pCx0NUKZe-o7SK2LrEuaA_dUoMVJlZDLcBTurNgPPc8tYmCIQI6kyYhT2I7lEo1trO-iA79Kkzl_AJTUM-NVmXq-rCz2rtxYEgzkqPlaignj7mClnWHvX3S4ZIg7I/s1600/1655223054054319-0.png" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;">
<img border="0" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgzcNFaxOMZ5FslW4pCx0NUKZe-o7SK2LrEuaA_dUoMVJlZDLcBTurNgPPc8tYmCIQI6kyYhT2I7lEo1trO-iA79Kkzl_AJTUM-NVmXq-rCz2rtxYEgzkqPlaignj7mClnWHvX3S4ZIg7I/s1600/1655223054054319-0.png" width="400">
</a>
</div><br></div>পলাতকhttp://www.blogger.com/profile/10815481700144344107noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-7304401938332507753.post-41922680360478018602021-11-20T04:23:00.001-08:002021-11-20T04:23:20.604-08:00টুকটাক ১<div>আজকের ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এ রয়েছে রোমানিয়া-নিবাসী ক্যাপ্টেন ড্যান স্যান্ডু'র কথা। চল্লিশ বছর সমুদ্রযাত্রার অভিজ্ঞতার পর এবছর এপ্রিল মাসে সম্ভবতঃ তার শিডিউল্ড শেষ ভয়েজ-এ ভারত-এর কোনো এক বন্দর থেকে মালবাহী জাহাজ ভ্যান্টেজ ওয়েভ-এ বেরোনোর আগে সামান্য অসুস্থতা বোধ করেন ক্যাপ্টেন স্যান্ডু। স্ত্রীকে চিঠিতে লেখেন "চিন্তা কোরো না", লেখেন "সমস্ত কিছু ঠিক হয়ে যাবে"। </div><div><br></div><div>ঠিক হয়নি। এপ্রিল মাসের 19 তারিখেই মারা যান ক্যাপ্টেন।</div><div><br></div><div>শেষ পর্যন্ত, অক্টোবর মাসে, যখন তেরো নাম্বার দেশ সংযুক্ত আরব আমিরশাহী, ক্যাপ্টেনকে বন্দর এ নামিয়ে রোমানিয়া-তে তার শবদেহ পাঠানোর অনুমতি দেয়, তখনো পর্যন্ত প্রায় ছমাস মৃত অবস্থায় নাবিকদের ফল-সব্জির ডিপ ফ্রিজার এ মরণোত্তর সমুদ্রযাত্রা হয়ে গেছে ক্যাপ্টেন স্যান্ডু'র। বারোটি দেশে কপালে জুটেছে প্রত্যাখ্যান।</div><div><br></div><div>"সভ্যতা"/"মনুষ্যত্ব" ইত্যাদি নিয়ে জনৈক মনমোহন মিত্র'র গল্প ছবিতে বলার প্রক্রিয়া যেদিন শেষ হয় সেট-এ, রায়সাহেব নাকি ডিক্লেয়ার করেছিলেন "ব্যস, আমি আমার যা বলার ছিলো বলে দিয়েছি" (আক্ষরিক সংলাপ নয়, এর কাছাকাছি)।</div><div><br></div><div>ক্যাপ্টেন স্যান্ডু'র কিছু বলার আছে? যেহেতু সংসার সমুদ্রে বয়সোচিত কারণে আজকের এই গল্প পড়ার পর থেকে মাঝে মাঝে ওনার সাথে একাত্মতা বোধ করার সম্ভাবনা থাকছে, কখনো দেখা হলে জিজ্ঞাসা করতে ভুলবো না। তবে তা আর সবাইকে বলবো কি করে জানি না।</div><div><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;">
<a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEg6NNZVJ7qhabtJgjZiOyqTgdChTdpHfzjp8UbTo9tHCLZXdjDTyqdRJjfnXHNqGbEw2vTSITrwbguUhPFwYbhsqIxDbCzbZd-Kb9kq-S5jJv806hzTsZETzsPvP17M4KbzL_8VJwlAiRs/s1600/1637410993675775-0.png" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;">
<img border="0" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEg6NNZVJ7qhabtJgjZiOyqTgdChTdpHfzjp8UbTo9tHCLZXdjDTyqdRJjfnXHNqGbEw2vTSITrwbguUhPFwYbhsqIxDbCzbZd-Kb9kq-S5jJv806hzTsZETzsPvP17M4KbzL_8VJwlAiRs/s1600/1637410993675775-0.png" width="400">
</a>
</div><br></div>পলাতকhttp://www.blogger.com/profile/10815481700144344107noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-7304401938332507753.post-90693944752994683472021-11-09T08:02:00.001-08:002021-11-09T08:02:08.662-08:00ছেঁড়া-খোঁড়া ১<div>## "খাও হে চক্কত্তি"</div><div><br></div><div>'অগ্রদানী'র সেই ভয়াল-ভয়ংকর লাইনটা মাথায় সারাজীবন বিভিন্ন বৈচিত্র্যে বেজে এসেছে। যেমন করে 'নবীগঞ্জের দৈত্য'র দুঃখহরণ মাস্টার-এর মাথায় পড়তো অদৃশ্য হাতের গাঁট্টা আর উপদেশ, সেরকম-ই খানিকটা। কখনো নিশ্চিত আরাম ছেড়ে চরম অনিশ্চয়তার দিকে "এগোও হে"। কখনো ভেঙ্গে পড়বার পরে "তুমি তো কর্তব্যটা করেছ হে"। এরকম অনেক কিছু। </div><div><br></div><div>এখন কি বাজছে? যতদূর শুনতে পাচ্ছি "এবার নীরব করে দাও হে"।</div><div><br></div><div>## "বাড়ি কোথায়? / আমার কোনো দ্যাশ নাই"</div><div><br></div><div>মৌসুমী ভৌমিক অনেকদিনের আত্মার আরাম। কিন্তু তার একটা গান, কান এড়িয়ে গেছিলো এই কিছুদিন আগে পর্যন্তও। তারপর একদিন, ইউটিউবের কানাগলি থেকে আবিষ্কৃত হল সেই গান:</div><div><br></div><div>"সবুজ সংকেতে</div><div>রাস্তা এপার ওপার করার সময়</div><div>পথের কোণে </div><div>সেদিন দুটো পড়ে থাকা শব্দ পেলাম</div><div>'বাড়ি কোথায়'?</div><div>সেই থেকে আমার সঙ্গে </div><div>ছায়ার মত ঘুরছে ফিরছে </div><div>মাথার মধ্যে, পদ্যে গদ্যে</div><div>গানের ছন্দে, হাওয়ার গন্ধে</div><div>'বাড়ি কোথায়'?"</div><div><br></div><div>সেই থেকে উত্তর খোঁজা চলছে। আংটি চাটুজ্জ্যের ভাই কখনো ফিরতে চাইলে ফিরবে কোথায়, এক্কেবারে শেষ বারের মতো হারিয়ে যাবার আগে? </div><div>ঋত্বিক নিশ্চই জানতেন শুধু কাঁটাতার পেরোনো মানুষই 'দ্যাশ' খোঁজে না। </div><div><br></div><div>## "সে ডাকে আমারে, বিনা সে সখারে, রহিতে মন নারে"</div><div><br></div><div>ঔদাসীন্য, নাস্তিকতার ধাপ পেরিয়ে অজ্ঞেয়বাদ এর দরজায় কড়া নাড়া, যা ধীরে ধীরে অদ্বৈতবাদ ছুঁতে আনাড়ি চেষ্টা করছে, তা কি নিতান্তই মানসিক অক্ষমতার একটা ম্যানিফেস্টেশন? </div><div><br></div><div>উত্তরে বার্গম্যান এর সেভেন্থ সিল এ যুদ্ধফেরত নাইট ম্যাক্স ভন সিডো ও তার পার্শ্বচর গুন্নার জর্নস্ট্যান্ড এর মধ্যের কথাবার্তার ফ্রেমটা পড়ে থাকে শুধু।</div><div><br></div><div><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;">
<a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjYXrbTS06PRE5zuJoz0d5AM2feSpoa6x6qPeJGdNncT7eIWSy4QNDxfbJIxpLxk1faFsOuNwke3lQea7AAF38CLfsAN4iCw1brOqli2GRrc-WPnAYLyYPnbkTn1xJwnoOBBEnbgiJRI80/s1600/1636473723039457-0.png" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;">
<img border="0" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjYXrbTS06PRE5zuJoz0d5AM2feSpoa6x6qPeJGdNncT7eIWSy4QNDxfbJIxpLxk1faFsOuNwke3lQea7AAF38CLfsAN4iCw1brOqli2GRrc-WPnAYLyYPnbkTn1xJwnoOBBEnbgiJRI80/s1600/1636473723039457-0.png" width="400">
</a>
</div><br></div>পলাতকhttp://www.blogger.com/profile/10815481700144344107noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-7304401938332507753.post-66946065539740551052021-01-08T22:28:00.001-08:002021-01-08T22:28:13.003-08:00চল্লিশ পেরোলেই!<div>চল্লিশ পেরোলো? কিছুটা নিজের জন্য বাঁচা শুরু করেছেন তো?</div><div>গ্রীক পুরাণের য়্যাটলাস এর মত পৃথিবীর বোঝা আপনার ঘাড়ে নেই</div><div>এমনকি আপনার কর্মস্থল-ও দিব্যি চলতে পারে আপনাকে ছেড়ে দু একটা ঝাঁকুনি দিয়ে</div><div>বাজারে যে লোকটার থেকে সবজি নেন</div><div>তার দিকে দাম বেশি নেবার সন্দেহের দৃষ্টি ছাড়া অন্যভাবে তাকিয়েছেন কখনো?</div><div>দু একটা সুখ দুঃখের গল্প করে আর দরাদরি না করে ফেরত এসেছেন?</div><div>মাসের শেষে ময়লা ফেলবার লোকের হাতে দু-দশটাকা বেশি দিয়ে দেখেছেন?</div><div>যে বৃদ্ধ প্রতিবেশী আপনাকে তার সাতপুরোনো গল্প বারবার বলে এসেছেন, প্রশ্রয় দিয়েছেন তাকে?</div><div>এই ভেবে, যে প্রত্যেকবার বলবার সময় যে খুশিটা তার মুখে ঝিলিক দিচ্ছে সেটা অমূল্য!</div><div>লোকের ভুলকে চোখে আঙুল দেখিয়ে দেওয়া বন্ধ করেছেন?</div><div>বুঝতে পেরেছেন যে ভগবান তার দুনিয়ার ভুল সাফ করবার ইজারা দিয়ে পাঠাননি আপনাকে?</div><div>বয়সে ছোটদের দরকারের থেকে একটু বেশিই উৎসাহ আর প্রশংসা গলা তুলে দিতে পারছেন?</div><div>চুল না আঁচড়ে বা একটু সাধারণ জামাকাপড়ে বাইরে যেতে লজ্জা একটু কমেছে?</div><div>যে লোক আপনাকে তাচ্ছিল্য আর সন্দেহ করে এসেছে তাকে মন থেকে বিদায় দিয়েছেন?</div><div>হাজার হোক, যে আপনার মূল্য দেয়নি, তাকে দরকারের বেশি সময় দেওয়ার দরকার বোধহয় নেই!</div><div>এই বয়সে এসে নিজের মূল্য বোধহয় আপনি জানেন।</div><div>কর্মক্ষেত্রে ইঁদুরদৌড়ে বিরক্ত না হয়ে মজা পেতে শুরু করেছেন?</div><div>এটা ভেবে, যে আপনি অন্ততঃ ইঁদুর নন!</div><div>নিজের ভালোলাগা নিয়ে থাকতে আর কথা বলতে লজ্জাটা অবশ্যই ঝেড়ে ফেলেছেন আশাকরি?</div><div><br></div><div>ঠিক আজকের দিনটাই আপনার শেষ দিন হতে পারে</div><div>'হতে পারে' শেষ দিনটা নিজেকে খুশি করে, নিজের মতো বাঁচছেন তো?</div><div><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;">
<a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhct1EV8wXyzkhXyuyGZ1KhKtUX1nGLI4Ma8GoyAAthd-qGk-vDX6arVXOiX2w8Bf8_v9VpXh7iUdaJQFWdezF_k2YV2W9ma2bYBHRQD9E3NzLVVr5gSXEbk7IB2vIfC8j2CYCUssVECGI/s1600/1610173688213710-0.png" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;">
<img border="0" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhct1EV8wXyzkhXyuyGZ1KhKtUX1nGLI4Ma8GoyAAthd-qGk-vDX6arVXOiX2w8Bf8_v9VpXh7iUdaJQFWdezF_k2YV2W9ma2bYBHRQD9E3NzLVVr5gSXEbk7IB2vIfC8j2CYCUssVECGI/s1600/1610173688213710-0.png" width="400">
</a>
</div><br></div>পলাতকhttp://www.blogger.com/profile/10815481700144344107noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-7304401938332507753.post-25453348532300527442020-10-31T10:02:00.001-07:002020-10-31T10:02:30.820-07:00সত্যজিৎ ১০০ (১)<div>#সত্যজিৎ_১০০ (১)</div><div><br></div><div>গপ্পো। ডেভিড ও. সেলজেনিক। আমেরিকান প্রডিউসার। গন উইদ দ্য উইন্ড, রেবেকা, স্পেলবাউন্ড। বদভ্যাস। ডিরেক্টরদের নোট পাঠান যখনতখন, তাদের কাজ এর দিকনির্দেশ করে। পথের পাঁচালির জাদুতে বিমোহিত হয়ে সত্যজিৎ-কে ডেকে পাঠালেন বার্গম্যান এর হাতে পুরস্কার তুলে দেবার অছিলায়, আসল উদ্দেশ্য পরিচালকের সাথে কাজ করার। ওদিকে এই বিষয়ে রায়বাবুর মানসিকতা তাঁর শুরুর জীবনে প্রভাববিস্তার করা জঁ রেনোয়ার কাছাকাছি। স্বতঃস্ফূর্ততার বিপরীতে হেঁটে, হলিউডের ছবিতে আলো-শব্দ থেকে শুরু করে পরিচালক এর দক্ষতা অব্দি একাধিকবার যাচাই করে নেবার প্রথার তীব্র বিরোধী তিনি। সেলজেনিক এর প্রস্তাব এল অচিরেই, সত্যজিৎ জানালেন তার অপছন্দ। সেলজেনিক বললেন তিনি সত্যজিৎ এর খাতিরে ভুলে যেতে চান তার অভ্যাস। সেক্ষেত্রে তিনিও রাজি, জানান সত্যজিৎ।</div><div><br></div><div>পুরস্কারপ্রদানের রাত্রের সন্ধ্যায় সত্যজিৎ হোটেলের ঘরে ঢুকেই দেখেন সেলজেনিকের নোট। পুরস্কার দেবার সময় ছ-সাতমিনিট কি বলতে হবে তার নির্দেশ, না বদলানোই ভালো ঠারেঠোরে এটা বুঝিয়ে দেবার সাথে।</div><div><br></div><div>সত্যজিৎ নিজের কথাই বললেন।</div><div><br></div><div>অবশ্যম্ভাবী, যুগ্ম উদ্যোগটাও অঙ্কুরে বিনষ্ট হলো।</div><div><br></div><div>---------------</div><div><br></div><div>বই: অদ্বিতীয় সত্যজিৎ</div><div>লেখক: মঞ্জিল সেন (সম্পাদনা ও টীকা: স্যমন্তক চট্টোপাধ্যায়)</div><div>প্রকাশক: বুকফার্ম (ই বুক আছে, সুইফটবুকস য়্যাপে পড়েছি আমি)</div><div>খুব ভালো: বংশপরিচয় ও ছোটবেলার গল্প, সহজ গদ্য, সমস্তকিছু ছুঁয়ে যাওয়া।</div><div>আর একটু ভালো হতে পারতো: দেবতা বানাবার চেষ্টা না করা (রবীন্দ্রনাথ 'ঠাকুর' হয়ে রিডিংলিস্ট থেকে অন্তর্হিত হয়েছেন), জাম্প কাটের মত বিষয় পরিবর্তন এড়ানো।</div><div><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;">
<a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEizntn9UdQiLKMV0rIvtVEbrcq2fozzqt0sYndyzwYhrYgo-wt7jbvlK4zZZyxWtkAo9-PW3MdOMMmEZ74lzCKUHrUN_bGg1cw9-YQG2_mYIjbQCqBO8UqC2QSdR7lVfxvoQcYJQceUS1w/s1600/1604163746421701-0.png" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;">
<img border="0" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEizntn9UdQiLKMV0rIvtVEbrcq2fozzqt0sYndyzwYhrYgo-wt7jbvlK4zZZyxWtkAo9-PW3MdOMMmEZ74lzCKUHrUN_bGg1cw9-YQG2_mYIjbQCqBO8UqC2QSdR7lVfxvoQcYJQceUS1w/s1600/1604163746421701-0.png" width="400">
</a>
</div><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;">
<a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjlvQGIDAcJ7ino_jYTYntK_pUYqFfCd4AGDSTo5qphAl40XRG4kRR-M7tAKkm6q9KUSuxX-qoRAJJ4L7XkgFpAtxvwJvo6l9PaKAIhj8TdqCb_6X4Jyqc7ycOv1fysZAx_1MKM_0pVZjk/s1600/1604163741345125-1.png" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;">
<img border="0" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjlvQGIDAcJ7ino_jYTYntK_pUYqFfCd4AGDSTo5qphAl40XRG4kRR-M7tAKkm6q9KUSuxX-qoRAJJ4L7XkgFpAtxvwJvo6l9PaKAIhj8TdqCb_6X4Jyqc7ycOv1fysZAx_1MKM_0pVZjk/s1600/1604163741345125-1.png" width="400">
</a>
</div><br></div>পলাতকhttp://www.blogger.com/profile/10815481700144344107noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-7304401938332507753.post-28720642933328440902020-08-29T07:49:00.001-07:002020-08-29T07:49:51.870-07:00মারিও দি আন্দ্রেদ এর কবিতা<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;">
<a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEigc2CZUXCbC91Od3HdlRopZGmWpx2M7Jt2wKo-qSyAkL6y-MTfTJVWZHVdy5wRCqlVCTb0AVvyIUOeUdNHvllVRQOSa9X1zO8mQUlNX1lAfr2QO_c4hKOe4Z6UH35JLI8dPsJsfrc8tvU/s1600/1598712583460240-0.png" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;">
<img border="0" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEigc2CZUXCbC91Od3HdlRopZGmWpx2M7Jt2wKo-qSyAkL6y-MTfTJVWZHVdy5wRCqlVCTb0AVvyIUOeUdNHvllVRQOSa9X1zO8mQUlNX1lAfr2QO_c4hKOe4Z6UH35JLI8dPsJsfrc8tvU/s1600/1598712583460240-0.png" width="400">
</a>
</div><div>(সকালবেলায় প্রিয় চিত্রপরিচালক অতনু ঘোষ এর ফেসবুক দেওয়ালে মারিও দি আন্দ্রেদ নামে এক ব্রাজিলিয়ান কবি'র লেখা এই কবিতাটা দেখেছিলাম। এটা তার অক্ষম গদ্য ভাবানুবাদ)</div><div><br></div><div>~</div><div><br></div><div>বছর ঘুরতে ঘুরতে যখন হিসেব কষতে বসলাম</div><div>আর দেখলাম বেঁচে থাকার জন্য সামান্য কিছু সময়ই হাতে আছে</div><div>অন্ততঃ যে সময় পেছনে পেছনে ফেলে এসেছি তার সাথে তুলনা করলে।</div><div><br></div><div>নিজেকে সেই ছেলেটার মত লাগলো যে একটা চকলেটের বাক্স হাতে পেয়েছিলো</div><div>শুরুতে সে সেগুলো একটার পর একটা মুখে ভরছিলো খুশিতে</div><div>তারপর যখন তার খেয়াল গেলো শেষ হয়ে আসা বাক্সটার দিকে</div><div>তখন সে তাড়াহুড়ো ভুলে একটা একটা'র স্বাদ তারিয়ে তারিয়ে নিতে শুরু করল।</div><div><br></div><div>এই মুহূর্তে অনিচ্ছায় সময় দিতে হচ্ছে অগণিত মেলামেশাকে, </div><div>যেখানে কেবল নিয়ম, পদ্ধতি, আইন-ই আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠে</div><div>কোনো কিছুই বাস্তবে পাওয়া যাবে না তা জেনেও।</div><div><br></div><div>ধৈর্য্য হারিয়ে ফেলেছি সেই মানুষগুলোর জন্য</div><div>যারা তাদের বয়সের সাথে সমানুপাতে বেড়ে ওঠে নি।</div><div><br></div><div>আমার সময় খুবই অল্প</div><div>তাই খুব কম সময়ে পেতে চাইছি জীবনের সারবস্তুগুলোকে</div><div>আমার বাক্সে আর সামান্য কটা চকলেট পড়ে আছে।</div><div><br></div><div>এইসময় সেই লোকগুলোকেই পাশে পেতে ইচ্ছা করে</div><div>যারা তাদের ভুলগুলোকে অট্টহাস্যে জোর গলায় স্বীকার করে নিতে পারে</div><div>যারা তাদের কৃতিত্বের হাওয়ায় ফুলে ফেঁপে ওঠে না</div><div>যারা তাদের প্রত্যেকটা কাজের সম্পূর্ণ দায়িত্ব নেয়</div><div>অর্থাৎ যে সমস্ত লোকেরা সভ্যসমাজ এবং তার অস্তিত্ব সত্য ও সততার সাথে আজও বজায় রেখেছে।</div><div><br></div><div>কেবলমাত্র অত্যাবশ্যক জিনিসই জীবনকে সমৃদ্ধ করতে পারে</div><div>কাজেই আমি শুধুমাত্র তাদের সাথেই বাকি সময়টা কাটাতে চাই</div><div>যারা তাদের সুন্দর হৃদয় দিয়ে তাদের হৃদয় স্পর্শ করতে পারবে যারা অপেক্ষাকৃত কঠোর জীবনপর্বে বেড়ে উঠেছে।</div><div><br></div><div>হ্যাঁ, আমি খুব তাড়াহুড়োয় আছি</div><div>আমি তাড়াহুড়োয় আছি জীবনকে সেই গভীরতায় বাঁচবার জন্য যা কেবলমাত্র এই অভিজ্ঞ বয়স আমাকে দিতে পারে</div><div>আমার চকলেটের বাক্সের শেষ কয়েকটা চকলেটকে আমি হেলাফেলায় শেষ করতে চাই না।</div><div><br></div><div>এই শেষ চকলেটগুলোর স্বাদ হবে অবর্ণনীয়</div><div>যেগুলো শেষ করে ফেলেছি তার থেকে অনেক বেশি আকর্ষণীয়</div><div>আমি আমার শেষের সময়ে একটা পরিষ্কার বিবেকের সাথে শান্তি আর পরিতুষ্টি নিয়ে পৌঁছাতে চাই।</div><div><br></div><div>আমাদের দুটো জীবন</div><div>আর দ্বিতীয়টা ঠিক তখন শুরু হয় যেদিন আমরা জানতে পারি আসলে জীবন একটাই।</div><div><br></div>পলাতকhttp://www.blogger.com/profile/10815481700144344107noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-7304401938332507753.post-62935695786527043762020-08-28T07:48:00.001-07:002020-08-29T07:51:35.293-07:00সব ইয়াদ রাখখা জায়গা / আমির আজিজ<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;">
<a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjYslBdtDmF-7CiI3sugV_9_s5tbAv-rDmeDxP9cKEd80IFA_q-jEuO1dNsr1s4yW5yhWt4wjbofh0ai8Ww6cSjhJ0MLrsMIIHtGDdwsutOtobuGxta-eA3BSEPNvK9_-IWpG5ffHZT_zU/s1600/1598712685932000-0.png" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;">
<img border="0" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjYslBdtDmF-7CiI3sugV_9_s5tbAv-rDmeDxP9cKEd80IFA_q-jEuO1dNsr1s4yW5yhWt4wjbofh0ai8Ww6cSjhJ0MLrsMIIHtGDdwsutOtobuGxta-eA3BSEPNvK9_-IWpG5ffHZT_zU/s1600/1598712685932000-0.png" width="400">
</a>
</div><div>(অক্ষম ভাবানুবাদ, পৃথিবীর সমস্ত ফ্যাসিস্ট শাসকদের জন্য)</div><div><br></div><div>~</div><div><br></div><div>তুমি যখন বলবে রাত, আমি লিখবো চাঁদ</div><div>তুমি কারাপ্রাচীরের মধ্যে ঠেলবে, </div><div>আমি তার কাঁটাতারওয়ালা দেওয়ালে বিচার লিখবো</div><div>তোমার সাজানো এফ আই আর এর জবাবে, আমি গাইবো 'আমরা করবো জয়'</div><div>তুমি খুন করবে আর আমি তার প্রমাণ লিখে যাবো দেওয়ালে দেওয়ালে।</div><div><br></div><div>তুমি আদালতকে বন্ধু বানিয়ে হাসিঠাট্টা করবে আমাকে নিয়ে</div><div>আমরা পথে ঘাটে দেওয়ালে বিধাতার রায় লিখবো</div><div>বধিরের কানে পৌঁছে যাওয়া পর্যন্ত ইনসাফ এর আওয়াজ তুলবো।</div><div><br></div><div>আমাদের লেখায় সত্যের ছটা অন্ধের চোখেও আলো এনে দেবে</div><div>তোমার কালো পদ্মের জবাবে আমরা লাল গোলাপ ফোটাবো</div><div>তুমি যতই আমার জমিতে অত্যাচার এর ফসল বুনবে</div><div>আমার আকাশ আমরা বিপ্লব এর কবিতায় ভরে দেব।</div><div><br></div><div>সব মনে রাখবো আমরা, সমস্ত কিছু মনে রাখবো আমরা</div><div>তোমাদের লাঠির আঘাতে বা বন্দুকের নলে</div><div>আমাদের যে বন্ধুরা চিরকালের জন্য হারিয়ে গেছে</div><div>তাদের স্মৃতি আমাদের ভাঙা হৃদয় এ যত্নে রেখে দেব আমরা।</div><div><br></div><div>সব মনে রাখবো আমরা, সমস্ত কিছু মনে রাখবো আমরা</div><div>তোমরা যখন ছাপার কালিতে মিথ্যের ইতিহাস লিখবে</div><div>আমরা তখন আমাদের রক্তের লেখায় ভবিষ্যৎকে একদিন সত্যি শোনাবার জন্য তৈরি হব।</div><div><br></div><div>সব মনে রাখবো আমরা, সমস্ত কিছু মনে রাখবো আমরা।</div><div><br></div><div>আমাদের মোবাইল টেলিফোন ইন্টারনেট বন্ধ করে</div><div>অন্ধকার সময়ে সারা শহরকে নজরবন্দি করে</div><div>আমার ছোট্ট ঘরে মারণ হাতিয়ার নিয়ে ঢুকে আসবে যখন আমার জীবনকে শেষ করতে</div><div>আমার সন্তানকে ঘিরে মাঝরাস্তায় মারণলীলা চালিয়ে</div><div>যখন মুচকি হেসে তুমি আমায় উদ্ধার করতে হাত বাড়িয়ে দেবে</div><div>তখন সব মনে রাখবো আমরা, সমস্ত কিছু মনে রাখবো আমরা।</div><div><br></div><div>দিনের বেলা যখন মিষ্টি কথায় আমাদের ভোলাবে</div><div>যখন ঝুটো বাগ্মিতার জাদুতে বোঝাবে সবকিছু ঠিক চলছে</div><div>অথচ রাতের অন্ধকারে প্রতিবাদীর গায়ে তুলবে লাঠি</div><div>আমার ওপর গুলি চালিয়ে আমাকেই বানাবে সন্ত্রাসবাদী</div><div>তখন সব মনে রাখবো আমরা, সমস্ত কিছু মনে রাখবো আমরা।</div><div><br></div><div>আমার অস্থিমজ্জায় লিখে রাখবো আমি এই হানাদারির কাহিনী</div><div>যখন তুমি আমার পরিচয় এর নথি চাইবে</div><div>আমি আমার অস্তিত্বর প্রমাণ অবশ্যই রেখে যাব</div><div>এই যুদ্ধ চলবে আমার শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত্য</div><div>সমস্ত কিছু মনে রাখবো আমরা।</div><div><br></div><div>একথাও মনে রাখা হবে কেমনভাবে তুমি ভাঙতে চেয়েছিলে আমার প্রাণাধিক প্রিয় দেশ</div><div>আমাদের দেশকে জুড়ে রাখবার লড়াই মনে রাখবো আমরা</div><div>যখনই কাপুরুষতার প্রসঙ্গ উঠবে ভবিষ্যতে, তোমাদের উদাহরণ মনে রাখবো আমরা।</div><div><br></div><div>আর যখনই কথা উঠবে জীবনের</div><div>আমাদের নাম উচ্চারিত হবে চিরদিন</div><div>যাদের মজবুত মনকে বিভেদের হাতুড়ি দিয়েও ভাঙা যায় নি</div><div>যাদের বিবেককে তোমাদের মতো পয়সা দিয়েও কেনা যায় নি।</div><div><br></div><div>কিছু লোক যারা ঝড়ের মুখেও মাথা নোয়ায় নি</div><div>কিছু লোক যারা মারা যাওয়া পর্যন্ত জীবন্মৃতের পর্যায়ে গণ্য হয়নি।</div><div><br></div><div>তোমার চোখ হয়তো পলক ফেলতে ভুলতে পারে</div><div>পৃথিবীও হঠাৎ আহ্নিকগতি ভুলে দাঁড়িয়ে পড়তে পারে তার অক্ষে</div><div>কিন্তু আমাদের স্বাধীনতা ছিনিয়ে নেবার এই প্রচেষ্টা</div><div>আমাদের প্রতিবাদী কন্ঠস্বর-কে দাবিয়ে রাখবার এই ষড়যন্ত্র</div><div>সমস্ত কিছু মনে রাখবো আমরা।</div><div><br></div><div>তুমি যখন বলবে রাত, আমি লিখবো চাঁদ</div><div>তুমি কারাপ্রাচীরের মধ্যে ঠেলবে, আমি তার কাঁটাতারওয়ালা দেওয়ালে বিচার লিখবো</div><div>তোমার সাজানো এফ আই আর এর জবাবে, আমি গাইবো 'আমরা করবো জয়'</div><div>তুমি খুন করবে আর আমি তার প্রমাণ লিখে যাবো দেওয়ালে দেওয়ালে।</div><div><br></div><div>তোমার আঘাতে মৃত্যুর পর আমার আত্মা লিখবে</div><div>তোমার হননের সমস্ত প্রমাণ লিখবে</div><div>তুমি আদালতকে বন্ধু বানিয়ে হাসিঠাট্টা করবে আমাকে নিয়ে</div><div>আমরা পথে ঘাটে দেওয়ালে বিধাতার রায় লিখবো</div><div>বধিরের কানে পৌঁছে যাওয়া পর্যন্ত ইনসাফ এর আওয়াজ তুলবো।</div><div><br></div><div>তোমার কালো পদ্মের জবাবে আমরা লাল গোলাপ ফোটাবো</div><div>তুমি যতই আমার জমিতে অত্যাচার এর গদ্য লিখবে</div><div>আমরা আকাশ বিপলব এর কবিতায় ভরে দেব</div><div>আমাদের লেখায় সত্যের ছটা অন্ধের চোখেও আলো এনে দেবে।</div><div><br></div><div>যাতে তোমাদের নামে ঘৃণার নামকরণ হয় ভবিষ্যতে</div><div>যাতে তোমাদের নামে কালো কালিতে লেখা হয় ইতিহাস</div><div>তোমাদের নাম, তোমাদের কীর্তি, কিছুই ভোলা হবে না</div><div>সমস্ত কিছু মনে রাখা হবে।</div><div><br></div><div>😶</div>পলাতকhttp://www.blogger.com/profile/10815481700144344107noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-7304401938332507753.post-60065351987108319162020-05-19T01:32:00.001-07:002020-05-19T01:35:22.134-07:00ভবেশবাবুর ভুল<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;">
<a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEiwo29hI4dIEfEIQdfStjzT7b4njSY7vKHDgA0jpLPLA1WVDlYjJsDq8NlBmK0Zg16EI_wtklNr7S8kqReKywxNoASPe_DN4cpRqn7pjIEuYftEnpIA0Jv4YaANV_oYyhwzkKLP1kvrnAs/s1600/1589877314621078-0.png" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;">
<img border="0" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEiwo29hI4dIEfEIQdfStjzT7b4njSY7vKHDgA0jpLPLA1WVDlYjJsDq8NlBmK0Zg16EI_wtklNr7S8kqReKywxNoASPe_DN4cpRqn7pjIEuYftEnpIA0Jv4YaANV_oYyhwzkKLP1kvrnAs/s1600/1589877314621078-0.png" width="400">
</a>
</div><p dir="ltr">করোনা-সন্ত্রস্ত পশ্চিমবঙ্গের একটি প্ৰ(!)খ্যাত বেসরকারি হসপিটাল। করোনা আবহে এবং সম্ভবতঃ স্টাফবিহীনতায় এন 95 মাস্ক এর থেকেও বেশি স্ক্রিনিং এর পর রোগীকে ভেতরে যেতে দেওয়া হচ্ছে। প্রথমে ভিডিও কল-এ রোগীর আত্মীয়কে সহস্রাধিক প্রশ্ন করা হচ্ছে, লজিক্যাল রিজনিং থেকে জেনারেল য়্যাওয়ারনেস প্রায় সবকিছুই থাকছে সেই বিচিত্র প্রশ্নবিচিত্রায়। দশজনের দুজন রোগী এই প্রশ্নের ধাক্কায় বিদায় নিচ্ছেন। ও, তারও আগে, এই ভিডিও কল এর লাইন এ দাঁড়িয়ে ওপারে কাউকে না পেয়ে বিদায় নিচ্ছেন প্রায় মরে যাওয়া, হাত পা ভাঙ্গায় আর্তনাদ-রত রোগীরা, সেটিও দশটির মধ্যে দুটি। ভিডিও কলের পর রোগী খোলা আকাশের নিচে স্ট্রেচার বা হুইল চেয়ার এ বসে অপেক্ষা করছেন ভেতরের অথবা পরপারের ডাক আসার, এই শবরীর প্রতীক্ষায় বিদায় নিচ্ছেন আরো দুজন।বাকি চারজনকে খপ করে ধরে ঝপ করে ভেতরে ঢুকিয়ে নেওয়া হচ্ছে এবং তাতে কোনো বাড়ির লোককে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। এরপর শুরু হচ্ছে বাড়ির লোকের অন্তহীন প্রতীক্ষা, যার সময় গড়ে তিন থেকে পাঁচ ঘণ্টা। প্রায় জনা পঞ্চাশেক বাড়ির লোকের জন্য খোলা আকাশের নিচে চারটি চেয়ার ছেলেবেলার মিউজিক্যাল চেয়ার এর রোমাঞ্চ ফিরিয়ে দিচ্ছে। এই প্রতীক্ষার অবসানে, ভেতরে একজন আত্মীয়কে ডেকে নেবার পর কোয়ার্টার বা হাফ-মৃতদের হস্তান্তর করে পরের দিন ওপিডি দেখাবার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এর মাঝে রোগীকে ভর্তি করা হবে ধরে নিয়ে সাতদিনের ওষুধ কিনে জমা দিতে হচ্ছে, এবং তারপর রোগীকে ছেড়ে দিয়ে সেই ওষুধ কালগর্ভে বিলীন হতে দেখা যাচ্ছে, কিন্তু সে সব 'সামান্য ঘটনা' থাক বরং।</p>
<p dir="ltr">এই রণক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে, থুড়ি, হুইলচেয়ার এ বসে, রনেন মন্ডল ও ভবেশ মাঝি, দুজনেই পূর্ববর্ণিত দুটি রাউন্ড (ভিডিও কল এবং পার্সোনাল ইন্টারভিউ) ক্লিয়ার করেছেন বলে অসুস্থতার মধ্যেও সামান্য খুশি নিয়ে বসে ছিলেন ঘন্টা দুয়েক। এর মাঝেই উশখুশ শুরু করেন দুজনেই এবং দু ঘন্টা পেরনোর পর মৃদু বাপ-বাপান্তও। এরপর ভেতর থেকে বেরিয়ে আসেন এক দেব-দূতিকা য়্যাটেন্ডেন্ট, থার্মাল স্ক্যানার এর গয়না ধরে।</p>
<p dir="ltr">"রনেন মন্ডল কে?" জিজ্ঞাসা তাঁর।</p>
<p dir="ltr">অরিজিনাল রনেন মন্ডল গত দুঘন্টা ধরে প্রচুর উষ্মা জানিয়ে বউ এর হাতে দুটি বিস্কুট ও একঢোক জল খেয়ে হুইলচেয়ার এ ঝিমোচ্ছিলেন, এই ডাক শুনতে পাননি।</p>
<p dir="ltr">ভবেশ বাবু ড্রেনের পাশে জঙ্গলের ধারে বসবার জন্যেই বোধহয় মশা তাড়াতে তাড়াতে বেশ সজাগ ছিলেন। এই সুযোগে তিনি দিলেন হাত তুলে, যেমতি হস্ত উত্থান করে নার্সারি বালকে, দিদিমনির রোলকলে।</p>
<p dir="ltr">য়্যাটেন্ডেন্ট সেই দেখে খাতা নিয়ে এলেন ভবেশ বাবুর কাছে। জিজ্ঞাসা করলেন, "আপনিই রনেন মন্ডল, আপনারই ডায়ালিসিস তো?"</p>
<p dir="ltr">ভবেশবাবু থমকে গেলেন। এদিকে রনেন বাবুর স্ত্রী, যিনি ষাটোর্ধ্ব এবং গত দুঘন্টা ধরে দাঁড়িয়ে ছিলেন, তিনি এই ঘটনাপ্রবাহের আশেপাশে এসে পড়েন। তিনি 'ডায়ালিসিস' শব্দবন্ধ শুনেই আরো সজাগ হয়ে বলেন "আমার পেশেন্ট এরও ডায়ালিসিস ছিল যে? অনেকক্ষন দাঁড়িয়ে আমরা!"</p>
<p dir="ltr">য়্যাটেন্ডেন্ট জিজ্ঞাসা করেন "কি নাম আপনার পেশেন্ট এর"?</p>
<p dir="ltr">রনেন বাবুর স্ত্রী নাম বলতেই য়্যাটেন্ডেন্ট ঘুরে তাকান ভবেশ মাঝির দিকে, "ও দাদু, তুমি রনেন মন্ডল বললে যে?"</p>
<p dir="ltr">ভবেশ বাবু আত্মসমর্পণ করলেন, "তোমরা তো এই বাইরে বসিয়ে রেখেছো মা, বুকের ব্যাথায় আর মশার কামড়ে নাম ভুলে গেলে কি করি বলো?"</p>
<p dir="ltr">য়্যাটেন্ডেন্ট রেগে উঠতে উঠতেও ফিক করে হেসে রওয়ানা দেয় রনেন মন্ডল এর হুইলচেয়ার ঠেলতে ঠেলতে। "কি যে করেন না দাদু"।</p>
পলাতকhttp://www.blogger.com/profile/10815481700144344107noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-7304401938332507753.post-86121315383312697872020-03-28T23:32:00.001-07:002020-03-28T23:32:54.420-07:00আই লীগ,মোহনবাগান, অথবা সুখ অসুখের দোটানা<p dir="ltr">(লেখাটা ওয়েবম্যাগ চার নম্বর প্ল্যাটফর্মে প্রকাশ হয়েছে। নামকরণ করেছেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য। আনএডিটেড ভার্সন ও লিঙ্ক রইল)</p>
<p dir="ltr">'ক্লাবটা বেচে দিলো'? আমার মত শখের ফেসবুক মোহনবাগানি নয়, যারা খেলাটা মাঠে গিয়ে দেখেন, হাসেন, কাঁদেন, গালাগালি দেন, মাথায় তুলে নাচেন, ঝগড়া করেন, সেই খাঁটি লোকগুলোকে থম মেরে যেতে দেখেছিলাম এটিকের সাথে সংযুক্তিকরণ এর খবরটা আসার পরে। আমি নিশ্চিত, যে সমস্ত ইস্টবেঙ্গল সমর্থক এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা প্রায় একশোবছর ধরে বংশানুক্রমে উপভোগ করছেন , যাবতীয় কটূক্তি সত্ত্বেও খানিকটা বিরক্তিমিশ্রিত অসহায়তা তারাও অনুভব করেছেন। কলকাতা লীগ, ডুরান্ড বা বাংলাদেশ সফর এর ব্যর্থতার পর এই খবর কফিনে শেষ পেরেক ঠোকার শব্দের মতই শুনিয়েছিল ক্লাবপাগল মানুষগুলোকে। হবে নাই বা কেনো? মরসুমের শুরুতে স্পন্সর এর অনিশ্চয়তা, বিদেশি কোচ যিনি ময়দানি ভাষায় যোগ রাখতে পারেন না সমর্থকদের সাথে, অন্যতম ভরসা চামরোর ব্যর্থতা, এসবও তো দেখতে হয়েছে ওনাদের।</p>
<p dir="ltr">আইলিগ এর শুরুতেই হোঁচট, যার মধ্যে চার্চিল এর বিরুদ্ধে চারগোল হজম, শৌখিন বাবু সমর্থকরা তো হিসেবের খাতা থেকে ক্লাবটাকেই প্রায় বাদ দিয়ে ফেলেছিলেন। এরপরের ইতিহাসটা কিন্তু দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন এর। জানুয়ারির মাঝামাঝি সুখের দিন এর সমর্থকরাও নড়ে বসতে বাধ্য হলো চিরশত্রু-বিজয়ের পর। ব্যক্তিগতভাবে মনে করতে পারি, মোহনবাগান কোনো একটা ম্যাচে নিজেদের মধ্যে টানা একুশটা মাঠজোড়া নয়নাভিরাম পাস খেলে উপরে উঠে আসার ভিডিও দেখে ছিটকে গিয়ে কলকাতা টিভিতে খেলা দেখতে শুরু করি আমি।</p>
<p dir="ltr">তারপর এলো ১০ই মার্চ। চেন্নাই সিটি ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে অল্পের জন্য ফসকে যাবার পর, বর্তমান সময়ের নেমেসিস আইজল এফ সি সংহার মরশুম জোড়া বিশ্বস্ত বাবা দিওয়ারার গোলে, পঞ্চমবার জাতীয় লীগ বা আই লীগ জয় চার ম্যাচ ও প্রায় একমাস হাতে থাকতে। সেই আইজল, যাদের হাতে শেষ মুহূর্তে শেষ হয়েছিল ২০১৬-১৭'র চ্যাম্পিয়নশিপ এর দৌড়। স্প্যানিশ কোচ কিবু ভিকুনার অভিভাবকত্বে, গোলমেশিন বাবা দিওয়ারার দাপটে, হৃৎপিন্ড ফ্রান গঞ্জালেজ, মস্তিষ্ক জোসেবা বেইতিয়া, শিরদাঁড়া মোরান্তের নেতৃত্বে নাওরেম, শেখ সাহিল, শুভ ঘোষরা গরুর গাড়ির মেজাজে শুরু হওয়া মরসুমকে বোয়িং এর স্বাচ্ছন্দ্যে শেষ করল আর ছুঁয়ে ফেললো ডেম্পোর রেকর্ড আর আধুনিক ভারতীয় ক্লাবফুটবলের প্রবাদপ্রতিম কোলাসোকে।</p>
<p dir="ltr">খুশি? সবাই। শেষ ২০১৪-১৫ জয়ের দ্রোনাচার্য সঞ্জয় সেন খুশি। তবে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন কোনো বাঙালি কোচ মরসুমের শুরুর এতবড় ব্যর্থতা পেরিয়েও ক্লাবকর্তাদের আনুকূল্য পেতেন কিনা। সাথে মনে করিয়ে দিয়েছেন একের পর এক ক্লাব বন্ধ হয়ে যাওয়া ভারতীয় ফুটবল এর বর্তমান আই লীগ সে সময়ের ১৪ দলের আইলীগের থেকে একটু হলেও আলাদা। পোড় খাওয়া ময়দানি সুভাষ ভৌমিক অবশ্য এ ব্যাপারে দ্বিমত। তারমতে ভারতীয় ফুটবল এ মুহূর্তে আরো কঠিন কারণ আগে কেবলমাত্র গোয়া আর মুম্বাই ঘরানার মোকাবিলা করতে হত, সেখানে এখন দেশের প্রত্যেক কোণা থেকে ক্লাব, যাদের ধরণ-ধারণ ও মাঠের চরিত্র আলাদা। সুভাষ আরো উচ্ছ্বসিত কারণ তার মতে মূর্খরা বুঝেছে ফুটবলটা এখনো কলকাতার। টিপ্পনি কেটেছেন কালো কাপড় ঝুলিয়ে অনুশীলন করতে হয়নি কিবু ভিকুনাকে এই সাফল্যের জন্য। সেই কিবু, যিনি বলেছেন তিনি রাত জাগলে ফুটবলাররা আনন্দ করতে পারবে, তাই মরশুম শেষ হবার আগে কোচের ছুটি নেই। আইজল ম্যাচ এর খেলায় খুশি ছিলেন না স্প্যানিশ টেকনিক ও সৌন্দর্যঘরানার কিবু, জানিয়েছেন গোল পাওয়ার চাপে খেলা ভালো হয়নি, তাই ডার্বিতে নজর রাখতে চান। কর্তারা খুশি। ক্লাববিক্রির অপবাদ (?) শুনতে হয়েছে। স্প্যানিশ বাস ড্রাইভার এনেছেন বলে কটূক্তি শুনতে হয়েছে। কল্যানী স্টেডিয়ামকে হোমগ্রাউন্ড বেছে নেওয়ার ঝুঁকি নিতে হয়েছে, যদিও সে জায়গা দিনের শেষে আবেগে দলকে সবম্যাচে মনস্তাত্বিক লিড দিয়েছে।</p>
<p dir="ltr">কিন্তু সত্যিই কি সব এতটাই সুখের? জয়ের প্রাবল্যে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসা (এই লেখার সময় পর্যন্ত) চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীকেও যখন বামন লাগছে, তখন অপ্রিয় দু-একটা কথা বলা কি দরকার? এই যেমন, ভারতীয় ফুটবল লীগ জিতে স্প্যানিশ পতাকা মোড়া সেলিব্রেশন-এ কেন ধীরে ধীরে বাংলার মাঠ থেকে সাফল্যের আলো সত্ত্বেও অন্ধকারে হারিয়ে গেলেন বাংলার কোচ ও হাতে গোনা কয়েকজন বাদে বাংলার ফুটবলার-রা? অথবা, সামনের মরশুমে কি হবে 'আমাদের' মোহনবাগানের 'কর্পোরেট' এটিকের হাতে পড়ে? কর্তারা যতই বলুন পরিকল্পনা আছে, সামনে স্পষ্ট কিছু আলোর রেখা নেই। তবে সুখের দিনে থাক না সেসব কূটকচালি।</p>
<p dir="ltr">https://4numberplatform.com/?p=17809</p>
পলাতকhttp://www.blogger.com/profile/10815481700144344107noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-7304401938332507753.post-64610793665845976592019-12-07T10:46:00.001-08:002019-12-07T10:46:02.219-08:00বাজে গল্প ৪<p dir="ltr">অমিত্রসূদন বাবু বেডে শুয়েই হাঁসফাঁস করছিলেন। ডাক্তার অম্বুজাক্ষ তলাপাত্রের দুপুরের রাউন্ডের অপেক্ষাতে উৎসুক। ডাক্তারবাবু বেডের পাশে এসে দাঁড়াতেই জিজ্ঞাসা করলেন সেই প্রশ্নটা যেটা ভদ্রতা ও ভয় এর বশে করে উঠতে করতে পারেননি ভর্তি হওয়ার দিন থেকে। ডাক্তারবাবু বড়জোর একমিনিট সময় খরচ করেন রোগীপিছু রাউন্ডের সময়, বড় কোন সমস্যা না থাকলে, তাই ভনিতা কম রাখাই ভালো।</p>
<p dir="ltr">"কত সময় আছে আমার হাতে আর ডাক্তার তলাপাত্র"?</p>
<p dir="ltr">অম্বুজবাবু সকালের রিপোর্টের ওপর গম্ভীর মুখে দ্রুত চোখ বোলালেন, হেড নার্স মনসালতা মাইতিকে ডেকে খুব মৃদু স্বরে কিছু একটা দু-এক-কথা'র উপদেশ দিলেন।</p>
<p dir="ltr">"বললেন না যে ডাক্তারবাবু?" অমিত্র অস্থির।</p>
<p dir="ltr">দুপাশে অল্প একটু ঘাড় নেড়ে অম্বুজ বললেন "দশ"!</p>
<p dir="ltr">অমিত্র বিহ্বল হয়ে পড়লেন। "'দশ'??!! ছেলেকে নিউ জার্সি থেকে ডেকে পাঠাই তাহলে ডাক্তারবাবু?? ফিরিঙ্গি বে করেছে বলে মুখ দেখব না বলেছিলাম!"  </p>
<p dir="ltr">তারপরে বাস্তববুদ্ধি ফিরলে নিজেকে একটু সামলে নিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, "ইয়ে, 'দশ' কি ডাক্তারবাবু? মাস? বছর তো নিশ্চই নয়? গড়পারের বাড়িটা বেচে দেব ভাবছিলাম, দাম পাচ্ছিলাম না, ভাবলাম বছর খানেক ধরে রাখি, অদ্দিন বোধহয়?? য়্যা??"</p>
<p dir="ltr">ডাক্তারের কালো হয়ে আসা মুখের দিকে তাকিয়ে আবার ভেবলে গেলেন অমিত্রসূদন। "তাহলে কি 'দিন' ডাক্তারবাবু? গিন্নি আজ মেয়ের বাড়ি গেছে মেয়ের ননদের আইবুড়ো ভাত-এ, বলে গেছে একটা দিন যেন না জ্বালিয়ে যেন ওর হাড়ে বাতাস লাগাই! একটা ফোন করি গিন্নিকে?"</p>
<p dir="ltr">কেবিনজোড়া নৈঃশব্দ্য। এবার নিয়তির হাতছানি ধরতে পারছেন অমিত্র। ফ্যাসফেসে গলায় শুধু জিজ্ঞাসা করতে পারলেন, "তবে কি ঘন্টা? য়্যা? ও মনসাদিদি, আজ রাতে আর ওই জ্যালজেলে স্যুপ নয়, একটু পেঁয়াজ রসুন দে' মাংস খাওয়াতে পারো? ও ডাক্তার? 'ঘন্টা'? বললে না যে?"</p>
<p dir="ltr">ঘরে ঢোকার মিনিটখানেকের মধ্যে গম্ভীর মুখে বেরিয়ে যেতে যেতে অম্বুজ বললেন "নয়"!<br></p>
পলাতকhttp://www.blogger.com/profile/10815481700144344107noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-7304401938332507753.post-7854294274318500212019-11-27T08:29:00.001-08:002019-11-27T08:29:09.105-08:00স্মৃতি<p dir="ltr">"কাকিমা, একটু চিনি দেবে? পরীক্ষার পড়া করতে রাত জাগার ব্যাপার আছে আমাদের তিনজনের, এদিকে এই রাত এগারোটায় দেখছি চা কফি করবার চিনিই নেই" ছায়াকাকিমা দরজা খুলতেই সোহম জিজ্ঞাসা করল।</p>
<p dir="ltr">সোহমরা তিনবন্ধু সস্তায় ভাড়ায় পেয়ে গেছিল কেষ্টপুর এর এই চারতলার ফ্ল্যাটটা মাসদুয়েক আগে। উল্টোদিকে শুধু ষাটোর্ধ্ব ছায়াদেবী, আর তার ক্যানসার আক্রান্ত স্বামী মনমোহন। সোহমরা তিনজনেই মফস্বল থেকে এসেছিল বলেই বোধহয়, মায়ের থেকেও বেশি বয়সী ছায়াকে দুম করে 'ছায়াকাকিমা' বানিয়ে ফেলতে সময় লাগেনি। ছায়াও ছেলের বয়সী এই তিনজনকে সামনে পেয়ে ভরসা পেয়েছিলেন, বাড়িতে অসুস্থ লোক, রাতবিরেতে যদি কখনো বিপদে পড়তে হয়। এদের মধ্যে সোহম সবথেকে মিশুকে বলেই, মনে হয় ওর সাথে যত গল্প ছায়ার, সোহমও বৃদ্ধাকে দেখে একটা মায়ায় পড়েছে, ওর গ্রামের বাড়িতে থাকা বুড়ি জ্যেঠিমাকে মনে পড়ে যায় ওনাকে দেখে। সোহম কোনদিনও বাড়িতে ঢোকেনি, কিন্তু যখনই দরজার বাইরে বা বাজারে দোকানে দেখা হয়েছে অন্ততঃ পাঁচ দশ মিনিট গল্প করেই ছেড়েছেন ছায়া। তবে ওঁর বাড়িতে বেল বাজানো এই প্রথম।</p>
<p dir="ltr">ঘরের ভেতরে খুব আবছা আলো। সোহম এর খারাপ লাগলো এটা ভেবে, ছায়াকাকিমা হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। যদিও ভদ্রমহিলা বলেছিলেন উনি রাত বারোটার আগে ঘুমোন না। মনমোহনকে দিনের শেষ ওষুধ রাত বারোটায় খাইয়ে তবে ওর ছুটি।</p>
<p dir="ltr">ছায়া ভেতর থেকেই সোহমকে বললেন, "আয়, তুই ভেতরে এসে বোস, আমি দিচ্ছি"।</p>
<p dir="ltr">সোহম ভেতরে ঢুকে এলো। ঘরে একটা ফ্যাকাশে হলুদ আলো। ছায়াকাকিমার মুখ অব্দি দেখা যাচ্ছে না এমন সে আলোর জোর। আরেকটা অদ্ভুত ব্যাপার, মেঝে জুড়ে ছড়ানো রয়েছে অনেক রকম জিনিসপত্র, এমনকি একটা ক্রিকেট ব্যাটও দেখলো সোহম।</p>
<p dir="ltr">"ঘর গোছাচ্ছিলে কাকিমা?"</p>
<p dir="ltr">ছায়া রান্নাঘরের দিকে যেতে গিয়ে আটকে গেলেন। একটু হেসে বললেন "না রে বাবা, ও আমার পাগলামি বলতে পারিস"।</p>
<p dir="ltr">"কিসের পাগলামি? বলো না!"</p>
<p dir="ltr">"তোর কাকু যবে থেকে এই মারণ রোগে ভুগছে তবে থেকে আমার খুব ভয় লাগতো জানিস?" ছায়া বললেন। "সর্বক্ষণ মনে হতো যেদিন ও ছেড়ে চলে যাবে সেদিন আমি কি করব? তিনকুলে তো কেউ নেই আমাদের"।</p>
<p dir="ltr">সোহম সেটা আগেই দেখেছে। এই দুমাসে কাউকে ওদের ঘরে আসতে দেখেনি। মনমোহন দরজা খুলে রেখে মাঝে মাঝে বাইরের ঘরের চেয়ারে এসে বসতেন, তাও বোধহয় গত দু সপ্তাহে সেটাও দেখা যায়নি একবারের জন্যেও।</p>
<p dir="ltr">ছায়া বলে চললেন। "তাই যে কাছের মানুষগুলো আগেই আমায় ছেড়ে চলে গেছে, তাদের স্মৃতিজড়ানো এক একটা জিনিস এই চোখের সামনে ফেলে রাখতে লাগলাম। যাতে করে এই চলে যাওয়াটা মানিয়ে নিতে পারি সময় হলে পরে"।</p>
<p dir="ltr">সোহম এর মন খারাপ হয়ে গেলো। সন্ধ্যে থেকে পড়ে পড়ে এমনিতেই মাথা ধরে গেছিলো, তাই বুড়িকে একটু কথা বলে সঙ্গ দিতে ইচ্ছে গেলো।</p>
<p dir="ltr">"ওইটা কি পড়ে আছে? চাইনিজ চেকার?"</p>
<p dir="ltr">ছায়া ফিক করে হেসে বললেন, "হ্যাঁ রে। আমার বাবা ছোটবেলায় খেলনা কিনে দেবার ঘোরতর বিরোধী ছিলেন। এইটা লুকিয়ে কিনে দিয়েছিল মা। লুকিয়ে চিলেকোঠার ট্রাংক এ ভরে রাখতাম। বিয়ের পরের দিন যখন বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসছি, বাবা এইটা হাতে তুলে দিলো। বলল, মা, বাড়ির প্রাণটা তো নিয়েই যাচ্ছিস, আমার অপরাধবোধটাও নিয়ে যা।" একটু চুপ থেকে ছায়া বললেন, "জানিস? বাবা কোনদিন এত লম্বা কথা বলেননি আমার বা ভাইয়ের সাথে। খুব কড়া শাসন এ থাকতাম আমরা। এই কথার পরে আমার তো দু চোখ ভরা বন্যার জল"।</p>
<p dir="ltr">"তোমার ভাই আছে? এখন কোথায় থাকেন?" সোহম জিজ্ঞাসা করল।</p>
<p dir="ltr">ছায়া কিছুক্ষণ চুপ। তারপরে বললেন "বাবা চলে গেলো বিরানব্বই সালে, মা তার একমাসের মধ্যে ঠুনকো জ্বর এ, বাবলু তো বিয়ে টিয়ে করেনি, জন্ম বাউন্ডুলে, ধর্মতলার কোনো একটা ট্রাভেলস কোম্পানিতে লোকজনদের গ্রূপের সাথে ট্যুর অপারেটর হিসেবে যেতো এদিক ওদিক। মাঝে মাঝে আবার একা একাই বেরিয়ে পড়তো। হাতে কেবল ওই কালো ক্যাম্বিসের ব্যাগটা, ওই যেটা সোফার সামনে পড়ে আছে দেখ। দুহাজার তেরোতে হঠাৎ একদিন এসে বলল, 'দিদি, কেদারনাথ চললাম, একাই, এই ব্যাগটা নিয়ে বেরিয়েছিলাম বাড়ি থেকে, তারপর মনে হলো হিমালয় এর কোলে স্বয়ং মহাদেব এর বাড়ি যাবো, ব্যাগ কিসের? এটা রাখ তোর কাছে, ফিরে এসে নেবো'খন'!"</p>
<p dir="ltr">ছায়া বলে চললেন, "সে ফেরা আর হলো না জানিস? মেঘ ভেঙে না কিভাবে যেনো বৃষ্টি নামলো কেদারনাথ এ, অনেক লোক তলিয়ে গেলো, ভাই আর ফিরলো না। তোর কাকু ওই খারাপ শরীর নিয়ে অনেকবার এ অফিস ও অফিস করেছেন খোঁজ মিলবার আশায়। জামাইবাবু খুব ভালোবাসতো তার উড়নচন্ডী সংসার না করা শালাকে। কিন্তু বাবলু আর ফিরলো না।"</p>
<p dir="ltr">সোহম এর মন আরো খারাপ হয়ে গেলো। কিন্তু ছেড়ে উঠে আসতেও মন দিলো না। নিতান্তই কথা চালিয়ে যেতে জিজ্ঞাসা করলো "আর ওই ব্যাট?"</p>
<p dir="ltr">"ও তো টুবলুর। টুবলু নিচের ফ্ল্যাটে এসেছিল বছর দুয়েক আগে। বছর আটেক বয়স। সারাক্ষণ দেখা হলেই বকবক বকবক। এই ব্যাটটা আমি কিনে দিয়েছিলাম। যদিও ওর সব খেলা ওর বা আমাদের ঘরের মধ্যেই। নীচে যেতে চাইত না খুব একটা। ওর মা'ই জোর করে পাঠাতো যাতে সবার সাথে মিশতে পারে। এইভাবেই এক বিকেলে নীচে খেলতে গিয়ে ফিরলো না ছেলেটা, বল কুড়োতে গিয়ে সোজা গাড়ির তলায়"। শিউরে উঠলেন ছায়া। "ওর বাবা-মা আর থাকেনি এই বাড়িতে, এখনো তালাই লাগানো আছে দেখবি"।</p>
<p dir="ltr">আর বসতে ইচ্ছে গেল না সোহম এর। মনটা ভারী হয়ে গেছে। কাল পরীক্ষা। বললো, "আছছা কাকিমা, পরে আসবো, রাত অনেক হলো, চিনিটা দাও"।</p>
<p dir="ltr">ছায়া দাঁড়িয়েই রইলেন। ঘরের ভেতর থেকে একটু একটু অস্পষ্ট কথাবার্তার শব্দ ভেসে আসছিল অনেকক্ষন। সোহম ভাবছিলো মনমোহন কাউকে ফোন করছেন হয়ত। সেই আওয়াজ আরেকটু যেনো বাড়লো। দুটো গলা? কেউ এসেছে নাকি, যাক গে, ওর কি, সোহম ভাবলো।</p>
<p dir="ltr">ছায়া হাতের আঙ্গুল তুলে ঘরের মেঝেয় পড়ে থাকা একটা চৌকো চ্যাপ্টা জিনিসের দিকে দেখিয়ে সোহমকে জিজ্ঞাসা করলেন, "আর ঐটা কি বল তো?"</p>
<p dir="ltr">সোহমের আর এই খেলাটা ভালো লাগছিলো না। কিছু না বলে সোজা পড়ে থাকা জিনিসটা হাতে তুলে নিলো। দেখলো ওটা মনমোহন আর ছায়ার একটা পুরোনো ছবি, সম্ভবতঃ বিয়ের পরের, ফ্রেম করে রাখা আছে। জিজ্ঞাসু চোখে ছায়ার দিকে তাকাল সোহম, ছায়ার মুখের কাছটা বড্ড অন্ধকার।</p>
<p dir="ltr">ছায়ার গলার স্বর যেন অনেক দূর থেকে ভেসে এলো, "যতই ভেবেছিলাম এই সব করে চলে যাওয়াটা মানিয়ে নেব, পারলাম না রে, তোর কাকু আজ দুপুরে চিরদিনের জন্য চলে গেলেন, চোখে পুরো অন্ধকার নেমে এলো, ঘুমের বড়িগুলো সব একসাথে মুখে পুরে দিলাম, যখন ঘুম ভাঙলো, দেখলাম বাবলু শিয়র এ এসে বসে আছে, তোর কাকুর সাথে জমিয়ে গল্প করছে, এবারে সবাই একসাথে বেরিয়ে যাবো ভাবছি, যদিও তাড়া নেই কারোর, কারণ কোথায় যাবো তো জানা নেই, এমন সময় তুই বেল বাজালি"।</p>
<p dir="ltr">সোহম এর পা আর গলা যেন কেউ বেঁধে রেখেছে, তবুও সর্বশক্তি দিয়ে পেছনে হেঁটে দরজার বাইরে যাবার চেষ্টা করল, অন্ধকারটা যেন আরো বেড়েছে ঘরের মধ্যে, শুধু ছায়াকাকিমার শরীরের আশেপাশে আলোর ছিটে।</p>
<p dir="ltr">বেরিয়ে যেতে যেতে ছায়াকাকিমার গলা শুনলো শেষবারের মতো, অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার আগে, "চিনিটা তো নিয়ে যা বাবা, রান্নাঘরেই পেয়ে যাবি, সামনেই, এত রাত্রে আর ......"!</p>
পলাতকhttp://www.blogger.com/profile/10815481700144344107noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-7304401938332507753.post-23645614954445099602019-08-23T11:13:00.001-07:002019-08-23T11:13:43.422-07:00বাজে গল্প ৩<p dir="ltr">সুধন্য ঘোষাল ধেনো খেতে ভালোবাসতেন। বৌদির হোটেলের পেছনের দরজায় ব্লাডার থেকে সরাসরি গ্লাসে ঢালা বসিরহাট থেকে আমদানি করা ধেনো গলা দিয়ে নামতো যখন, সুধন্যর মনটা চুলকে উঠতো আনন্দে।</p>
<p dir="ltr">রোজকার মতো বিকেলে সেই দেবভোগ্য ধেনোতে চুমুক মেরে বুঁদ হয়ে গঙ্গার জলে পা ডুবিয়ে বসেছিলেন সুধন্য আর আকাশপাতাল ভাবছিলেন। পাড়ের মন্দিরটার চাকচিক্য ফিরেছে বছরখানেক হলো। জগন্নাথ পন্ডিত রাধাকেষ্ট নিয়ে বসে থাকতেন যে কালে, দু চারটে বুড়োবুড়ি আর সুধো মাতাল ছাড়া সে কেততন শোনার লোক পাওয়া যেতো না বড় একটা। এখন সে মন্দিরে বেশ বড়সড় বজ্রঙবলি, তার দ্বিধাবিভক্ত বুক এর মধ্যে হাসিমুখে শ্রীরামচন্দ্র ও সীতামাতা, সামনে বেশ কিছু ভক্ত আর টুংটাং করা দানবাক্স। জগু পন্ডিত বাতের ব্যাথায় নড়তে পারেন না। মুদিদোকানের শিউপুজনের ভাগ্নে রামশরন মিশির আজকাল বেশ দুলে দুলে হুংকার দিয়ে পুজো করে।</p>
<p dir="ltr">খানিকটা ঢুলুনি এসেছিল, ঠিক এমনসময় রামশরন এর বাজখাই গলার ডাক শুনে খোঁয়ারি চটকে গেলো সুধন্যর।</p>
<p dir="ltr">"সুধোকাকা! আবার খেয়েছো ওসব ছাইপাঁশ?"</p>
<p dir="ltr">সুধন্য ছোপ ধরা দাঁত বের করে বললেন "হেঁ হেঁ"!</p>
<p dir="ltr">"তোমায় বলেছি না, এসব ছাড়। সন্ধেবেলায় মন্দিরে এসে একটু বোসো। পুজোর কাজকম্মে একটু হেল্প টেল্প করে দাও। আমি যেদিন মিটিং এ যাই, লোকজন এসে ফিরে যায়। বলি, ব্রাহ্মণ মানুষ, একটু ধর্মকর্ম তো করতে পারো এই শেষ বয়সে এসে"।</p>
<p dir="ltr">সুধন্য আবার হেঁ হেঁ পূর্বক বললেন "সে ভাগ্নে কোনদিনই তো তেমন ..... হেঁ হেঁ"।</p>
<p dir="ltr">"ছ্যাঃ", রামশরন মাথা ঝাঁকিয়ে বলে উঠলো "তোমাদের জন্য দেশটা টুকরো টুকরো হয়ে যাচ্ছিলো সত্তর বছর ধরে"!</p>
<p dir="ltr">সুধন্য মাথা নিচু করে স্বীকার করলেন। তারও আজকাল সবসময় মনে হয় দেশটা তার মতো লোকজনের জন্যেই ডুবে যাচ্ছে।</p>
<p dir="ltr">উদ্ধার করার শেষ মরিয়া চেষ্টা করল রামশরন। "বলো তো কাকা, বলো জয় শ্রীরাম, সব পাপ ধুয়ে মুছে যাবে"।</p>
<p dir="ltr">তিলমাত্র সময় না নিয়ে সুধন্য বললেন "জয় শ্রীরাম ভাগ্নে"! সুধন্য ধর্মতলায় বিফ ফেস্টিভ্যাল এ যোগ দেননা, বৌদির হোটেলের ঝাল ঝাল মুরগির কশা মাংসই তার কাছে যথেষ্ট। কানাঘুষো তিনি এটাও শুনেছেন জয় শ্রীরাম বললে কাটমানি দিতে হচ্ছে না আজকাল, যদিও তার কাটমানি দেবার মত কাজকারবার কিছুই নেই।</p>
<p dir="ltr">"এভাবে হবে না", শ্রীরাম এর জয়গানের মাত্রা সন্দেহজনক ঠেকলো রামশরন এর কাছে, "তোমায় আজ খুঁজে পাওয়াবো ভগবানকে"!</p>
<p dir="ltr">টানতে টানতে সুধন্য কে নদীর এক্কেবারে কিনারায় নিয়ে গেলো রামশরন। গলা ধরে ডুবিয়ে দিলো জলের মধ্যে মাথা। মন্দির থেকে লোকজন মজা দেখতে নদীর ধারে এসে জমেছে একে একে।</p>
<p dir="ltr">কলার খিমচে ধরে তুললো দু সেকেন্ড পরে। জিজ্ঞাসা করলো "পেলে রামচন্দ্রকে? মন যখন একদিকে যাবে তখনই পাওয়া যায় ভগবানকে"।</p>
<p dir="ltr">হাঁপাতে হাঁপাতে সুধন্য বললেন "না, ভাগ্নে"। গলার স্বরে যার পর নাই লজ্জা মিশে।</p>
<p dir="ltr">পাড় থেকে হা হা করে হেসে উঠলেন ভবতারন মুখুজ্জে। "তোর সমাজ সংস্কার আর হলো না ভাগ্নে"।</p>
<p dir="ltr">জেদের বশে আবার সুধন্যর মাথাটা ডুবিয়ে দিলো জলে রামশরন। এবারে অন্ততঃ পাঁচ ছ সেকেন্ড। হাত এ খামচে ধরেছে সুধন্য। আবার জল থেকে বার করে জিজ্ঞাসা করলো "পেলে রামচন্দ্রকে? না এখনও মন পড়ে আছে ওই ধেনোর ঠেকে?"। </p>
<p dir="ltr">সুধন্যর বুকের ভেতরটা হাপর এর মতো করে উঠছে। পাড় থেকে ভোলার পাঁচ বছরের যমজ ছেলেদুটো হাততালি দিয়ে উঠলো। আজ নতুন খেলা। সুধোদাদুকে ডোবানো। ফিশ ফিশ করে বলে উঠলেন সুধন্য "না রে ভাগ্নে, শুধুই অন্ধকার"!</p>
<p dir="ltr">অগ্নিশর্মা রামশরন প্রায় জলে ছুঁড়ে ফেলে মাথা চেপে ধরলো সুধন্যর। দশ সেকেন্ড। পনেরো সেকেন্ড। মজা দেখতে আসা জনতা একটু সংশয়ে, কিন্তু রামশরন এর মুখের ওপর আজকাল কথা বলে না কেউ। শেষে ভবতারনই বলে উঠলেন, "রামু, ভাগ্নে, ছেড়ে দাও ওকে, পাখির মতো শরীর, বাঁচবে না যে"!</p>
<p dir="ltr">ফোঁস ফোঁস করতে করতে সুধন্যকে গলা ধরে তুলে এনে ছাড়লো রামশরন। খাবি খাচ্চিলেন সুধন্য। একবার ধেনোতে হসপিটালের য়্যালকোহল মিশিয়ে খেতে গিয়ে ঠিক যেমনটা হয়েছিল। লাল চোখ নিয়ে অগ্নিশর্মা রামশরন জিজ্ঞাসা করে উঠলো সুধন্যকে "পেলে শালা? রামচন্দ্রকে? নাকি আবার ডোবাবো বোকাচোদা"?</p>
<p dir="ltr">সুধন্য মাটিতে শুয়ে শুয়েই প্রায় মাটির সাথে মিশে গেলেন লজ্জায়। পেট গুলিয়ে উঠছিলো। চোখে অন্ধকার। তাও ক্ষীণ কুন্ঠিত গলা অপরাধবোধে ডুবিয়ে শেষবারের মত জিজ্ঞাসা করে উঠলেন, "না ভাগ্নে, দেখলাম না, তুমি ঠিক জানো, এইখানেই ডুবে গেছিলেন উনি"?</p>
<p dir="ltr">অজ্ঞান হয়ে গেলেন সুধন্য।</p>
পলাতকhttp://www.blogger.com/profile/10815481700144344107noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-7304401938332507753.post-48974974823685078162019-07-28T10:49:00.001-07:002019-07-28T10:49:07.374-07:00এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ ১<p dir="ltr">#এই_মৃত্যু_উপত্যকা_আমার_দেশ_১</p>
<p dir="ltr">জুন 2017: চাকরির প্রত্যাশায় আসা 16 বছরের নাবালিকা ধর্ষণ এর অভিযোগ জানায় উত্তরপ্রদেশ এর বিজেপি এম এল এ কুলদীপ সেনগার, তার ভাই ও সাঙ্গপাঙ্গদের ওপর।</p>
<p dir="ltr">জুন 2017 ~ এপ্রিল 2018: পুলিশ এফ আই আর নিতে অস্বীকার করে। কোর্টে কেস করা হয়। এবং লক্ষ্য লক্ষ্য কেস এর মতো এটাও চলতে থাকে।</p>
<p dir="ltr">3 এপ্রিল 2018: কোর্টে হিয়ারিং এ আসা মেয়েটির বাবাকে পেটায় বিধায়ক এর পরিবার। দুটি পুলিশ কম্প্ল্যান্ট হয়। একটি মেয়েটির বাবার ও একটি বিধায়ক এর পরিবারের তরফ থেকে। পুলিশ একটি অভিযোগ এর ওপরই ব্যবস্থা নেয় ও মেয়েটির বাবাকে গ্রেফতার করে ও জেল এ পাঠায়।</p>
<p dir="ltr">8 এপ্রিল 2018: মেয়েটি মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ এর বাড়ির বাইরে নিজের গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহননের চেষ্টা করে।</p>
<p dir="ltr">9 এপ্রিল 2018: জেল থেকে মেয়েটির বাবাকে বমি, পেট ব্যাথা, পিঠ থাই পাছায় অসংখ্য ক্ষতচিহ্ন ও সেপ্টিসেমিয়া নিয়ে হসপিটাল এ ভর্তি করা হয়, এবং, মেয়েটির বাবা মারা যান।</p>
<p dir="ltr">প্রথমে অসম্ভব তৎপরতার সাথে 6 জন ডাক্তারকে সাসপেন্ড করা হয় চিকিৎসাগত ত্রুটি প্রমান করার জন্য। চিকিৎসকেরা তীব্র প্রতিবাদ জানান ও উল্টো প্রমান রাখেন। এরপরে জনতা পথে নামে জানতে চেয়ে।</p>
<p dir="ltr">তখন, পরিস্থিতির চাপ এ 6 পুলিশকর্মী সাসপেন্ড হন।</p>
<p dir="ltr">পুলিশ বিধায়কের এক সহকারীকে গ্রেফতার করে।</p>
<p dir="ltr">10 এপ্রিল 2018: পোস্টমর্টেম রিপোর্টে জানা যায় মেয়েটির বাবার শরীরে অজস্র আঘাতের চিহ্নর কথা।</p>
<p dir="ltr">11~12 এপ্রিল 2018: সিবিআই দায়িত্ব নেয় কেস এর। চার্জশিট এ অবশেষে কুলদীপ সেনগার এর নাম আসে। জেল এ যান কুলদীপ ও তার ভাই, কেস চলতে থাকে, চলতে থাকে। </p>
<p dir="ltr">.........................</p>
<p dir="ltr">.........................</p>
<p dir="ltr">কিন্তু এ তো ঠিক মনোমত শেষ লাগছে না, তাই না?</p>
<p dir="ltr">সেজন্য অবশেষে এসেছে 28 জুলাই 2019। লইয়ার আর আত্মীয়ার সাথে লখনৌ এর দিকে চলতে থাকা মেয়েটির গাড়িকে পেছন থেকে ধাক্কা মেরেছে ট্রাক। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হসপিটাল এ ভর্তি সে।</p>
<p dir="ltr">এইবার চেনা চেনা লাগছে না? উপসংহার?</p>
<p dir="ltr">আসুন, অনেক হলো, মেয়েটিকে মেরে ফেলি এবারে। জেলবন্দি নেতাদের বের করে আনা খুব দরকার। আমাদের রকেট আবার চাঁদে গেছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন এই চন্দ্রযান ২ প্রমাণ করে আমরা ভুল সংশোধন করে ফিরে আসবার শক্তি রাখি। </p>
<p dir="ltr">ভুল হয়ে গেছে কুলদীপ সেনগার এর সাথে। আসুন, সংশোধন করি।</p>
<p dir="ltr">😶</p>
পলাতকhttp://www.blogger.com/profile/10815481700144344107noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-7304401938332507753.post-54755141097270918252019-04-04T10:27:00.001-07:002019-04-04T10:27:04.198-07:00গুপি গাইন বাঘা বাইন<p dir="ltr">স্নেহের বাবু,</p>
<p dir="ltr">তোমার গল্প শোনাবার আবদারে আড়ষ্ট হয়ে যেতে দেখে বাবার ওপর হয়ত রাগ হয় তোমার। কিন্তু বিশ্বাস করো, তোমার রাপুনজেল বা সিন্ডারেলার গল্প বাবা খুব একটা সহ্য করতে পারে না কোনকালেই, এক পাতা দক্ষিণারঞ্জনও মন থেকে পড়েনি বাবা এমনকি ছোটবেলাতেও।</p>
<p dir="ltr">তা বলে রূপকথা কি পছন্দ নয় বাবার? সেরকম নয়। ঠিক যে সুন্দর গল্পটা ছেলেভুলানো গল্পের ছলে বলতে বলতে তোমার মধ্যে গল্প ছাড়াও ছোটবেলা থেকে বড়, সত্যিকারের বড় হয়ে ওঠার বীজ ঢুকিয়ে দেওয়া যাবে, ঠিক যেমন করে তোমার দাদু ঢুকিয়ে দিয়েছিল তোমার বাবার মধ্যে, প্রথম সরকারিভাবে সিনেমা দেখার অনুমতি দিয়ে, ক্লাস টু তে গুগাবাবা দেখতে দিয়ে, সেরকম গল্প বলতে পারলে বাবা ধন্য হয়ে যাবে। কিন্তু সে গল্প বলবার ক্ষমতা আর কজনই বা রাখে। </p>
<p dir="ltr">কোনদিন যদি তুমি আমার আগ্রহ নিয়ে এই সিনেমা দেখতে শেখো, রাজা, রাজকন্যা, ভূত, বর, গানবাজনা এসব এর পরিধি পেরিয়ে, বলতে শেখো এমন এক ভাষা, যেখানে "উঁচা নীচা ছোট বড় সমান", জানবে বাবা গল্প বলতে না পারলেও, ঠিক এইটুকু হোক তা চেয়েছিল। </p>
<p dir="ltr">রাজ্যের প্রজা ঝাঁঝিয়ে উঠে যখন জবাব দেয় "যে রাজা খেতে দেয় না, তারে আবার খাজনা দেয়া কি?", ভুখা পেটের সিপাহী খাওয়ার কথা তুললে মুখে খাবার ঠাসা মন্ত্রীমশাই যখন বলে ওঠেন "আজ বাদে কাল যুদ্ধ হবে, তোমাদের এত খাইখাই কেন বলতো?", ঠিক তখন রাজার প্রিয়পাত্র না হতে চেয়ে যদি তোমার বিরুদ্ধ মত সবার সামনে নির্ভয়ে রাখতে পারো, জানবে সবথেকে প্রিয় গল্পটা বাবা তোমাকে বলে ফেলেছে এক লম্বা মহীরুহের ক্যামেরা দিয়ে।</p>
<p dir="ltr">রাজার যুদ্ধের অশ্লীল গান আর নাচে সায় না দিলে যখন জল্লাদ ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলে, তখনও যদি একদল সৈন্যের সামনে তপেনসুলভ সারল্য অথচ দৃঢ়তার সাথে বলতে পারো "রাজ্যে রাজ্যে পরস্পরে দ্বন্দ্বে অমঙ্গল", জানবে এই গল্পটা তোমাকে বাবা বলে যায়নি, কিন্তু চেয়েছে তুমি জানো সেই মহান মানুষটির সৃষ্টি থেকে। জানবে বাবার গল্পেও সেই কথাই থাকত, যে যুদ্ধ নয়, পেটের খাবারই প্রাথমিক প্রয়োজন, আর সে খাবার না পেলে বড় বড় যুদ্ধবাজদের পরিকল্পনা, এমনকি সাধারণ মানুষেও ভেস্তে দিতে পারে।</p>
<p dir="ltr">এমনকি বাবা চেয়েছিল, তুমি যখন এ গল্প দেখে আর মনে নিয়ে বড় হয়ে উঠবে, তখনো যেন এই গল্প তোমাকে নিস্তার না দেয়। বড় হবার অবশ্যম্ভাবী ফলস্বরূপ দুঃখ আসবে, এলে মনের ভেতর গুনগুন কোরো, "যার ভান্ডারে রাশি রাশি, সোনা দানা ঠাসা ঠাসি, যেনো দুঃখ তারও হয়"। আরো বেশি মন খারাপ যখন আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধবে সিংহাসন বা বড় দায়িত্বে বসা তোমাকে, জানবে রাস্তা দেখানো আছে ওই একই গানে, "দুঃখ কিসে যায়, প্রাসাদেতে বন্দী রওয়া বড় দায়, একবার ত্যাজিয়ে সোনার গদি, রাজা মাঠে নেমে যদি হওয়া খায়, রাজা শান্তি পায়"।</p>
<p dir="ltr">তাই বাবা অপেক্ষা করছে, কখন সেই সর্বাপেক্ষা রূপসী রূপকথা তোমার নজরে আসে আর মনে গেঁথে যায়।</p>
<p dir="ltr">এইটুকুই।</p>
<p dir="ltr">তোমার বাবা।</p>
পলাতকhttp://www.blogger.com/profile/10815481700144344107noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-7304401938332507753.post-78876715491745655802019-02-25T08:51:00.001-08:002019-02-25T08:51:53.146-08:00দেশদ্রোহী<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
<span style="background-color: white; color: #1c1e21; font-family: SolaimanLipi; font-size: 14px;">"যুদ্ধ নয়? শান্তি চাই?? শান্তি!!! শালা নিজেকে বাঙালি বলতে লজ্জা করে না আপনার? জানেন, এই বাংলার থেকে ক্ষুদিরাম বোম মেরে ফাঁসিকাঠে গেছে? নেতাজির ভয়ে ইংরেজ এর হৃৎকম্প উঠেছে? রবীন্দ্রনাথ নাইট উপাধি লাথি মেরেছেন?"</span><br style="background-color: white; color: #1c1e21; font-family: SolaimanLipi; font-size: 14px;" /><br style="background-color: white; color: #1c1e21; font-family: SolaimanLipi; font-size: 14px;" /><span style="background-color: white; color: #1c1e21; font-family: SolaimanLipi; font-size: 14px;">হ্যাঁ, কিন্তু রবীন্দ্রনাথ এই উগ্র দেশপ্রেম থেকে সাবধানও করেছেন বারেবারে সেটা তো মানেন?</span><span class="text_exposed_show" style="background-color: white; color: #1c1e21; display: inline; font-family: SolaimanLipi; font-size: 14px;"><br /><br />"কি বলছেন মশায়? রবীন্দ্রনাথ এর থেকে বড় দেশপ্রেমী আর আছেন নাকি? রবীন্দ্রনাথ প্রথম বঙ্গভঙ্গ রুখেছিলেন, দ্বিতীয়টা আর রোখা যায়নি, কিন্তু শ্যামাপ্রসাদ কলকতাটা পাকিস্তানে যাওয়া থেকে আটকেছিলেন, হোয়াটসয়াপ এ পেয়েছেন নিশ্চই?"<br /><br />ইয়ে, আপনি চার অধ্যায় পড়েছেন? এক দেশপ্রেমিক বিপলবী দলের নেতা মাষ্টারমশাই কখনো দলের মোহে এক মহিলাকে দলের মধ্যমনি বানিয়ে রাখেন ছেলেদেরকে দলে আটকে রাখতে, আবার তাকেই সরিয়ে দেবার জন্য হাত কাঁপে না তার যখন সে মেয়ে ভালোবেসে ফেলে দলের সেরা ছেলেটিকে? পড়েছেন?<br /><br />"কি বলছেন মাইরি? এ সব লিখেছে দাড়িবুড়ো?"<br /><br />লিখেছেন তো! আর ঘরে বাইরে? যেখানে জমিদার নিখিলেশ স্বদেশী দলের নেতা সন্দীপকে বলছেন, স্বদেশী যদি তার জমিদারির গরিব লোকেদের, যার অধিকাংশই গরিব মুসলমান, রুটিরুজিতে টান ফেলে তবে সেই স্বদেশী তিনি হতে দেবেন না?<br /><br />"য়াঁ! ইল্লি! আবার মুসলমান? শালা একা নেহেরুতে রক্ষা নেই শালা শিলাইদহের অত্যাচারী জমিদারটা দোসর ছিল বলছেন??!! শালা এই সব লিখে মালটা আশি অব্দি বেঁচে গেলো? বাংলাটা শালা আপনার মতোই বিনা শিরদাঁড়া মালে ভর্তি, একটা নাথুরাম জন্মায় না শালা।<br />যাই হোক, একটু ধন্যবাদ আপনারও প্রাপ্য। আমি আবার একটু শিক্ষাফিক্ষা নিয়ে থাকি বুঝলেন? দু চারটে স্কুলের ম্যানেজমেন্ট এ আছি। নিজেরও একটা স্কুল খুলছি এ বছরই, নাম দিচ্ছিলাম আরেকটু হলে 'রবীন্দ্র বিদ্যালয়', লাইসেন্স ও চলে এসেছে ওই নামে।"<br /><br />তাহলে এবারে কি করবেন?<br /><br />"দাদা, ওই দেশদ্রোহীর ভাবনা তো রাখা সম্ভব হবে না স্কুলে। সহজপাঠ টহজপাঠ এক্কেরে বাদ।কিষেনজির কথা বা কথাঞ্জলি রাখব সিলেবাসে তাও ভালো।"<br /><br />আর স্কুলের নামটা?<br /><br />"ভেবে নিলাম এক্ষুনি। পুরোনোটা না বদলে একটা শব্দ গুঁজে দেব। এখনই বলছি না। আপনার ঠিকানাটা দিন একটা হ্যান্ডবিল আপনাকেও পাঠিয়ে দেবখন। হাজার হোক আপনার শ্বশুরবাড়ির এলাকা, দু-একখান ছাত্র আপনিও, মানে, হেঁ হেঁ"।<br /><br />.<br />.<br />.<br /><br />আজ সকালের ডাকে এসেছে।<br /><br />হ্যান্ডবিল।<br /><br />ছবি রইল।</span><br />
<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;">
<a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjUFNPCxrLOjM6wmFpe15HUt5P4dpRPlSUqxYGG0857Mr_0cvzMu3pZRvEyt-remGTa0p81eUnmByAmFWY5dhrqr8f45A4ppgmicN56CWZFUCMiUAo50XDmKfh2dOaWhEUrZaF4gGo-Yg0/s1600/53050576_10217019064444712_2351077020659613696_o.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="1071" data-original-width="1440" height="238" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjUFNPCxrLOjM6wmFpe15HUt5P4dpRPlSUqxYGG0857Mr_0cvzMu3pZRvEyt-remGTa0p81eUnmByAmFWY5dhrqr8f45A4ppgmicN56CWZFUCMiUAo50XDmKfh2dOaWhEUrZaF4gGo-Yg0/s320/53050576_10217019064444712_2351077020659613696_o.jpg" width="320" /></a></div>
</div>
পলাতকhttp://www.blogger.com/profile/10815481700144344107noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-7304401938332507753.post-82778513083060007482018-10-09T11:35:00.000-07:002018-10-09T11:35:47.089-07:00এক আকেলা মনখারাপ<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;">
<a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjpXlvq6hJMDFM7L6ctkZc3rqByj0BoeSN_hWHpo-Kh9L-fQRCPOgRIzC8kIv5o3MLmqdCEFvRJEPabex1QnsYAQPwuNcr9dA5FIUdEvqUZlN9UINWeBzSC6yLkpeQdMF4JASgx8MKMhXY/s1600/Gharaonda-Hindi-1977-500x500.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="500" data-original-width="500" height="320" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjpXlvq6hJMDFM7L6ctkZc3rqByj0BoeSN_hWHpo-Kh9L-fQRCPOgRIzC8kIv5o3MLmqdCEFvRJEPabex1QnsYAQPwuNcr9dA5FIUdEvqUZlN9UINWeBzSC6yLkpeQdMF4JASgx8MKMhXY/s320/Gharaonda-Hindi-1977-500x500.jpg" width="320" /></a></div>
দিকভ্রান্ত, ঠিকানাভোলা<br />
উদাসীন, মনখারাপি<br />
ইমারত, ডিভাইডার আর মেশিনপত্রের ভিড়ে হাঁটতে হাঁটতে<br />
অভ্যেস এর বশে পকেট হাতড়ে চমকে ওঠা<br />
আর, দিন গুজরান এর নিত্যিনতুন তত্ত্বতালাশ।<br />
বেলাশেষে একটা ছাত এর আশা,<br />
পাবে?<br />
<br />
সকালের আলোয় মুখ লুকোনো<br />
রাতের কালোয় গিলে ফেলার ভয়<br />
চোখের কালির আঢাকা অস্বস্তি<br />
জল শুকোনো, কিন্তু কান্নার ভাপে ভেজা।<br />
ছেলে ঘুমিয়ে পড়লো এতক্ষনে নিশ্চই,<br />
পারবে ফিরতে?<br />
<br />
সময় রাস্তা কেবলই এগোয়, ফুরোয়? না,<br />
তবু কত লোকে বেরিয়ে পড়েছে আড় ভেঙে<br />
শুধু বেরিয়ে পড়ার ছটফটে অভ্যেস এ<br />
অথবা, বসে থাকতে, চেয়ে দেখতে, লজ্জা পেত বলে।<br />
খুঁজছে, আরেক উদভ্রান্ত, জিরোবে একসাথে দুদন্ড,<br />
দেখা হবে?</div>
পলাতকhttp://www.blogger.com/profile/10815481700144344107noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-7304401938332507753.post-29951575890261060342018-07-25T09:21:00.001-07:002018-07-25T09:21:10.391-07:00অল্প কল্প গল্প ১<p dir="ltr">'শুনছ?'</p>
<p dir="ltr">হুমমম...</p>
<p dir="ltr">'শুনছ?'</p>
<p dir="ltr">হুমমম...</p>
<p dir="ltr">'আরে একটা মিনি লগ আউট করো না মিনিট পাঁচেক এর জন্য ক্লাউডঅফিস থেকে!!'</p>
<p dir="ltr">উফফফ। দাঁড়াও। হুমম। এবারে বল।</p>
<p dir="ltr">'বলছি টেসলা থেকে টেলিপ্যাথিটর এ একটা সেনসেজ পাঠাল এইমাত্র।'</p>
<p dir="ltr">আবার সেই প্রাক একবিংশ যুগ এর কুমড়োর ছক্কার রেসিপি???!!! তোমার ব্রেন ম্যাপিং করে ওরা এইসবই তো পাঠাতে থাকে!!! আবার কুমড়ো আনতে য়্যামাজন ইথিওপিয়াতে অর্ডার দাও, গন্ডা গন্ডা পয়সা ভর হাইপারলুপ ডেলিভারির!</p>
<p dir="ltr">'ধেততেরি! সেসব না! ঘন্টু!'</p>
<p dir="ltr">সে ঘুমিয়েছে?</p>
<p dir="ltr">'হ্যাঁ, অনেকক্ষন, তবে ওকে নিয়েই সেনসেজ টা'</p>
<p dir="ltr">কি বলছে?</p>
<p dir="ltr">'বলছে একটা মেজর ম্যানুফ্যাকচারিং ডিফেক্ট রয়ে গেছে'</p>
<p dir="ltr">সে কি হে? টেসলার রোবোবেবি তে ডিফেক্ট? তবে যে কি সব জিরোসিগমা ফিগমা বলে বারফটটাই মারে?!!! </p>
<p dir="ltr">'শোনোই না! বলছে স্লিপ বাটন দিতেই নাকি ভুলে গেছে। খুব দুঃখপ্রকাশ করেছে আর বলেছে বদলে আনা যাবে বিনাখরচে, সাথে একটা রোবোডগি ফ্রি দেবে'</p>
<p dir="ltr">তুমি কি বল?</p>
<p dir="ltr">'অনেক ভাবলাম। কিন্তু তোমায় খুলেই বলি, এই প্রতিদিন ঘুমপাড়ানি গান গেয়ে ঘন্টুকে ঘুম পাড়াতে মন্দ লাগে না। তুমি কি বল?'</p>
<p dir="ltr">আমি? না, সে রাত্রে ঘুমোতে না চেয়ে চশমার ডাঁটি চেবালে রাগ হয় বটে, তবে পেছনে চাঁটা খেয়ে রাগ করে যখন ঠোঁট ফুলিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে তখন একঘর আদর আদর লাগে কিন্তু। ঘন্টা ওরমই থাক।</p>
<p dir="ltr">'ঠিক বলেছ, স্লিপ বাটন মাথায় থাক। বালাই ষাট আমাদের ঘন্টুর।'</p>
পলাতকhttp://www.blogger.com/profile/10815481700144344107noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-7304401938332507753.post-59924130411951147922018-06-06T11:31:00.001-07:002018-06-06T11:31:24.578-07:00মা রিপ্লাগড নিষাদ!<p dir="ltr">"দেখুন রত্নাকর বাবু, এই নারদ মিত্তির আর ব্রম্ভানন্দ বোস এর রিকভারি এজেন্সি আজ অব্দি কখনো ফেল মারেনি। ই এম আই বলুন, ঘর ওয়াপসি মেয়েছেলে বলুন, তরমুজ সুব্রত মুখুজ্জে বলুন, সব ঘরের ছেলে ফেরত এনে দিয়েছে ঘরে।</p>
<p dir="ltr">আমরা মানুষে বিশ্বাস করি। আপনার মুখ দেখেই মনে হল ভিড় বাসে কনুই মারার ন্যায্য পেট্রিয়ার্কি অব্দি কোনদিন চাখেননি আপনি। টুলো পন্ডিতের বাড়ি জন্ম নিয়ে আজানের শব্দে ঘুম ভেঙ্গেও কখনো বলেননি 'ওদের বাড় বড্ড বেড়েছে'। সেজন্যেই আপনাকে ঘরে যেতে দিলাম একা, শেষ অপশন হিসেবে। </p>
<p dir="ltr">কিছু জোগাড় হল? অন্ততঃ এমাসের হাউসিং লোন এর কিস্তিটা? আপনার মাইরি বাপ পেনশন পায়, বৌ আর ভাই চাকরি করে, ই এম আই ডিফলটার হওয়া কি আপনার মানায়?"</p>
<p dir="ltr">রত্নাকর খানিকটা ঝিমিয়ে ছিলেন তৃণমূল এর বংগবিভূষন পাওয়া বামপন্থী তাত্ত্বিক এর মতন। এইবারে ফেটে পড়লেন হতাশার রাগে।</p>
<p dir="ltr">"স্যার, ছেড়ে দিন এসব দুঃখের কথা।</p>
<p dir="ltr">ঘরে বাবাকে জিজ্ঞাসা করলাম কিছু ধারের জন্যে। মা বললে, 'আজ 10 বছর ধরে শুধু বাড়িভাড়া অথবা ই এম আই ছাড়া এক পয়সা ঠেকাও না তুমি। পেনশন বাড়ে না, না বাড়ে তোমার কন্ট্রিবিউশন, এমনকি মোদির 15 লাখও ভাতে বাড়ল না চার বছরে। তোমার পাপ আমরা নেব ক্যানে? এমনিতেও তোমার মত মেনিমুখো ব্যাটন না খেলে জ্ঞানচক্ষু খুলবে না।'?</p>
<p dir="ltr">বৌকে বললাম দুঃখের কথা। বৌ বলল, 'তুমি সারাজীবন আমায় কি দিয়েচ বলবে, যে আজ আমায় সারদা সুদীপ্তর দেবযানী ভেবে পুজোকমিটির মত চাঁদা চাইতে এসেছ? মাসের শুরুতে ঐ দয়া করে বাড়ির ই এম আই, কাজের লোকের মাইনে, ঘোঁতনের স্কুলের মাইনে, স্টেশনারি আর মুদি দোকানের পয়সা, ফোনের ডাটা, ইলেক্ট্রিসিটি বিল ভরে মাথা কিনে নিয়েছ? পনের বছর ধরে বিয়ের আংটি বদল করবার কথা বলছি, আমার বৌবাজারের অফিসের গলিতে এম সি সরকার থেকে একটা মঙ্গলসূত্র দিতে বলেছি, কোনদিন কানে নিয়েছ সে কথা? আমার বাপ মা এ কোথায় ফেলে দিল ঈশ্বর! আজ দশটা ডাক্তার প্রফেসর ধাওয়া করত বাড়ি অব্দি আমার সম্বন্ধ নিয়ে।'</p>
<p dir="ltr">ভাই বলল, 'দাদা, ডোনেশন দিয়ে ডাক্তারিতে ঢুকিয়েছিলি ঠিক আছে। সাথে রেখেছিলি ঠিক আছে। কিন্তু দু পয়সা কখনো হাতে তুলে দিয়েছিলি সিনেমা দেখবি বলে?! আজ বিনে পয়সায় ওষুধ লিখিয়ে নিতে নিতে ই এম আই চাইবি? এর থেকে সোজাসুজি বলে দে আলাদা হয়ে যাই!!!'"</p>
<p dir="ltr">গলা বুজে আসে রত্নাকর এর। তাও বলে চলেন ...</p>
<p dir="ltr">"নারদ বাবু, ছাড়ান দিন এসব, বাড়ি আপনি জবরদখল করুন, ফিরিয়ে দিন ব্যাংক কে, যা খুশি করুন।</p>
<p dir="ltr">আমি আপনার ডেরা থেকে বেরিয়ে আর বাড়ি ফিরছি না। যৌবনে রগরগে গল্প, চিটচিটে ভাবালুতা মিটমিটে প্রেম আর টসটসে ইমোশন দিয়ে বলবার অভ্যাস ছিল খুব বন্ধু বান্ধবী দের। নিজের নাম ভাঁড়িয়ে রাখব যুগের উপযোগী দো-আঁশলা কিছু, যেমন, 'অসভ্য-মিকি' বা এরকম কিছু একটা, চিৎপুরে একটা এককামরার ঝুপড়ি নেব ভাড়া, আর যাত্রার চিত্রনাট্য লিখব।</p>
<p dir="ltr">একটা সামাজিক আইডিয়া তো এক্ষুনি মাথায় খেলছে। নাম রাখা যায় 'রামের উন্নয়নের টাকায় সীতের কন্যাশ্রীর সাইকেল'। ঐ দিয়েই শুরু করি। পরে স্বচ্ছ ভারত নিয়েও কিছু একটা নামাবখন।</p>
<p dir="ltr">আপনারাও ভালো থাকুন।"</p>
<p dir="ltr">হনহন করে হাঁটা দেন রত্নাকর রায়।</p>
<p dir="ltr">হতভম্ব নারদ মিত্তির ডান কান চুলকে রত্নাকর এর ফেলে যাওয়া পথের পানে তাকিয়ে চোখ বুজে থাকা ব্রম্ভানন্দকে বলেন, "ছোকরা মহাকাব্য লিখবে একদিন, মিলিয়ে নেবেন"!!!</p>
পলাতকhttp://www.blogger.com/profile/10815481700144344107noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-7304401938332507753.post-62437260322838723032018-05-22T11:34:00.001-07:002018-05-22T11:34:09.271-07:00ঘুম ও জেসুদাস<p dir="ltr">কখনো কোন সমান্তরাল বিশ্বে, রেষারেষি আর স্বার্থপরতার ঝকমকে আলো কমে এলে পর, কিশোর রফি মান্না ইত্যাদি গুরুপুজোর ভক্তদের হইহুল্লোড় ফিকে হবার পরে, ঝড়ের পরের ঠান্ডা হাওয়ায় মাটির পিদিম জ্বালিয়ে গান গাইতে বসেন কাট্টাসেরি জোসেফ জেসুদাস। </p>
<p dir="ltr">জেসুদাস এর গান এর প্রতিবেশী বাজনা ও বাহুল্যরা মন বসাতে পারে না কাজে, কেমন যেন ঝুম মেরে ভগবানের গলা শুনতে বসে মাটির মেঝেতে থুবড়ে নিজের কাজ ভুলে, ঠান্ডা শরীরে ভাবুক স্যাক্স শোনে "য়্যায় মেরে উদাস মন, চল দোনো কহিন দূর চলে, মেরে হামদম, তেরে মঞ্জিল ইয়ে নেহি ইয়ে নেহি কোই অওর হ্যায়"। </p>
<p dir="ltr">রাত বাড়লে ফেরবার রাস্তা পেরিয়ে যাবার পথে চাঁদ আবদার ধরে "চাঁদ আকেলা জায়ে সখী রে, মন মোরা ঘাবরায়ে রে" শুনবার, সে একটু ডুবতে দেরি হোক বরং একলাইন "ও বৈরাগী, ও মনভাওন, কব আয়েগা মোরে আঙন" এর মনকেমনের টানে। </p>
<p dir="ltr">ক্যালেন্ডার এর পাতা থেকে রাধামনি নেমে আসেন "কা করু সজনী, আয়ে না বালাম" এর অপেক্ষার পুজোর দু ফোঁটা চোখের জল ফেলতে। অন্ধ কৃষ্ণপুজো তো অনেক হল, ঐ ম্যাজিক গলার "ইয়ে জগ সারা, নিদ সে হারা, মোহে নিদ না আয়ি" স্তব, সে কি কম কাছের?</p>
<p dir="ltr">সব শেষে ইনসমনিয়ায় ভোগা দেবাদিদেব মুখ ঢেকে জেসুবাবুর কুটিরের পেছনের দরজা দিয়ে আসেন একে একে বাকিরা বিদায় নিলে। জেসুবাবু মুচকি হেসে তানপুরা তুলে গলায় মোলায়েম স্বর্গমাখা সুর তুলে নেন ঘুমপাড়ানিয়া অনুরোধে ...</p>
<p dir="ltr">"কোই গাতা ম্যায় শো যাতা" শুরু হয় অদ্ভুত মায়ার হাত বুলিয়ে গলার কাছে জমে থাকা বিষের জ্বালা ভুলিয়ে, "কোই মেরা শর গোদি মে রাখ সহলাতা, ম্যায় শো যাতা"র হাতপাখার মিঠে হাওয়ায় ঘুম নেমে আসে চোখে।</p>
<p dir="ltr">জেগে থাকেন, টিমটিম করে তারাদের সাথে আলো দিতে থাকেন কাট্টাসেরি জোসেফ জেসুদাস। </p>
পলাতকhttp://www.blogger.com/profile/10815481700144344107noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-7304401938332507753.post-37594828449136258322018-05-20T10:37:00.001-07:002018-05-20T10:37:57.943-07:00বাফ ছেড়ে বোদ্ধা সাজার সহজ উপায় ১<p dir="ltr">2012 সালে সাইট এন্ড সাউন্ড পত্রিকা দুনিয়াভর এর স্বনামধন্য চিত্রপরিচালকদের নিয়ে বিশ্বের সর্বকালের সেরা চলচ্চিত্র বিষয়ে একটি সমীক্ষা করে। প্রথম স্থানে উঠে আসে একটি জাপানি সিনেমা যা প্রথম স্থানের দৌড়ে একেবারেই ছিল না। এমনকি একই সার্ভেতে ক্রিটিক্স বিভাগেও সেই একই সিনেমা, যার নাম 'টোকিও স্টোরি', তৃতীয় স্থান অধিকার করে।</p>
<p dir="ltr">ছবির সময়:1953<br>
পরিচালক: ইয়াসুজিরো ওজু</p>
<p dir="ltr">এক বৃদ্ধ দম্পতি যাঁরা তার ছোট মেয়ের সাথে মফস্বলে থাকেন, তারা দেখা করতে আসেন তার ছেলে মেয়েদের সাথে প্রথমবার যুদ্ধোত্তর ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশন এর পদধ্বনি ওয়ালা টোকিও শহরে। ছোটখাটো ডাক্তার বড় ছেলে, বিউটি পার্লার চালানো বড় মেয়ের সাথে থাকার সীমাবদ্ধতা ধরা পড়ে শিগগিরই, যদিও তাতে তাদের স্ত্রী বা স্বামীর ভূমিকা কখনোই প্রধান হয় না। মেজ ছেলের বিধবা স্ত্রী একমাত্র ভরসা হয় অচেনা শহরে। বুড়ো এক রাত্রে কিছু পুরোনো টোকিওপ্রবাসী বন্ধুদের সাথে পানভোজন এর আধিক্যে করেন আত্মসমীক্ষন ও খানিকটা সমাজ এর মূল কাঠামোর বদলের পর্যালোচনা। ফিরে আসার পথে ওসাকা তে রেলচাকুরে ছোট ছেলেও খুব একটা আশা জাগায় না। বুড়ো বুড়ি ফিরে আসেন নিজের জায়গায়। বুড়ি মারা যান। ছেলে-মেয়েরা ব্যস্ত সময় থেকে একচিলতে সময় বার করে দায়িত্ব পালন করতে আসে। ফিরেও যায়। বুড়ো আর বিধবা বৌমা, বিধবা বৌমা ও ছোট মেয়ের কিছু সংলাপে ধরা থাকে আধুনিক সভ্যতা ও পরিবারের মধ্যের টানাপোড়েন গুলো।</p>
<p dir="ltr">বিয়ে না করে সারা জীবন মায়ের সাথে কাটানো পরিচালক (সূত্র: আই এম ডি বি) তার স্বভাববসতই হেলে থাকেন পুরনো পারিবারিক মূল্যবোধের দিকে, কিন্তু কখনই তিক্ততা আনেন না, বরঞ্চ বার বার জোর দেন আত্মসমীক্ষন বা বদলের অবশ্যম্ভাবী পরিণতিতে। স্থির, মাটি থেকে তিন হাত মাত্র ওপরের ক্যামেরায় নেয়া অধিকাংশ শট ছবিকে একটা সিগনেচার স্থিরতা আর গ্রাউন্ড রিয়ালিটিসংলগ্নতা দেয়। গোটা ছবি প্রশ্ন করতে থাকে বারবার একটা ধারণাকে, 'এ চাইল্ড কান্ট সার্ভ হিজ পেরেন্টস আফটার গ্রেভ'। উত্তরও আসে, তবে তা সাদা বা কালো হয় না, ধূসর এই ছবির আত্মা। মিনিমালিস্টিক, জাপানি কালচারের মতই এ ছবির বক্তব্য।</p>
<p dir="ltr">আই এম ডি বি ট্রিভিয়া বলছে, সত্যজিৎ রায় ছবিটি দেখতে দেখতে শেষের দিকে একটু ইমোশনাল হয়ে পড়েন। কতটা ঠিক জানা নেই, কারন, সত্যজিৎ বাবু নিজে অপরাজিত করার ভাবনা শুরু করেন মা মারা যাবার পর অপুর মনের চাপা খুশির বৈপরীত্বে ইন্টারেস্টেড হয়ে ('মাই ইয়ার্স উইথ অপু')। কিন্তু মনে হল টোকিও স্টোরি ছবির আত্মা জাপানি ছবি ভক্ত পরিচালকের 'শাখা প্রশাখা'তে ফিরে এসেছে একটু হলেও।</p>
<p dir="ltr">বুড়ি টোমির সাথে ছোট নাতির ঘাসের উপর খেলা, বিধবা মেজ বৌ এর তিক্ত দাম্পত্য স্মৃতি ও নতুন দুনিয়ার হাতছানি উপেক্ষা করে অভ্যাস এর গোলামী, সমুদ্রতীরে সৈকতাবাসে বুড়ো বুড়ির আত্মসমীক্ষন, বুড়ির মৃত্যূর পর ছেলেমেয়েদের ও বাবার মুখোমুখি সংলাপ, ছবির শেষ হওয়ার পরেও সামনে ভাসতে পারে।</p>
<p dir="ltr">কখনো সময় হলে, যা এই ছবির মধ্যবয়সী পাত্রপাত্রী বা আমাদের একেবারেই হয় না ঝুটো এবং ঠুনকো প্রায়রিটির জন্য, দেখে নেয়া যেতেই পারে।</p>
পলাতকhttp://www.blogger.com/profile/10815481700144344107noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-7304401938332507753.post-62344309695468265532018-05-15T11:25:00.001-07:002018-05-15T11:25:53.660-07:00দি ইকোনমিক টাইমস (রিপ্লাগ)<p dir="ltr">দু হাজার চার এ যখন টুম্পা আমি গ্রাফাইট ইন্ডিয়া লিমিটেড এ সার্টিফাইড কয়লা কুলির চাকরি ছেড়ে এমবিএ নামক তৎকালীন আলাদিন এর আশ্চর্য প্রদীপটি হাতাবার অপচেষ্টায় কলকাতা নামক 'বিশাল' শহরে আসি যথাক্রমে মফস্বল আমার মনের শহর মেদিনীপুর ও তৎপরবর্তী আরেক মফস্বল আমার নেমেসিস শহর দুর্গাপুর ছেড়ে, আমার শুভাকাঙ্খী কলিগ কাকু, যিনি এখন একটি নামী ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর হেড অফ দ্য ডিপার্টমেন্ট, তিনি ভেঙে পড়া ভীত আমিকে পার্টিং উপদেশ ছুঁড়ে মারেন: "সার্থক, সবসময় মনে রাখবে দুনিয়াটা কিন্তু অনেক বড়", যা নিয়তির ডাকে বা কালসর্প দোষে বীভৎস রকম মনে ধরে আমার।</p>
<p dir="ltr">তৎকালীন ক্যামাক স্ট্রিট এ একটি এমবিএ এন্ট্রান্স টেস্ট কোচিং সেন্টার এ ভর্তি হই যা ছিল সম্ভবত বিদুর কাপুর নামে একজন আইআইএম য়্যালুমনির এন্ত্রেপ্রেনিউরল প্রতিষ্ঠান। এহেন হনু বিদুর বাবু, যিনি নামের মাহাত্মে প্রাচীন কালে ধৃতরাষ্ট্র থেকে সকলকেই ফ্রিতে জ্ঞান বিতরণ করে বিরক্ত ও তাড়না করে আসছেন, তার অত্যন্ত ঝকঝকে বহিরাঙ্গ এবং ততোধিক ফরফরে ইংরেজির কারণে প্ৰথম দিনই আমার মনে তুমুল তৃণমূল স্তরে মনোনয়নবিহীন প্রভাব বিস্তার করেন, যার কারণ মূলতঃ দুটি। এক, উনি আমার পূর্বোক্ত কাকুর বড় পৃথিবী দৈববানী পুনরাবৃত্তি করেন ও চাকরি ছেড়ে বাবার পয়সায় বাবুয়ানি করতে আসার পাপবোধকে বুর্জোয়া দক্ষতায় ধামাচাপা দেন। দুই, তার ইংরেজি ভাষাদক্ষতা ও বাচনশক্তি, যা বাংলামিডিয়ামাটাইটিস ও দেখমফতুইক্যাবলাকেমনাইটিস এ ভোগা রোগাভোগা আমাকে এ প্লাস গোত্রের বিজনেস স্কুলের জন্নতের দরজায় আইসিসজেহাদি টোকা মারার স্বপ্না্দ্য চুলকুনি উপহার দিতে সফল হয়।</p>
<p dir="ltr">সে যুগে চোখ বুজে আমি যেকোন লোককে ভক্তদের করা মুদিবাবুকে বিশ্বাস এর মত লালায়িত বিশ্বাস করতাম, যদি তিনি একটু চকচকে দেখতে ও ভাল ইংরেজি বলতে পারতেন।</p>
<p dir="ltr">তো এই বিদুরবাবুর চাকচিক্যের প্রভাবে আমি একটি যৌবনের কুঅভ্যাসে পড়ি প্রথমবার। দি ইকোনমিক টাইমস নামক পত্রিকার গ্রাহক হয়ে পড়ি। বিদুরবাবুর বাতবাজি আমায় কনভিন্স করে, যতদিন না কেউ এই মহান চোরদুনিয়ার মুখপত্র লিটিল ম্যাগাজিনটির পাতা না উল্টোবে, ব্যবসায়িক দুনিয়ার আঁতেলরা ততদিন তোমাকে সাপ্তাহিক বর্তমান এর মতই অচ্ছুৎ করে রাখবে।</p>
<p dir="ltr">আমি প্রথম দিন এই পত্রিকাটির চারপাতা পড়ি, দ্বিতীয়দিন দুপাতা, তৃতীয়দিন একপাতা, চতুর্থদিন এক কলম, পঞ্চমদিন একটি খবর, ষষ্ঠদিন থেকে দিলীপবাবুর মার্কশিট পাওয়ার মতন পড়া অর্থাৎ পড়া বন্ধ হয়। কিন্তু এই নিষিদ্ধ বস্তুটির লাল মার্কসীয় রঙ, বেচবার পরে মোটা দাম (সম্ভবত একটাকা প্রতি কেজি বেশি), আরো না জানি কি, এতটাই প্রভাব বিস্তার করে, নেশার ঘোরে আমি প্রতি মাসে ঐ নিষিদ্ধ জিনিস নিতে, জমা করতে ও বেচতে থাকি। সব খারাপেরই শেষ থাকে, একদিন এন্ট্রান্স এগজাম এর রেজাল্ট বেরোতে আমার মসজিদদৌড় বন্ধ হয় এবং আশার য়্যালকোহলসমাধি ঘটে। ধাক্কা পেয়ে প্রথম কাজ হিসেবে আমি এই সাবস্ক্রিপশন বন্ধ করি এবং আশ্চর্য্যজনক ভাবে একমাসের মধ্যে একটি নবরত্ন কোম্পানিতে ঠিকঠাক একটি চাকরি জোগাতে সক্ষম হই।</p>
<p dir="ltr">ঠিক এর চার বছর পরে, সেই পূর্বোক্ত কাকুর অমোঘ দার্শনিক বড় দুনিয়ার লাইন আমার বেওকুফ বোহেমিয়ানাকে আবার কামড়ে দেয়, এবং এমবিএ হওয়ার কামজ্বর এ পুনরাক্রান্ত হয়ে আমি চাকরি লাথি মেরে কোনমতে গড়ের মাঠের শহরের বুকে একটি ইন্ডাস্ট্রি স্ট্যান্ডার্ড এ গড়পড়তা কিন্তু আমার ব্যক্তিগত যোগ্যতার গড়ের উপরের বিগ্রেড বি স্কুলে ভর্তি হই।</p>
<p dir="ltr">ফ্যাকাল্টি হিসেবে এক ভদ্রলোককে পাই যিনি প্রচন্ড দুর্মুখ এবং সকলকে অপমান করা সদর্পে জীবনের ব্রত হিসেবে বেছে নিয়েছেন। আমার কর্পোরেট জগতের অভিজ্ঞতায় তখন আমি সেই লোকদেরই বিশ্বাস করতে শুরু করেছি যারা প্রচন্ড অপমান করেন ও অপমানটাকে শিল্পের (চপ নয়) পর্যায়ে নিয়ে যান। সম্ভবত তারাপদবাবুর রচনায় পড়েছিলাম যে ডাক্তারবাবু যত দুর্মুখ তত বেশি তার পসার, এরকম এক পাগলের ডাক্তারবাবু তার রোগীদের প্রচন্ড অপমান করতেন ও প্রায় সুস্থ করে আনতেন ও শেষে একদিন অপমান করতে করতে কামড়ে দিতেন এবং রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে বাড়ি যেত। সেই 'তারা'বাজি থাক এখন। মোটের ওপর এই ভদ্রলোকের অপমানে মেসমারাইজড হয়ে ওর উপদেশানুসারে আমি আবার ইকোনমিক টাইমস নিতে এবং আবার না পড়তে শুরু করি। </p>
<p dir="ltr">দেড় বছর পরে, দু হাজার দশ নাগাদ, আমি হঠাৎ করে আবিষ্কার করি ইকোনমিক টাইমস এর নিষ্কলঙ্ক পাতার মতই যেকোন কারনে আমার চাকরির ভাঁড়ার শূন্য যেখানে প্রায় আধা ডিপার্টমেন্ট মোটের ওপর একটা করে চাকরি হাতের মুঠোয় নিয়েছে।</p>
<p dir="ltr">শোকাহত হয়ে, মাঝরাত্তিরে, একান্তে, তুমুল চানাচুরসহ জলপথে গভীর ইন্ট্রোস্পেকশনে বসে যখন আমি আমার এই চরম গঙ্গাপ্রাপ্তির পরিণতির গোমুখসন্ধানে ব্যস্ত, তখন চোখে পড়ে ঘরের কোনের ইকোনমিক টাইমস এর বোঝার দিকে। বিশ্বাস করবেন না, ঝপ করে মাথাটা কেমন যেন পরিষ্কার হয়ে যায়। সারারাত না ঘুমিয়ে ভোর পেরনোর পরে প্রথমে কাগজদাদার হাত থেকে আনন্দবাজারটা নিয়ে ইকোনমিক টাইমস টা নিতে বিপ্লবী অস্বীকার করি ও প্রথম যে বেসুরেলা কাগজওয়ালা পাই, তাকে ধরে এনে পুরনো সতীসাধ্বী কাগজগুলোকে বিদায় করি। সেই দেবদূত কাগজওয়ালা আমায় জীবনে প্রথম ও শেষ ব্যক্তি হিসেবে আমাকে জানায় যে আমার খুব যত্ন, ভাঁজ না খোলা ইকোনমিক টাইমস এর প্রভাব ও দিব্যি!</p>
<p dir="ltr">ভগবানের বা কার্ল মার্ক্স এর অশেষ দয়ায় এর এক-দু সপ্তাহের মধ্যেই কি ভাবে যেন একটি কাজ চালানো চাকরির জোগাড় হয়।</p>
<p dir="ltr">এই অকিঞ্চিতকর লেখার একটাই উদ্দেশ্য। কোন ছোট ভাইবোন যদি তাদের বেসিক নেসিসিটি গুলো ছুঁতে পাচ্ছে না শত চেষ্টা করেও, অথচ গ্রহের ফেরে পড়ে ফেলেছে এই প্রলাপরচনা, দেখুন না চোখ বুলিয়ে, ঘরের বা মনের এক কোনে কোন ইকোনমিক টাইমস এর জঞ্জাল জমিয়ে রাখেন নি তো?</p>
<p dir="ltr">বিদায় করুন।</p>
<p dir="ltr">ভালো থাকুন!</p>
পলাতকhttp://www.blogger.com/profile/10815481700144344107noreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-7304401938332507753.post-39345122392295968942018-04-24T11:13:00.001-07:002018-05-14T18:30:28.933-07:00যক্ষ ও পুনর্জন্ম!<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">
<div dir="ltr">
যুধিষ্ঠির: বলছি যক্ষ স্যার, ভাইগুলো সব কেতরে পড়ে আছে, দেখতে একদম ভাল লাগছে না মাইরি। ঐ ভীম সাতঘটি মাধ্বীক এও হালকা টসকায় না, সেও কেমন চোখ উল্টে কেষ্ট।</div>
<div dir="ltr">
যক্ষ: দ্বারকার লুজকুমার মালটা?</div>
<div dir="ltr">
যুধিষ্ঠির: না, মুখার্জি। একটু ভাষাটা সংযত করলে হত না স্যার?</div>
<div dir="ltr">
যক্ষ: ও কলির অভিনেতা! তাও ভাল মাথায় অক্সিজেন কম মনোনয়ন খেকো কেষ্ট বলনি।<br />
যাই হোক, শোন, তুমি নিজে রাজশেখর ঝেড়ে সংলাপ বলছ, আমায় চুলকিও না।</div>
<div dir="ltr">
যুধিষ্ঠির: স্যার একটু জল আপনার কলসি থেকে, যদি, চোদ্দ ক্রোশ এর মধ্যে কোত্থাও ....</div>
<div dir="ltr">
যক্ষ: আরে খেলে যা! শোন রে ধর্মচো*, বুড়ো বয়সে কেউ পাত্তা দেয় না, মেনকা আমার আশ্রম এর পেছনে ইন্দ্রকে নিয়ে বেলেল্লাপনা করে, আমি দুটো কথা বলতে গেলে আমায় সুড্ডা বলে খিস্তি করে, এই যে আমিই কেবল জানি এখানে জল কোথায়, তার সুযোগ আমি ওঠাব। তোর বর্বর ভাইগুলো আমার প্রশ্নের জবাব না দিয়ে কেড়ে জল খেতে গেছিল, ওতে দু ফোঁটা বিচিত্রবল্লরির (বিছুটিপাতা) রস মিশিয়ে ঘায়েল করেছি, প্রতিষেধক কেবল আমার জানা। এবারে বল আমার প্রশ্নের উত্তর দিবি কি না?!</div>
<div dir="ltr">
যুধিষ্ঠির: আপনি শুরু করুন স্যার। তবে দেখবেন, একটু সোজা দেখে করবেন, ক্যালকাটা ইউনিভার্সিটি আর ইস্ট জর্জিয়ার ডিলিট তো, বিদ্যা ব্যাপারটা বালন পর্যন্ত ....</div>
<div dir="ltr">
যক্ষ: থাম। বাঙালি হয়ে প্রশ্নের উত্তর দিতে জ্ঞান লাগে নাকি?</div>
<div dir="ltr">
যুধিষ্ঠির: বাঙালি কি স্যার? ইন্দ্রপ্রস্থ তো সেই নর্থ ইন্ডিয়া ....</div>
<div dir="ltr">
যক্ষ: থাম শালা! কাশিদাসীর জ্ঞান নিয়ে ব্যাসবুড়োর সমসসসসকৃত চো** না!</div>
<div dir="ltr">
যুধিষ্ঠির: কর্নকুহর প্রজ্জ্বলিত করে দিলেন স্যার, আপনি zeeগান বরং।</div>
<div dir="ltr">
যক্ষ: হ্যাঁ, ওপারের মাল, বলে কিনা ইন্দ্রপ্রস্থ! অমন অনেক দেখেছি! সিএফেল জিতলে পটকা ফাটায়!<br />
আচ্চা বল, তিনটে প্রশ্ন করব মাত্র।<br />
বলতো, আলস্য কি?</div>
<div dir="ltr">
যুধিষ্ঠির: আজ্ঞে, ধর্মের পালন না করা।</div>
<div dir="ltr">
যক্ষ: এহ্হ্হঃ। শালা ছাত্রবন্ধুর মাল। আগেই বুঝেছি। </div>
<div dir="ltr">
শুনুন, আপনি কিছুই জানেন না। আমি বলছি জেনে রাখুন। </div>
<div dir="ltr">
আলস্য হল রোববার দুপুরে পাঁঠার মাংস দিয়ে ভাত খেয়ে যা বাঙালির জীবনে নেমে আসে। তার সাথে কোথায় লাগে জাকির নায়েক আর প্রবীন তোগাড়িয়ার ধর্ম।</div>
<div dir="ltr">
যুধিষ্ঠির: আজ্ঞে, ভুল হয়ে গেছে।</div>
<div dir="ltr">
যক্ষ: হ্যাঁ, তোর ভুলস্বীকার এর বহর দেখে মনে হয় তোর বংশেই বুদ্ধ জন্ম নেবে।</div>
<div dir="ltr">
যুধিষ্ঠির: কে স্যার? গৌতম?</div>
<div dir="ltr">
যক্ষ: না! ভটচাজ! ছাড় এসব। বলতো, সুখী কে?</div>
<div dir="ltr">
যুধিষ্ঠির: আজ্ঞে যার ঋণ নেই।</div>
<div dir="ltr">
যক্ষ: এহ্হ্হঃ। ছায়া প্রকাশনীর মাল। আমি আগেই জানি। </div>
<div dir="ltr">
শুনুন আপনি কিছুই জানেন না। আমি বলছি, জেনে রাখুন। </div>
<div dir="ltr">
যে বাঙালির সকালে ঘুম থেকে উঠে চা বিড়ি না খেয়ে একঝুড়ি নিয়মিত পায়খানা হয়। যে বাঙালির বিরিয়ানি আর চাপ খেয়ে জেলুসিল খেতে হয় না। তারাই প্রকৃত সুখী।</div>
<div dir="ltr">
যুধিষ্ঠির: স্যার, একটু গা জোয়ারী হচ্চে না?</div>
<div dir="ltr">
যক্ষ: থাম। তোকে বিজেপির যুবমোর্চা নেতা সিবিএসির প্রশ্ন বলে দিয়েছে? আচ্চা, ফাইনাল বল, তোর কোন একটা অপগন্ড ভাই এর জান ফেরত চাইতে হলে কারটা চাইবি?</div>
<div dir="ltr">
যুধিষ্ঠির: আজ্ঞে নকুল বা সহদেব। তাহলে মাদ্রি মায়ের এক সন্তান ....</div>
<div dir="ltr">
যক্ষ: আরে খেলে যা!! আমায় ভক্ত পেয়েছ? তুমি দামোদরদাস এর ছেলে? যা বোঝাবে তাই বুঝব? </div>
<div dir="ltr">
শুনুন আপনি কিছুই জানেন না। আমি বলছি, জেনে রাখুন। </div>
<div dir="ltr">
হ্যান্ডু অর্জুনকে দ্রৌপদী চোখে হারায়, ভীম এর রতি জাগলে তোমার ভীমরতি দেখিয়ে দেবে, তাই ওদের বাদ দিয়ে ধাতুদৌর্বলী জোড়া অশ্বিনীর ব্যাটাকে ফেরাতে চাইছ? পথের কাঁটা দূর করবে? ব্যোমকেশ পড়ছ খুব আজকাল?</div>
<div dir="ltr">
যুধিষ্ঠির: আজ্ঞে স্যার, আর লজ্জা দেবেন না। আপনি অন্তর্যামী।</div>
<div dir="ltr">
যক্ষ: হ্যাঁ, এমনিতেই আমার সময় শেষ। কোলেস্টরল টা বড্ড ভোগাচ্ছে। ঐ রইল ভালো জল। খেয়ে নে। আর এই রইল গোরচনী সিরাপ। দুচিপি খাইয়ে দে। এর অনেক গুন। কলিকালে এই নিয়ে লোকে পিএচডির থিসিস করবে। তোর অকালকুষ্মান্ড ভাইগুলো জেগে উঠবে। আমার দেহত্যাগ এর সময় হল।</div>
<div dir="ltr">
যুধিষ্ঠির: আপনার দেখা আর পাব না স্যার?</div>
<div dir="ltr">
যক্ষ: পাবি। কলিকালে সিটিভিএন চ্যানেল এ রাত্রে খবর পড়ব। তখন ফোন করিস। তখন চিনতে পারবি তো? </div>
<div dir="ltr">
যুধিষ্ঠির: হ্যাঁ স্যার। না পারলে আপনার সেই অমোঘ লাইন তো আছেই।</div>
<div dir="ltr">
"শুনুন, আপনি কিছুই জানেন না, আমি বলছি, জেনে রাখুন"</div>
<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;">
<a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhIgsgZ25rF6iT5FXqhg4DOlOmA_nUL1qO4905GgEPxsFeILCBrg9uCE3TRYW0Tw30atqELUbrzSj9PSNi6V0HhRKn8PhuYren2rZoGO2-pnn-fm5jS2Vcdb9mPf5vXZxwqtyC5VMGo2qY/s1600/31206644_10214796801649531_6358287842904375296_o.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="1018" data-original-width="1321" height="246" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhIgsgZ25rF6iT5FXqhg4DOlOmA_nUL1qO4905GgEPxsFeILCBrg9uCE3TRYW0Tw30atqELUbrzSj9PSNi6V0HhRKn8PhuYren2rZoGO2-pnn-fm5jS2Vcdb9mPf5vXZxwqtyC5VMGo2qY/s320/31206644_10214796801649531_6358287842904375296_o.jpg" width="320" /></a></div>
</div>
পলাতকhttp://www.blogger.com/profile/10815481700144344107noreply@blogger.com0