কখনো কোন সমান্তরাল বিশ্বে, রেষারেষি আর স্বার্থপরতার ঝকমকে আলো কমে এলে পর, কিশোর রফি মান্না ইত্যাদি গুরুপুজোর ভক্তদের হইহুল্লোড় ফিকে হবার পরে, ঝড়ের পরের ঠান্ডা হাওয়ায় মাটির পিদিম জ্বালিয়ে গান গাইতে বসেন কাট্টাসেরি জোসেফ জেসুদাস।
জেসুদাস এর গান এর প্রতিবেশী বাজনা ও বাহুল্যরা মন বসাতে পারে না কাজে, কেমন যেন ঝুম মেরে ভগবানের গলা শুনতে বসে মাটির মেঝেতে থুবড়ে নিজের কাজ ভুলে, ঠান্ডা শরীরে ভাবুক স্যাক্স শোনে "য়্যায় মেরে উদাস মন, চল দোনো কহিন দূর চলে, মেরে হামদম, তেরে মঞ্জিল ইয়ে নেহি ইয়ে নেহি কোই অওর হ্যায়"।
রাত বাড়লে ফেরবার রাস্তা পেরিয়ে যাবার পথে চাঁদ আবদার ধরে "চাঁদ আকেলা জায়ে সখী রে, মন মোরা ঘাবরায়ে রে" শুনবার, সে একটু ডুবতে দেরি হোক বরং একলাইন "ও বৈরাগী, ও মনভাওন, কব আয়েগা মোরে আঙন" এর মনকেমনের টানে।
ক্যালেন্ডার এর পাতা থেকে রাধামনি নেমে আসেন "কা করু সজনী, আয়ে না বালাম" এর অপেক্ষার পুজোর দু ফোঁটা চোখের জল ফেলতে। অন্ধ কৃষ্ণপুজো তো অনেক হল, ঐ ম্যাজিক গলার "ইয়ে জগ সারা, নিদ সে হারা, মোহে নিদ না আয়ি" স্তব, সে কি কম কাছের?
সব শেষে ইনসমনিয়ায় ভোগা দেবাদিদেব মুখ ঢেকে জেসুবাবুর কুটিরের পেছনের দরজা দিয়ে আসেন একে একে বাকিরা বিদায় নিলে। জেসুবাবু মুচকি হেসে তানপুরা তুলে গলায় মোলায়েম স্বর্গমাখা সুর তুলে নেন ঘুমপাড়ানিয়া অনুরোধে ...
"কোই গাতা ম্যায় শো যাতা" শুরু হয় অদ্ভুত মায়ার হাত বুলিয়ে গলার কাছে জমে থাকা বিষের জ্বালা ভুলিয়ে, "কোই মেরা শর গোদি মে রাখ সহলাতা, ম্যায় শো যাতা"র হাতপাখার মিঠে হাওয়ায় ঘুম নেমে আসে চোখে।
জেগে থাকেন, টিমটিম করে তারাদের সাথে আলো দিতে থাকেন কাট্টাসেরি জোসেফ জেসুদাস।
No comments:
Post a Comment