স্ত্রী: আবার তুমি গরমের দুপুরে ওখানে? ডঃ আচার্য বারণ করেছেন না? এমনিতেই তো মাথা ..... আবার এই গরমে একটা বিপদ হয়ে না যায়!!!
কর্তা: গিন্নি, শেঠেদের এই আমবাগানে এককালে দশ গাঁয়ের বিচার বসতো, জমিদার দর্পনারায়ন এর ডাকে উড্রো সাহেব অব্দি কাছারি থেকে এসে এই আমবাগানে এসে সেবা নিতেন, আবার তারিনী যখন ম্যাজিস্ট্রেট উইলসনকে গুলি করে পালিয়ে বেড়াচ্ছে তখন বাবা ওকে এই আমবাগানে লুকিয়ে রেখেছিলেন, ইংরেজদের পোষা পুলিশের সাহস হয়নি ....
স্ত্রী: বাবা মনে? তুমি তো তোমার ঠাকুর্দার বাবার গল্প করছ, তুমি না!!! সকালের ওষুধটা...?
কর্তা: আরে রাখ ওষুধ, ঐ ব্রজর ছেলের কবরেজিতে আমি ইয়ে করি, আমাদের জমিদারির ফ্যামিলি ফিজিসিয়ান কে ছিলেন জান? ক্যালকাটা মেডিকেলের পেনেলবেরি সাহেব!!!
স্ত্রী: আরে ব্রজ আবার কে? ডাক্তারবাবুর বাবা তো বিজয়বাবু, তুমি আবার বিজয়বাবুর দাদুর কথা বলছ না তো? আর শোন, জমিদারি আর নেই, ইন্দিরা গান্ধী আজ থেকে 50 বছর আগে জমিদারি তুলে দিয়েছে, কবার বলব তোমায়?
কর্তা: ইন্দিরাআআ!!! হুহ!!! তবে যাই বল গিন্নি, জহরের মেয়ে দেখতে কিন্তু হয়েছে একঘর!!! একবার শান্তিনিকেতনে ... থাক সেকথা!!!
স্ত্রী: তুমি তাকে নিয়েই থাকো তাহলে। দাদু দিদিমার কাছে মানুষ বলে এই মানুষের হাতে পড়তে হল আমায়। কতবার বলি চল কলকাতায় গিয়ে বাবা আর ঠাকুরপোদের বালিগঞ্জের বাড়িতে গিয়ে থাকি। তা নয়, এই ধ্যদ্ধেড়ে মালদা আর আমবাগান। আর শোন, খবদ্দার আমায় গিন্নী বলবে না, এটা কোন যুগ? আর প্লিজ, আমবাগানে বসে থাকা বন্ধ কর।
কর্তা: আরে আমবাগানে বসে থাকা এত ফেলনা নয় গিন্নি। এই তো সেদিন বুড়োবয়সে বৌমার চাপে সন্ন্যাসী রাজা না কি যেন একটা বায়োস্কোপ দেখতে গেছিলাম। তা দেখলাম বৌমাদের চোখের মণি ঐ উত্তমকুমার না অধমকুমার, সে আমবাগানেই লেঠেলদের প্যাঁচ শেখাচ্ছে, আর তুমি।
স্ত্রী: সিনেমা দেখতে গেছিলেন তোমার দাদু, আমার শ্বাশুড়ির চাপে পড়ে। তোমার এই টাইম ট্রাভেল, উঃ। তোমাকে বোঝান আমার অসাধ্য। যাই বরং ইসটিকুটুম দেখি গিয়ে। হ্যাঁগো, বিক্রম কে জেলে দেবে না তো?
কর্তা: ফুঁহ!!! বেধবা মেয়েছেলেকে ফুসলিয়ে নিয়ে কলকাতায় পালালে আজকাল আবার জেল হয় না কি? কোন যুগে যে আছ!!! তার থেকে রামতারনকে বল তামাকটা পাঠাতে।
(স্ত্রী এর হাল ছাড়ন ও রাগত বিদায়)
No comments:
Post a Comment