(সকালবেলায় প্রিয় চিত্রপরিচালক অতনু ঘোষ এর ফেসবুক দেওয়ালে মারিও দি আন্দ্রেদ নামে এক ব্রাজিলিয়ান কবি'র লেখা এই কবিতাটা দেখেছিলাম। এটা তার অক্ষম গদ্য ভাবানুবাদ)
~
বছর ঘুরতে ঘুরতে যখন হিসেব কষতে বসলাম
আর দেখলাম বেঁচে থাকার জন্য সামান্য কিছু সময়ই হাতে আছে
অন্ততঃ যে সময় পেছনে পেছনে ফেলে এসেছি তার সাথে তুলনা করলে।
নিজেকে সেই ছেলেটার মত লাগলো যে একটা চকলেটের বাক্স হাতে পেয়েছিলো
শুরুতে সে সেগুলো একটার পর একটা মুখে ভরছিলো খুশিতে
তারপর যখন তার খেয়াল গেলো শেষ হয়ে আসা বাক্সটার দিকে
তখন সে তাড়াহুড়ো ভুলে একটা একটা'র স্বাদ তারিয়ে তারিয়ে নিতে শুরু করল।
এই মুহূর্তে অনিচ্ছায় সময় দিতে হচ্ছে অগণিত মেলামেশাকে,
যেখানে কেবল নিয়ম, পদ্ধতি, আইন-ই আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠে
কোনো কিছুই বাস্তবে পাওয়া যাবে না তা জেনেও।
ধৈর্য্য হারিয়ে ফেলেছি সেই মানুষগুলোর জন্য
যারা তাদের বয়সের সাথে সমানুপাতে বেড়ে ওঠে নি।
আমার সময় খুবই অল্প
তাই খুব কম সময়ে পেতে চাইছি জীবনের সারবস্তুগুলোকে
আমার বাক্সে আর সামান্য কটা চকলেট পড়ে আছে।
এইসময় সেই লোকগুলোকেই পাশে পেতে ইচ্ছা করে
যারা তাদের ভুলগুলোকে অট্টহাস্যে জোর গলায় স্বীকার করে নিতে পারে
যারা তাদের কৃতিত্বের হাওয়ায় ফুলে ফেঁপে ওঠে না
যারা তাদের প্রত্যেকটা কাজের সম্পূর্ণ দায়িত্ব নেয়
অর্থাৎ যে সমস্ত লোকেরা সভ্যসমাজ এবং তার অস্তিত্ব সত্য ও সততার সাথে আজও বজায় রেখেছে।
কেবলমাত্র অত্যাবশ্যক জিনিসই জীবনকে সমৃদ্ধ করতে পারে
কাজেই আমি শুধুমাত্র তাদের সাথেই বাকি সময়টা কাটাতে চাই
যারা তাদের সুন্দর হৃদয় দিয়ে তাদের হৃদয় স্পর্শ করতে পারবে যারা অপেক্ষাকৃত কঠোর জীবনপর্বে বেড়ে উঠেছে।
হ্যাঁ, আমি খুব তাড়াহুড়োয় আছি
আমি তাড়াহুড়োয় আছি জীবনকে সেই গভীরতায় বাঁচবার জন্য যা কেবলমাত্র এই অভিজ্ঞ বয়স আমাকে দিতে পারে
আমার চকলেটের বাক্সের শেষ কয়েকটা চকলেটকে আমি হেলাফেলায় শেষ করতে চাই না।
এই শেষ চকলেটগুলোর স্বাদ হবে অবর্ণনীয়
যেগুলো শেষ করে ফেলেছি তার থেকে অনেক বেশি আকর্ষণীয়
আমি আমার শেষের সময়ে একটা পরিষ্কার বিবেকের সাথে শান্তি আর পরিতুষ্টি নিয়ে পৌঁছাতে চাই।
আমাদের দুটো জীবন
আর দ্বিতীয়টা ঠিক তখন শুরু হয় যেদিন আমরা জানতে পারি আসলে জীবন একটাই।