যুধিষ্ঠির: বলছি যক্ষ স্যার, ভাইগুলো সব কেতরে পড়ে আছে, দেখতে একদম ভাল লাগছে না মাইরি। ঐ ভীম সাতঘটি মাধ্বীক এও হালকা টসকায় না, সেও কেমন চোখ উল্টে কেষ্ট।
যক্ষ: দ্বারকার লুজকুমার মালটা?
যুধিষ্ঠির: না, মুখার্জি। একটু ভাষাটা সংযত করলে হত না স্যার?
যক্ষ: ও কলির অভিনেতা! তাও ভাল মাথায় অক্সিজেন কম মনোনয়ন খেকো কেষ্ট বলনি।
যাই হোক, শোন, তুমি নিজে রাজশেখর ঝেড়ে সংলাপ বলছ, আমায় চুলকিও না।
যাই হোক, শোন, তুমি নিজে রাজশেখর ঝেড়ে সংলাপ বলছ, আমায় চুলকিও না।
যুধিষ্ঠির: স্যার একটু জল আপনার কলসি থেকে, যদি, চোদ্দ ক্রোশ এর মধ্যে কোত্থাও ....
যক্ষ: আরে খেলে যা! শোন রে ধর্মচো*, বুড়ো বয়সে কেউ পাত্তা দেয় না, মেনকা আমার আশ্রম এর পেছনে ইন্দ্রকে নিয়ে বেলেল্লাপনা করে, আমি দুটো কথা বলতে গেলে আমায় সুড্ডা বলে খিস্তি করে, এই যে আমিই কেবল জানি এখানে জল কোথায়, তার সুযোগ আমি ওঠাব। তোর বর্বর ভাইগুলো আমার প্রশ্নের জবাব না দিয়ে কেড়ে জল খেতে গেছিল, ওতে দু ফোঁটা বিচিত্রবল্লরির (বিছুটিপাতা) রস মিশিয়ে ঘায়েল করেছি, প্রতিষেধক কেবল আমার জানা। এবারে বল আমার প্রশ্নের উত্তর দিবি কি না?!
যুধিষ্ঠির: আপনি শুরু করুন স্যার। তবে দেখবেন, একটু সোজা দেখে করবেন, ক্যালকাটা ইউনিভার্সিটি আর ইস্ট জর্জিয়ার ডিলিট তো, বিদ্যা ব্যাপারটা বালন পর্যন্ত ....
যক্ষ: থাম। বাঙালি হয়ে প্রশ্নের উত্তর দিতে জ্ঞান লাগে নাকি?
যুধিষ্ঠির: বাঙালি কি স্যার? ইন্দ্রপ্রস্থ তো সেই নর্থ ইন্ডিয়া ....
যক্ষ: থাম শালা! কাশিদাসীর জ্ঞান নিয়ে ব্যাসবুড়োর সমসসসসকৃত চো** না!
যুধিষ্ঠির: কর্নকুহর প্রজ্জ্বলিত করে দিলেন স্যার, আপনি zeeগান বরং।
যক্ষ: হ্যাঁ, ওপারের মাল, বলে কিনা ইন্দ্রপ্রস্থ! অমন অনেক দেখেছি! সিএফেল জিতলে পটকা ফাটায়!
আচ্চা বল, তিনটে প্রশ্ন করব মাত্র।
বলতো, আলস্য কি?
আচ্চা বল, তিনটে প্রশ্ন করব মাত্র।
বলতো, আলস্য কি?
যুধিষ্ঠির: আজ্ঞে, ধর্মের পালন না করা।
যক্ষ: এহ্হ্হঃ। শালা ছাত্রবন্ধুর মাল। আগেই বুঝেছি।
শুনুন, আপনি কিছুই জানেন না। আমি বলছি জেনে রাখুন।
আলস্য হল রোববার দুপুরে পাঁঠার মাংস দিয়ে ভাত খেয়ে যা বাঙালির জীবনে নেমে আসে। তার সাথে কোথায় লাগে জাকির নায়েক আর প্রবীন তোগাড়িয়ার ধর্ম।
যুধিষ্ঠির: আজ্ঞে, ভুল হয়ে গেছে।
যক্ষ: হ্যাঁ, তোর ভুলস্বীকার এর বহর দেখে মনে হয় তোর বংশেই বুদ্ধ জন্ম নেবে।
যুধিষ্ঠির: কে স্যার? গৌতম?
যক্ষ: না! ভটচাজ! ছাড় এসব। বলতো, সুখী কে?
যুধিষ্ঠির: আজ্ঞে যার ঋণ নেই।
যক্ষ: এহ্হ্হঃ। ছায়া প্রকাশনীর মাল। আমি আগেই জানি।
শুনুন আপনি কিছুই জানেন না। আমি বলছি, জেনে রাখুন।
যে বাঙালির সকালে ঘুম থেকে উঠে চা বিড়ি না খেয়ে একঝুড়ি নিয়মিত পায়খানা হয়। যে বাঙালির বিরিয়ানি আর চাপ খেয়ে জেলুসিল খেতে হয় না। তারাই প্রকৃত সুখী।
যুধিষ্ঠির: স্যার, একটু গা জোয়ারী হচ্চে না?
যক্ষ: থাম। তোকে বিজেপির যুবমোর্চা নেতা সিবিএসির প্রশ্ন বলে দিয়েছে? আচ্চা, ফাইনাল বল, তোর কোন একটা অপগন্ড ভাই এর জান ফেরত চাইতে হলে কারটা চাইবি?
যুধিষ্ঠির: আজ্ঞে নকুল বা সহদেব। তাহলে মাদ্রি মায়ের এক সন্তান ....
যক্ষ: আরে খেলে যা!! আমায় ভক্ত পেয়েছ? তুমি দামোদরদাস এর ছেলে? যা বোঝাবে তাই বুঝব?
শুনুন আপনি কিছুই জানেন না। আমি বলছি, জেনে রাখুন।
হ্যান্ডু অর্জুনকে দ্রৌপদী চোখে হারায়, ভীম এর রতি জাগলে তোমার ভীমরতি দেখিয়ে দেবে, তাই ওদের বাদ দিয়ে ধাতুদৌর্বলী জোড়া অশ্বিনীর ব্যাটাকে ফেরাতে চাইছ? পথের কাঁটা দূর করবে? ব্যোমকেশ পড়ছ খুব আজকাল?
যুধিষ্ঠির: আজ্ঞে স্যার, আর লজ্জা দেবেন না। আপনি অন্তর্যামী।
যক্ষ: হ্যাঁ, এমনিতেই আমার সময় শেষ। কোলেস্টরল টা বড্ড ভোগাচ্ছে। ঐ রইল ভালো জল। খেয়ে নে। আর এই রইল গোরচনী সিরাপ। দুচিপি খাইয়ে দে। এর অনেক গুন। কলিকালে এই নিয়ে লোকে পিএচডির থিসিস করবে। তোর অকালকুষ্মান্ড ভাইগুলো জেগে উঠবে। আমার দেহত্যাগ এর সময় হল।
যুধিষ্ঠির: আপনার দেখা আর পাব না স্যার?
যক্ষ: পাবি। কলিকালে সিটিভিএন চ্যানেল এ রাত্রে খবর পড়ব। তখন ফোন করিস। তখন চিনতে পারবি তো?
যুধিষ্ঠির: হ্যাঁ স্যার। না পারলে আপনার সেই অমোঘ লাইন তো আছেই।
"শুনুন, আপনি কিছুই জানেন না, আমি বলছি, জেনে রাখুন"